আব্দুস সালাম টেকনাফ :
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত জারি করা হয়েছে। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিনদ্বীপ নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ, স্পিডবোট, সার্ভিস ট্রলারসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এর ফলে সেন্টমার্টিন দ্বীপে অবস্থান করা তিন শতাধিক পর্যটক আটকা পড়েছেন।

এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে গতকাল দুপুরের পর থেকে কক্সবাজারে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। সাগর উত্তাল থাকায় টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন রুটে নৌযান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত এই পথে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে দ্বীপে আটকা পড়া পর্যটকদের যাতে কোনো ধরনের অসুবিধা না হয়, তা নিয়ে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আটকা পড়া পর্যটকদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ও টেকনাফের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নয়ন শীল বলেন, গত বুধবার থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পরীক্ষামূলকভাবে এক সপ্তাহের জন্য ‘এমভি বারো আউলিয়া’ নামের পর্যটকবাহী জাহাজকে চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। সাত দিনের চলাচলে সফলতা পাওয়া গেলে পরে ওই নৌপথে চলাচলকারী সব জাহাজকে চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে ‘কেয়ারি সিন্দাবাদ’ নামের আরেকটি জাহাজ কতৃপক্ষ চলাচলের অনুমতি চেয়ে বিআইডব্লিউটিএ বরাবর আবেদন করেছে।

এমভি বারো আউলিয়া জাহাজের একজন টিকিট বিক্রেতা বলেন, শুক্রবার সকালে টেকনাফের দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে এমভি বারো আউলিয়া জাহাজে করে ৮৫২ জন পর্যটক
সেন্টমার্টিনদ্বীপে ভ্রমণে যান। দুপুরের পর থেকে জাহাজটিতে প্রায় ৬০০ পর্যটক টেকনাফ ফিরে এলেও অন্যরা রাতযাপনের জন্য দ্বীপে অবস্থান করেন।

টেকনাফ-সেন্টমার্টিনদ্বীপ নৌরুটের চলাচলকারী সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ ও স্পিডবোট মালিক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, সতর্ক সংকেতের কারণে শনিবার সকাল থেকে যাত্রী পরিবহন বন্ধ আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় যাত্রী পরিবহন শুরু করা হবে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার স্পিডবোট ও ট্রলারে করে তিন শতাধিক পর্যটক সেন্টমার্টিনদ্বীপ ভ্রমণে গিয়েছিলেন। এর মধ্যে ৫০ জনের মতো পর্যটক দ্বীপে অবস্থান করছেন।

সেন্টমার্টিনদ্বীপ সৈকতের বিচকর্মী জয়নাল আবেদীন বলেন, সতর্কসংকেত থাকায় দ্বীপে আটকে পড়া পর্যটকেরা জেটিঘাট এলাকা, বাজার, সমুদ্রসৈকতে হাঁটাচলার পাশাপাশি সমুদ্রস্নানের মাধ্যমে সময় পার করছেন। সৈকতের বিপজ্জনক স্থানে লাল পতাকা টাঙানো হয়েছে। ওই এলাকায় গোসলে না নামতে পর্যটকদের বারবার বলা হচ্ছে।

সেন্টমার্টিনদ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, বৃহস্পতি ও শুক্রবার সেন্ট মার্টিনে বেড়াতে আসা কয়েক শতাধিক পর্যটক দ্বীপে আটকা পড়েছেন। আবার সেন্টমার্টিনদ্বীপ থেকে টেকনাফে পারিবারিক কাজে যাওয়া দেড় শতাধিক স্থানীয় বাসিন্দা টেকনাফে আটকা আছেন। হঠাৎ করে সাগরে লঘুচাপের প্রভাবে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।