জে. জাহেদ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি বলেছেন, ‘কর্ণফুলী ধীরে ধীরে শিল্পনগরে পরিণত হচ্ছে, এখানে যদি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকে, তাহলে এলাকার মানুষ ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। সে বিবেচনায় কর্ণফুলীতে মডার্ণ ফায়ার সার্ভিস করা হয়েছে। ধাপে ধাপে কর্ণফুলী উপজেলাকে নতুন আঙ্গিকে সাজানো হচ্ছে। ৩/৪ বছর আগেও যারা কর্ণফুলী থেকে বিদেশে গেছেন। তাঁরা এসে কর্ণফুলীকে চিনতে পারবে না। প্রতি মাসে কিংবা ৬ মাসে কর্ণফুলীর চিত্র পাল্টাচ্ছে। আরও উন্নয়ন হবে কর্ণফুলীতে। এলাকা মর্ডাণ হচ্ছে সাথে সাথে আপনাদের চিন্তা চেতনাও মর্ডাণ হতে হবে। আগের চিন্তা ধারা নিলে সামনে আগাতে পারবেন না। স্মার্ট উপজেলা হচ্ছে, আপনাদেরও স্মার্ট হতে হবে। গতানুগতিক চিন্তাধারা পাল্টাতে হবে।’

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় ‘মডার্ণ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন’ উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এর যুগ্ম সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ ওয়াহিদুল ইসলাম, ১১টি মডার্ণ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্প পরিচালক মো. শহিদ আতাহার হোসেন ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন কর্ণফুলী উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী।

ভূমিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশের ডাক দিয়েছেন। কর্ণফুলীর নাগরিকও স্মার্ট হবে। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন নিয়ে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, তাঁরই সুযোগ্য কণ্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সে স্বপ্ন পূরণ করে চলেছেন। গত ১৫ বছরে বাংলাদেশকে তিনি যে জায়গায় নিয়ে গেছেন, ৭৫ এর পরবর্তী সময়ে এত উন্নয়ন হয়নি দেশে। বাংলাদেশ সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের জিডিপি বেড়েছে। এমনকি করোনাকালেও শক্ত হাতে দেশের উন্নয়ন ধরে রেখেছেন। দেশে তিন ফসলা জমিতে কোন স্থাপনা করা যাবে না। কারণ দেশের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে।’

‌‌‘আমার পিতার স্বপ্ন ছিল পশ্চিম পটিয়া থেকে সরে গিয়ে পাঁচ ইউনিয়নকে নিয়ে একটি আধুনিক আলাদা উপজেলা গড়ে তুলবেন। যার নাম হবে কর্ণফুলী উপজেলা। আমার পিতা যখন শেষ বারে এ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হলেন, তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ তা জানিয়েছিলেন। তখন প্রধানমন্ত্রীও কর্ণফুলী উপজেলা গড়তে সম্মতি দিয়েছিলেন। কিন্তু দূর্ভাগ্য আমার পিতা তা দেখে যেতে পারেননি। পরে আমি আমার পিতার অসমাপ্ত স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে কর্ণফুলী উপজেলা গড়ে তুলি।’

চট্টগ্রাম ১৩ আসনের সাংসদ আরও বলেন, ‘আজকের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনটি সারাদেশে মডার্ণ ১১টি ফায়ার সার্ভিসের মধ্যে একটি। ফায়ার সার্ভিসে যারা কাজ করেন তাঁরা জানে এসব জীবন ঝুঁকির কাজ। তবুও মানুষের জান মাল রক্ষার্থে মুর্হুতেই তাঁরা ঝাঁপিয়ে পড়েন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে কাজ করতে গিয়ে যাঁরা আত্মহুতি দিয়েছেন তাঁদের সবাইকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করি। এই স্টেশনটি শুধু কর্ণফুলী উপজেলার কোন দূর্ঘটনা নয়, পুরো চট্টগ্রামের যে কোন এলাকার অগ্নি দূর্ঘটনায় কাজ করবে। যেহেতু এটি মডার্ণ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন।’

অনুষ্ঠানে মডার্ণ ফায়ার সার্ভিস এর অফিসার রাহুল দেব নাথের নেতৃত্বে ভূমিমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। দেশও জাতির কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করেন চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস জামে মসজিদ এর পেশ ইমাম মাওলানা রবিউল হাসান।

প্রসঙ্গত, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়নাধীন ‘১১টি মডার্ণ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় কর্ণফুলী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটি বাস্তবায়ন করেন গণপূর্ত অধিদপ্তর চট্টগ্রাম-২। নির্মাণে কাজ করেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ডেল্টা ইঞ্জিনিয়ার্স এন্ড কনসোটিয়াম লিমিটেড।

কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান চৌধুরী ওয়াই জংশন এলাকায় রাস্তার পাশে ১ দশমিক শূণ্য ২ একর জায়গায় ৪ তলা বিশিষ্ট আর্কিটেকচারাল ডিজাইনে আধুনিক ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশনটি নির্মাণ করা হয়।