জালাল আহমদ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠান আগামীকাল ২৯ অক্টোবর (২০২৩) রবিবার সকাল ১১.০০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিশেষ সমাবর্তন বর্জন করেছে বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।
সমাবর্তনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে Doctor Of Laws (মরণোত্তর) ডিগ্রি প্রদান করা হবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ ১৯৭৩ আর্টিকেল ১০(১) অনুযায়ী এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর-এর অনুমতিক্রমে সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
এই বিশেষ সমাবতর্নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অ্যালামনাই, রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটবৃন্দ এবং অতিথিবৃন্দসহ প্রায় ১৮ হাজার গণ্যমান্য ব্যক্তি অংশগ্রহণ করবেন। অতিথিদের মধ্যে থাকবেন বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যবৃন্দ, মন্ত্রীবর্গ ও সংসদ সদস্যবৃন্দ, ঢাকাস্থ বিদেশি দূতাবাস/ হাইকমিশনের রাষ্ট্রদূত/ হাইকমিশনার/ চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ, সিনেট, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যবৃন্দ, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এবং সুধীজন।
সিনেট, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যবৃন্দ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ সকাল ১০:০০টায় কার্জন হল প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়ে সমাবর্তন শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটবৃন্দ জিমনেসিয়াম সংলগ্ন গেইট দিয়ে সমাবর্তনস্থলে প্রবেশ করবেন। তাদের জন্য সকাল ০৮:০০টায় গেইট খোলা হবে এবং তারা সকাল ১০:০০ মধ্যে অবশ্যই সমাবর্তনস্থলে আসন গ্রহণ করবেন।
অ্যালামনাইগণ, রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ সুইমিং পুল সংলগ্ন গেইট দিয়ে সমাবর্তনস্থলে প্রবেশ করবেন। তাঁদের জন্য সকাল ০৯:০০টায় গেইট খোলা হবে এবং তাঁরা সকাল ১০:০০টার মধ্যে অবশ্যই সমাবর্তনস্থলে আসন গ্রহণ করবেন।
সমাবর্তনের দিন ভিআইপি অতিথিবৃন্দের গাড়ি কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ভবন (কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন সায়েন্স এনেক্স ভবন) মাঠে ও মোকারকম ভবন চত্বরে (কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের উত্তর পাশে) পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া, অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দের গাড়ি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল খেলার মাঠে পার্কিং করতে হবে।
সমাবর্তনের দিন সকাল ০৭:০০টা থেকে দুপুর ০২:০০টা পর্যন্ত শাহবাগ ক্রসিং থেকে দোয়েল চত্বর, হাইকোর্ট থেকে দোয়েল চত্বর, ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে দোয়েল চত্বর, পলাশী থেকে দোয়েল চত্বর এবং নীলক্ষেত থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত রাস্তায় গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
সমাবর্তনে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণপত্র এবং জাতীয় পরিচয়পত্র/প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আইডি/পাসপোর্ট সাথে আনতে হবে। আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তরযোগ্য নয়। সমাবর্তনস্থলে মোবাইল ফোন, হাতব্যাগ, ব্রিফকেস, ক্যামেরা, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ছাতা ও পানির বোতল নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না।
সাদা দলের বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠান বর্জন:
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিশেষ সমাবর্তন বর্জন করেছে বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।
গত বৃহস্পতিবার ২৬ অক্টোবর(২০২৩) সাদা দলের এক বর্ধিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান ও অধ্যাপক আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতির বিষয়ে আমরা ভিন্নমত পোষণ করছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণতন্ত্র চর্চার সূতিকাগার ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার লালন কেন্দ্র। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তি, পাকিস্তানি অগণতান্ত্রিক স্বৈরশাসক, এমনকি স্বাধীন বাংলাদেশে অগণতান্ত্রিক স্বৈরশক্তির বিরুদ্ধে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক ভূমিকার কথা আমরা সবাই জানি।
সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এমন একজন প্রধানমন্ত্রীকে, যার নেতৃত্বাধীন সরকার বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস ও মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে। মুক্তবুদ্ধি চর্চা ও বাকস্বাধীনতা হরণ করছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।