আব্দুস সালাম,টেকনাফ:
সতর্কসংকেত জারি থাকায় সেন্টমার্টিনদ্বীপে ভ্রমণে গিয়ে আটকা পড়েছিলেন সাড়ে তিনশতাধিক পর্যটক।
শনিবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এমভি বার আউলিয়া নামে জাহাজে করে তাঁরা নিরাপদে টেকনাফে ফিরে এসেছেন।
এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী।
তিনি বলেন, আবহাওয়ার সতর্ক সংকেত প্রত্যাহার করার পর শনিবার থেকে আবার জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে।আটকাপড়া পর্যটকেরা নিরাপদে ফিরেছেন।তারা জাহাজ থেকে নেমে স্ব-স্ব গন্তব্য রওয়ানা হচ্ছেন।
ইউএনও বলেন,টেকনাফ-সেন্টমার্টিনদ্বীপ নৌপথে পযটকবাহী জাহাজ ও পণ্যবাহী সার্ভিস ট্রলার চলাচল অনুমতি দেওয়া হলেও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ৩নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করায় টেকনাফ-সেন্টমার্টিনদ্বীপ নৌপথে জাহাজসহ নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয় উপজেলা প্রশাসন।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্ক সংকেত প্রত্যাহার করে নেয়। ফলে শনিবার সকালে পুনরায় জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে।তবে এ নৌপথে কেয়ারি সিন্দাবাদ নামে আরও একটিসহ আজ থেকে দুটি পযটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হযেছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানা যায়, শনিবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে ৪১৪জন পযটক নিয়ে এমভি বার আউলিয়া নামে জাহাজটি সেন্টমার্টিনদ্বীপের উদ্দেশে রওনা দেয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জাহাজটি সেন্টমার্টিনদ্বীপ জেটিতে নোঙর করে।আবার বিকার সাড়ে ৩টার দিকে আটকেপড়া সাড়ে তিনশতাধিক পর্যটকসহ আজ নতুন করে ভ্রমণে যাওয়া আরও প্রায় দেড় শতাধিক পর্যটক নিয়ে সন্ধ্যার দিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) টেকনাফের দমদমিয়া ঘাটে পৌঁছায়। তবে আড়াই শতাধিক পর্যটক রাত যাপন করার জন্য সেন্টমার্টিনদ্বীপে রয়ে গেছেন।
গত চারদিন ধরে আটকে থাকা ওই পর্যটকদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৭৭জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী রয়েছেন। এ ছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং নীলফামারী মেডিকেল কলেজের ৩৮জন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ওই পর্যটকদের মধ্যে রয়েছেন তারাও এমভি বার আউলিয়া জাহাজে করে টেকনাফে ফিরেছেন বলে জানান
সেন্টমার্টিনদ্বীপ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. সেলিম হোসেন ও সেন্টমার্টিনদ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান।
দমদমিয়া জাহাজঘাটে গিয়ে দেখা যায়, এমভি বার আউলিয়া জাহাজটি সন্ধ্যায় ঘাটে এসে পৌঁছায়।জাহাজটি ভিড়ানোর পর পর পযটকেরা জাহাজ থেকে নেমে স্ব-স্ব গন্বব্য রওয়ানা হওয়ার জন্য বাস বা নিজস্ব গাড়িতে উঠতে দেখা গেছে।
অপরদিকে,এরপর কেয়ারি সিন্দাবাদ জাহাজটি নিজস্ব ঘাটে এসে পৌছায়।
জামালপুরের বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা রেজওয়ানুর রহমান বলেন,স্ত্রীকে সঙ্গে করে ভ্রমণে গিয়ে চারদিন আটকাপড়েন।শুধু আমরা নয়,প্রায় চার শতাধিকের মতো পর্যটক আটকা পড়েছিল।সেন্টমার্টিনদ্বীপের অধিকাংশ হোটেল-রেস্তোরা বন্ধ থাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণের খাবার পাওয়া যায়নি।ডাল,আলুভর্তা দিয়ে ভাত খেয়েছি দুই বেলা।শুধু আমরা নয়,দ্বীপের মানূষের একই অবস্থা ছিল।তেমন কোনো সমস্যা না হলেও কিছুটা ভয় তো ছিলই।এখন বাড়ি ফেরার তোড়জোড় করছেন।
ঢাকা থেকে ভ্রমণে আসা পযটক ফেরদৌস আরা ও আলী হোসেন বলেন,‘আটকাপড়ার সময় সেন্টমাটিনে খাদ্যপণ্যে সংকট ছিল। ওইসময় ডিম না পেয়ে ছেলে-মেয়েদের খাবার নিয়ে খুবই কষ্ট হয়েছে। পাশাপাশি টাকা-পয়সা নিয়ে ও ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।’