আবদুল মালেক সিকদার রামু :
কক্সবাজারের রামু সরকারি কলেজ এর সিনিয়র শিক্ষিকা আকতার জাহান কাকলিকে হেনস্থা ও মারতে উদ্যত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কলেজ চলাককালীন সময় বুধবার দুপুরে অধ্যক্ষের অফিসকক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এব্যাপারে ভূক্তভোগী শিক্ষিকা জুনিয়র শিক্ষক মোঃ হোছাইনকে অভিযুক্ত করে রামু থানায় জিডি করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, ক্লাস চলাকালীন সময় কলেজ প্রাঙ্গনে সাংবাদিককে বক্তব্য প্রদানকে কেন্দ্র করে সিনিয়র শিক্ষিকা আকতার জাহান কাকলি ও জুনিয়র শিক্ষক মোঃ হোছাইন এর মাঝে বাকবিতন্ডা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে ছাত্রছাত্রীরা জড়ো হয়ে তাদেরকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। পরে অধ্যক্ষের কক্ষে পুনরায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষিকা আকতার জাহান কাকলি জানান, তিনি এটিএন নিউজের প্রতিবেদককে কলেজ এর সাম্প্রতিক অনিয়ম ও দূর্নীতির ব্যাপারে সাক্ষাতকার দিচ্ছিলেন, ঐ সময় কলেজের প্রভাষক মোঃ হোছাইন নানান রকম ইঙ্গিতপূর্ন আচরণ করছিলেন। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ইঙ্গিতপূর্ন আচরণের ব্যাপারে মোঃ হোছাইনের কাছে জানতে চান শিক্ষিকা। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক হোছাইন বাকবিতন্ডা শুরু করেন শিক্ষিকার সাথে। পরে শিক্ষিকা সেখান থেকে অধ্যক্ষের রুমে গিয়ে মিটিংয়ে বসেন। মিটিং চলাকানীন সময় হঠাৎ অধ্যক্ষের রুমে প্রবেশ করে পুনরায় শিক্ষিকাকে হেনস্থা ও মারতে তেড়ে আসেন। পরে অপরাপর শিক্ষকরা তাকে রক্ষা করেন।
রামু সরকারী কলেজের সহকারী অধ্যাপক অহিদুল কবির জানান, সহকারী অধ্যাপক আকতার জাহান কাকলি সহ অধ্যক্ষের কক্ষে মিটিং করছিলেন। ঐসময় কলেজের প্রভাষক মোঃ হোছাইন রুমে প্রবেশ করে উপস্থিত শিক্ষকদের সামনে উত্তেজিত কন্ঠে অনেকটা গায়ে পড়ে শিক্ষিকা আকতার জাহান কাকলির সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ান। চরম উত্তেজনার এক পর্যায়ে শিক্ষিকাকে মারতে উদ্যত হন । এসময় উপস্থিত শিক্ষকদের হস্তক্ষেপে শিক্ষিকাকে বিপন্মুক্ত করা হয়। তিনি আরো জানান, শিক্ষিকা আকতার জাহান কাকলিকে শারিরিকভাবে আঘাত করতে ব্যর্থ হয়ে প্রভাষক মোঃ হোছাইন অফিস কক্ষের দেয়ালে লাথি মেরে নিজের রাগ ও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটান বলে জানান এ শিক্ষক।
রামুর বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর আহমদ জানান, কলেজের একজন জুনিয়র শিক্ষক কর্তৃক সিনিয়র শিক্ষিকাকে হেনস্থা ও মারতে উদ্যত হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয় ঘটনা। এরকম নেতিবাচক ঘটনা কলেজের সুষ্ঠু পরিবেশ ও শিক্ষাকার্যক্রমকে ব্যাহত করে।
অভিযুক্ত শিক্ষক বাংলা বিভাগের প্রভাষক মোঃ হোছাইন নিজেকে নির্দোষ দাবী করে উল্টো সহাকারী অধ্যাপক আকতার জাহান কাকলি তাকে গালিগালাজ করে বলে জানান।
এব্যাপারে রামু সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মুজিবুল আলম অনাকাঙ্কিত ঘটনার দুঃখপ্রকাশ করেন। এ ঘটনায় কলেজের ৯ শিক্ষক বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন জমা দিবেন।
উল্লেখ যে, সম্প্রতি রামু সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের নানান অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্য হওয়ার পর শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষিকাকে হেনস্থার ঘটনাটি নতুন করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।