খাসজমি লিজ নিয়ে দেওয়ার আশা দিয়ে এক প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েক দফায় ৭৮ লাখ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অফিস সহকারী জহির আলমের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনার পর টাকা উদ্ধার ও ‘প্রতারক’ জহিরকে আইনের আওতায় আনতে মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে অভিযোগও দিয়েছে ‘নিবরাস ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ নামে নারায়ণগঞ্জের ওই প্রতিষ্ঠান।

এদিকে সচিবালয় সূত্রে জানা যায়, তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে নড়াইল সদর উপজেলার তুলারাম ইউনিয়ন ভূমি অফিসে বদলি করেছে মন্ত্রণালয়।

সূত্র জানায়, নিবরাস ইসলামী রিসার্চ ফাউন্ডেশনের অধীনে আল জামিয়াহ আস সালাফিয়্যাহ নামে সারা দেশে শাখা রয়েছে, যার একটি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে। দীর্ঘদিন ধরে এ প্রতিষ্ঠানের দখলে কিছু খাসজমি রয়েছে। তাই রাষ্ট্রের নিয়মানুযায়ী জমিটি লিজ নেওয়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছিলেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ। এক পর্যায়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন অনুবিভাগের অফিস সহায়ক হিরের সঙ্গে আলাপ হলে সেই জের ধরে জমিটি লিজ নিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন জহির। এরপর বিভিন্ন সময় অফিসের কর্মকর্তাদের জন্য বলে দফায় দফায় সর্বমোট ৭৮ লাখ ২০ হাজার টাকা নেন। কিন্তু এরপরও ওই প্রতিষ্ঠানকে জমিটি লিজ নিয়ে দিতে পারেননি। এক পর্যায়ে জহিরের প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে টাকা ফেরত পেতে মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হয় ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ। গত ১ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

আরও জানা যায়, জহির আলম বর্তমানে নড়াইল সদর উপজেলার তুলারাম ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত। ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল এক অফিস আদেশে তাকে ভূমি মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছিল। ওই বছরের ৬ মে তিনি ভূমি মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন। পরে তাকে মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন অনুবিভাগে অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ করা হয়।

তবে যোগদানের পর তার বিরুদ্ধে অনিয়মের নানান অভিযোগ ওঠে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগের কথা কেউ বলতে রাজি হননি। তার আরও দুই ভাই একই মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেন। তাদের একজন অফিস সহায়ক, অন্যজন চেইন ম্যান।

মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্বাছ উদ্দিন বলেন, আমরা তাকে প্রয়োজনে এনেছিলাম। এখন মন্ত্রণালয়ে অফিস সহায়ক পদে বেশ কয়েকজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফলে জহিরকে আগের কর্মস্থলে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিলুর রহমান বলেন, আমি বিষয়টি ভালোভাবে জেনে ব্যবস্থা নেব।

তবে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে জহির আলম বলেন, আমি নিবরাস ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন চিনি না। কোনো টাকা নিইনি, কিচ্ছু জানি না। এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।