ইমাম খাইর, সিবিএন:
কক্সবাজার পৌরসভার জলাবদ্ধতা নিরসনে দায়িত্ব গ্রহণের পর টানা ৩ মাস কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন নবনির্বাচিত মেয়র মো. মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী। সেই সঙ্গে নালানর্দমা দখলকারীদের নিজ দায়িত্বে দখল ছাড়ার অনুরোধ করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) সন্ধ্যায় কক্সবাজার প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মেয়র মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে কথা বলেন।
কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবু তাহের চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সাবেক সভাপতি বদিউল আলম, সাধারণ সম্পাদক মো. মুজিবুল ইসলাম, সিনিয়র সাংবাদিক তোফায়েল আহমদ, আয়াছুর রহমান, মমতাজ উদ্দিন বাহারী, এডভোকেট ফরিদুল আলম বক্তব্য রাখেন।
সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক জাহেদ সরওয়ার সোহেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে নবনির্বাচিত মেয়র মাবু বলেছেন, বর্ষা আসন্ন, শহরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নালা কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির দখলে রয়েছে। যেখানে তৈরি করা হয়েছে অনেক স্থাপনা। ৩ বছর ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালনকালে এসব নালা দখল মুক্ত করে জলাবদ্ধতা কিছু নিরসন করা হয়েছিল। কিন্তু নতুন করে কিছু নালা দখল হয়েছে। এসব নালা দখলকারীদের কাছে আমার অনুরোধ, দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব দখল ছেড়ে দেন নিজ দায়িত্বে। জলাবদ্ধতা নিরসন ও পরিচ্ছন্ন শহর করতে সহায়তা করুণ।
সোমবার অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে ২৮ হাজার ৬২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন মাহাবুবুর রহমান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী নারিকেল গাছ প্রতীকের প্রার্থী মাসেদুল হক রাশেদ পেয়েছেন ২৪ হাজার ১৬৮ ভোট।
ভোট পরবর্তি সকল প্রকার বিজয় মিছিল বন্ধ রাখার আহবান জানিয়েছেন মেয়র মাবু।
এদিকে, মঙ্গলবার সকাল থেকে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় ও কতৃজ্ঞতা প্রকাশ করছেন মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী।
এ সময় এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এখন এলাকায় এলাকায় স্বশরীরে ঘুরে এলাকা ভিত্তিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করছি। সমস্যা বিবেচনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমস্যা সমাধানে করা হবে। কক্সবাজার পৌরসভা হবে একটি পরিচ্ছন্ন, স্মার্ট ও পর্যটনবান্ধন শহর। আমার নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত ৩৭ দফা ক্রমান্বয়ে বাস্তবায়ন করা হবে। এর জন্য যা যা করণী তার সব কিছুই করবেন তিনি।
#ছাত্র নেতা থেকে মেয়র
মো. মাহাবুবুর রহমার মাবু চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের এজিএস, কক্সবাজার শহর ছাত্রলীগের আহবায়ক, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘ ৩৭ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি কক্সবাজার পৌরসভার টানা তিন বারের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র। পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন টানা ৩ বছর। শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত পছন্দে তাকে মনোনয়ন প্রদান করা হয়। সোমবার নির্বাচনে বিজয় হন তিনি।
ঘোষিত ফলাফল মতে, কক্সবাজার পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৯৫ হাজার ৩৮৬ জন। এরমধ্যে প্রায় ৬৩ শতাংশের কাছা-কাছি ভোট প্রদান করেছেন ভোটাররা। ৫৯ হাজার ২৯৬ জন ভোটার তাদের ভোট প্রয়োগ করলেও ২২৭ ভোট বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।
ঘোষিত ফলাফলকে জনতার বিজয় বলে মন্তব্য করেছেন মো. মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী। তিনি বলেছেন, সাধারণ ভোটাররা আন্তরিকভাবে নৌকা প্রতীক ও আমাকে ভালোবেসে নির্বাচিত করেছেন। আমি জনতা সহ সকল স্তরের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ।
এ বিজয় নিয়ে সমর্থকদের কোন প্রকার মিছিল সমাবেশ থেকে বিরত থাকার আহবান জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, বিদ্রোহী প্রার্থী রাশেদ আমার বন্ধু, তার পিতার প্রতি আমার সম্মান চিরদিন থাকবে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।