মোহসিন উল হাকিম
রামু-উখিয়া ট্রাজেডি ৯ বছর হয়ে গেলো! বিচার চলছে এখনও!
রামু-উখিয়ার বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার কথা মনে আছে? আট বছর আগের এই রাতে বিষাক্ত আগুন জ্বলেছিলো কক্সবাজারের রামুর বেশ কয়েকটি বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা হলো, আগুনে পুড়লো মারবতা।
সারা রাত ছটফট করলাম। সকাল নয়টার মধ্যে অফিস। তারপর আকাশ পথে কক্সবাজার। দুপুরের মধ্যে রামু। তখনও জ্বলছে আগুন। ভয়ঙ্কর ঘটনা। কিন্তু এখানেই শেষ নয়।
বিকেল হতেই খবর আসতে থাকলো, উখিয়া-টেকনাফের বৌদ্ধমন্দিরগুলোতেও হামলা হচ্ছে। রামুর নিউজ পাঠাতে পাঠাতে রওনা দিলাম উখিয়ার দিকে।
কক্সবাজারের তরুণ সাংবাদিক ছোট ভাই ইমরুল কায়েস সঙ্গে। তার কাছেই প্রথম খবর পেলাম, উখিয়ায় তাদের গ্রামের বাড়ী কোটবাজারের বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা হয়েছে। তার বাবা মাহমুদুল হক চৌধুরী মেই হামলা ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। সময় গড়িয়ে সন্ধ্যা। আমরা পৌঁছে যাই সেখানে।
আক্রমণ ঠেকাতে নিজের লাইসেন্স করা বন্দুক দিয়ে বেশ কয়েকটি গুলিও করেছিলেন উখিয়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরী। বৌদ্ধ মন্দিরে হামলাকারীদের ছোঁড়া ইট-পাথরের আঘাতে আহতও হন।
এদিকে সন্ধ্যার পর পরই আসেন কক্সবাজারের সে সময়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। কোটবাজারের পেট্রোল পাম্পে দাঁড়িয়ে অভিযান পরিকল্পনা করছিলেন। তার কিছুক্ষণের মধ্যে আসেন সে সময়ের বিজিবি ১৭ এর অধিনায়ক লে কর্নেল খালেকুজ্জামান।
হাতে সময় নাই। দিনের ধাক্বা সামলানো গেলেও রাতের হামলা ঠেকানো যাবে না। ওদিকে বিভ্রান্ত হাজারো মানুষের ভীড় এগিয়ে আসছে। অন্ধকারে ঘটতে পারে যেকোনো অঘটন। তাই সময় নষ্ট না করে বিজিবি ও পুলিশের দল দুটি এগিয়ে যায়। কয়েক মিনিটের মধ্যে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয় হামলাকারীদের। রক্ষা পায় উখিয়ার কোটবাজারের “পশ্চিমরত্না সুদর্শন বৌদ্ধ বিহার”।
নারকীয় সেই ঘটনার নয় বছর পেরিয়ে গেলো। এখনও বিচার চলছে…
লেখক: যমুনা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিবেদক।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।