জে. জাহেদ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ পেয়েছেন ১২ টি আসন, স্বতন্ত্র পেয়েছেন ৩টি ও জাতীয় পার্টি পেয়েছেন ১ আসন।
ফলাফলে দুটি আসন হারিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। একটি আসনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত জাতীয় পার্টির এক প্রার্থীও শোচনীয়ভাবে হেরেছেন। আওয়ামী লীগেরই তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী পেয়েছেন বড় ব্যবধানের জয়। ভোটের শেষ মুহূর্তে সারা দেশে এই প্রথম একজন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন— তিনি চট্টগ্রাম-১৬ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী।
চট্টগ্রামের সাতটি আসন থেকে এবারই প্রথম সংসদে যাচ্ছেন সাত নতুন মুখ। এর হলেন— চট্টগ্রাম-১ আসনের মাহবুব উর রহমান রুহেল, চট্টগ্রাম-২ আসনের খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, চট্টগ্রাম-৪ আসনের এসএম আল মামুন, চট্টগ্রাম-৮ আসনের আবদুচ ছালাম, চট্টগ্রাম-১২ আসনের মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৫ আসনের আবদুল মোতালেব এবং চট্টগ্রাম-১৬ আসনের মুজিবুর রহমান।
নির্বাচনী ফলাফলে দেখা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, উপমন্ত্রীসহ হেভিওয়েট প্রার্থীদের বিরুদ্ধে শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী একেবারেই ছিল না। রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, আনোয়ারা, কোতোয়ালী, সীতাকুণ্ডসহ বেশ কয়েকটি আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিপরীতে যারা দাঁড়িয়েছেন, ওই প্রার্থীদের প্রায় সকলেই এলাকায় অপরিচিত। আর এসব প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটের লড়াইয়ে শামিল হয়ে ভিআইপি প্রার্থীরা পেয়েছেন অনেকটা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার জয়।
চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই)
চট্টগ্রাম-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মাহবুব উর রহমান রুহেল বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। ১০৬টি ভোট কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৮৯ হাজার ৬৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সদ্য পদত্যাগী উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। ঈগল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৫২ হাজার ৯৯৫ ভোট।
এখানে নামমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আরও ছিলেন— বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) মো. ইউসুফ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির নুরুল করিম আবছার, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের প্রার্থী আব্দুল মান্নান এবং জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ এমদাদ হোসাইন চৌধুরী।
চট্টগ্রাম-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার সনি বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৭৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সদ্য পদত্যাগী উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা হোসাইন মুহাম্মদ আবু তৈয়ব। তরমুজ প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৭৮৪ ভোট। এর আগে তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও বর্তমান সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী নৌকার প্রার্থীর সমর্থনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। তবু ব্যালটে তার নাম থাকায় ফুলের মালা প্রতীকে পড়েছে ২৩০ ভোট।
এখানে নামমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আরও ছিলেন— বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ মাইজভাণ্ডারী (৩ হাজার ১৩৮ ভোট), ইসলামিক ফ্রন্টের মীর মোহাম্মদ ফেরদৌস আলম (৫২৫ ভোট), জাতীয় পার্টির মো. শফিউল আজম চৌধুরী (২৫৫ ভোট), ইসলামী ফ্রন্টের মো. হামিদ উল্লাহ (১৫২৫ ভোট) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহান (২২৫৭ ভোট)।
চট্টগ্রাম-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সাংসদ মাহফুজুর রহমান মিতা বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৫৪ হাজার ৭৫৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী। ঈগল প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ২৮ হাজার ৭০ ভোট।
এখানে নামমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আরও ছিলেন— জাতীয় পার্টির এমএ ছালাম (১৩৫ ভোট), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের নূরুল আক্তার (৫৬৬ ভোট), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ উল্যাহ খাঁন (২২২ ভোট), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মুহাম্মদ নুরুল আনোয়ার (৭০ ভোট), ন্যাশনাল পিপসল পার্টির মোহাম্মদ মোকতাদের আজাদ খান (১৫০ ভোট) ও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মো. আব্দুর রহীম (১১৭ ভোট)।
চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড)
চট্টগ্রাম-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এসএম আল মামুন বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। ১২৪টি ভোট কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৪২ হাজার ৭০৮ ভোট। এই আসনেও তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হয়নি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাঙ্গল প্রতীকের দিদারুল কবির পেয়েছেন মাত্র ৪ হাজার ৮৮০ ভোট। সাড়ে ৪ হাজার ভোট নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির সদস্য।
এখানে নামমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আরও ছিলেন— ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের প্রার্থী মো মোজাম্মেল হোসেন ১ হাজার ৭২৩ ভোট, তৃণমূল বিএনপির খোকন চৌধুরী ৬৭১ ভোট, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের প্রার্থী মোহাম্মদ আকতার হোসেন ২৩৪ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো শহীদুল ইসলাম চৌধুরী পেয়েছেন ৩৪৫ ভোট।
চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী)
চট্টগ্রাম-৫ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের সমর্থনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৫০ হাজার ৯৭৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মুহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী। কেটলি প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৬ হাজার ২৫১ ভোট। এই আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্তে তাদের প্রার্থী এম এ সালামের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে সেখানে সমর্থন দেওয়া হয় ব্যারিস্টার আনিসকে।
এখানে নামমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আরও ছিলেন— তৃণমূল বিএনপির মো. নাজিম উদ্দিন, সুপ্রিম পার্টির কাজী মহসীন চৌধুরী, ইসলামী ফ্রন্টের সৈয়দ মুক্তার আহমেদ, বিএনএফের আবু মোহাম্মদ সামশুদ্দিন ও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের ছৈয়দ হাফেজ আহমদ।
চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান)
চট্টগ্রাম-৬ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। ৯৫টি ভোট কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২ লাখ ২১ হাজার ৫৭২ ভোট। এই আসনে তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হয়নি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিউল আজম (ট্রাক) পেয়েছেন ৩ হাজার ১৫৯ ভোট।
এখানে নামমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আরও ছিলেন— জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ সফিক-উল আলম চৌধুরী, তৃণমূল বিএনপির মো. ইয়াহিয়া জিয়া চৌধুরী ও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের স. ম. জাফর উল্লাহ।
চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া ও আংশিক বোয়ালখালী)
চট্টগ্রাম-৭ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। মোট ১০৩টি ভোট কেন্দ্রে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৯৮ হাজার ৯৭৬ ভোট। রাউজানের মতো এই আসনেও তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হয়নি। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী এডভোকেট ইকবাল হাছান পেয়েছেন ৯ হাজার ৩০১ ভোট।
এখানে নামমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আরও ছিলেন— জাতীয় পার্টির মুছা আহমেদ রানা (লাঙ্গল) ২ হাজার ৩০৮ ভোট, তৃণমূল বিএনপির খোরশেদ আলম (সোনালী আঁশ) ১ হাজার ৩৩১ ভোট, ইসলামিক ফ্রন্টের আহমদ রেজা (চেয়ার) ১ হাজার ৩৯০ ভোট, সুপ্রিম পার্টির মোরশেদ আলম (একতারা) ১ হাজার ১৩০ ভোট।
চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও)
চট্টগ্রাম-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। ১৫২টি ভোট কেন্দ্রে কেটলি প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৭৪ হাজার ২৬৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর বিজয় কুমার চৌধুরী। তিনি পেয়েছেন ৪১ হাজার ৫০০ ভোট। এই আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্তে তাদের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে সেখানে সমর্থন দেওয়া হয় চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠকে।
এখানে নামমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আরও ছিলেন— ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে পরিচিত বিএনএফের প্রেসিডেন্ট আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মহিবুর রহমান বুলবুল, তৃণমূল বিএনপির সন্তোষ শর্মা, কল্যাণ পার্টির মো. ইলিয়াছ, ইসলামিক ফ্রন্টের সৈয়দ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. কামাল পাশা এবং বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের আবদুল নবী।
চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী)
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ৩১, ৩২, ৩৩, ৩৪ ও ৩৫ ওয়ার্ড মিলিয়ে চট্টগ্রাম-৯ আসন। এখানে মোট প্রার্থী ছিলেন সাতজন। এর মধ্যে ছয়জনই এলাকায় অপরিচিত। ফলে এই আসনে প্রায় বিনা বাধায় বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৩০ হাজার ৯৯৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের সানজীদ রশীদ চৌধুরী পেয়েছেন ১ হাজার ৯৮২ ভোট।
এখানে নামমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আরও ছিলেন— ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট আওয়ামী পার্টির মিটল দাশগুপ্ত, তৃণমূল বিএনপির সুজিত সরকার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মোহাম্মদ নূরুল হুসাইন ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের আবু আজম।
চট্টগ্রাম-১০ (খুলশী-পাহাড়তলী-হালিশহর)
চট্টগ্রাম-১০ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চু বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৫৯ হাজার ২৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সিটি মেয়র মনজুর আলম। ফুলকপি প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৫৩৫ ভোট।
এখানে নামমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আরও ছিলেন— স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদ মাহমুদ, তৃণমূল বিএনপির মো. ফেরদাউস বশির, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের আলমগীর হোসেন বঈদী, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের আবুল বাশার মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, সুপ্রিম পার্টির মিজানুর রহমান, জাতীয় পার্টির জহুরুল ইসলাম এবং জাসদের মো. আনিসুর রহমান।
চট্টগ্রাম-১১ (পতেঙ্গা-বন্দর)
চট্টগ্রাম-১১ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ প্রার্থী এম এ লতিফ বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। ১৫২টি ভোট কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৫১ হাজার ৪৯৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন। কেটলি প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৪৬ হাজার ৫২৫ ভোট।
এখানে নামমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আরও ছিলেন— ইসলামিক ফ্রন্টের আবুল বাসার মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, সুপ্রিম পার্টির মো. মহিউদ্দিন, তৃণমূল বিএনপির দীপক কুমার পালিত, এনপিপির নারায়ণ রক্ষিত ও গণফোরামের উজ্জ্বল ভৌমিক।
চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া)
চট্টগ্রাম-১২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার ৩১৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। ঈগল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৫ হাজার ২৪০ ভোট।
এখানে নামমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আরও ছিলেন— জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) প্রার্থী এম এয়াকুব আলী, জাতীয় পার্টির মো. নুরুচ্ছফা সরকার, ইসলামিক ফ্রন্টের কাজী মো. জসিম উদ্দিন, তৃণমূল বিএনপির রাজীব চৌধুরী, বাংলাদেশ কংগ্রেসের সৈয়দ মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন জিহাদী এবং ইসলামী ফ্রন্টের এমএ মতিন।
চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী)
চট্টগ্রাম-১৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৮৭ হাজার ৯২৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বলতে গেলে তেমন কেউ ছিলেন না।
এখানে নামমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন— ইসলামী ফ্রন্টের মো. আবুল হোসেন (মোমবাতি) ৫ হাজার ১৪১ ভোট, জাতীয় পাটির আবদুর রব চৌধুরী (লাঙ্গল) ৩ হাজার ৩০৬ ভোট, ইসলামিক ফ্রন্টের সৈয়দ মুহাম্মদ হামেদ হোসাইন (চেয়ার) ১ হাজার ৬৬৮ ভোট, তৃণমূল বিএনপির মকবুল আহম্মদ চৌধুরী (সোনালী আঁশ) ৮৩৭ ভোট, খেলাফত আন্দোলনের মৌলভী রশিদুল হক (বটগাছ) ৬১৫ ভোট এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম পাটির আরিফ মঈন উদ্দীন (একতারা) ৬১৩ ভোট।
চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ)
চট্টগ্রাম-১৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১৯ হাজার ৬৫৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরী। ট্রাক প্রতীকে তিনি পেয়েছেন মোহাম্মদ আবদুল জব্বার ১২ হাজার ৮৬২ ভোট।
এখানে নামমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আরও ছিলেন— বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সেহাব উদ্দিন মুহাম্মদ আবদুস সামাদ, বিএনএফের মো. গোলাম ইসহাক খান, বিএসপির মো. আইয়ুব, জাতীয় পার্টির আবু জাফর মো. ওয়ালিউল্লাহ, তরীকত ফেডারেশনের মো. আলী ফারুকী এবং ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মোহাম্মদ আবুল হোসাইন।
চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া)
চট্টগ্রাম-১৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। ১৫৭টি ভোট কেন্দ্রে ঈগল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৮৫ হাজার ৬২৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী। তিনি পেয়েছেন ৩৯ হাজার ২৫২ ভোট।
এখানে নামমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আরও ছিলেন— জাতীয় পার্টির মো. ছালেম, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. আলী হোসাইন, কল্যাণ পার্টির সোলায়মান কাশেমী, ইসলামী ঐক্যজোটের মো. হারুণ ও মুক্তিজোটের মো. জসিম উদ্দিন।
চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী)
চট্টগ্রাম-১৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মুজিবুর রহমান বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। ১১৪টি কেন্দ্রে তিনি পেয়েছেন ৫৭ হাজার ৪৯৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ৩৬ হাজার ৯৬৮ ভোট পেলেও ভোট শেষের আগমুহূর্তে মোস্তাফিজের প্রার্থিতা বাতিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ কবির লিটন পেয়েছেন ৩২ হাজার ২২০ ভোট।
এখানে নামমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আরও ছিলেন— স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. খালেকুজ্জামান (বেঞ্চ প্রতীক) ২৯৩ ভোট, কংগ্রেস পার্টি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামা ছনুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জিল্লুর করিম শরীফি (ডাব) ৮৪ ভোট, ন্যাপের আশীষ কুমার শীল (কুঁড়েঘর) ৩১১ ভোট, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহিউল আলম চৌধুরী (মোমবাতি) ১ হাজার ১২৫ ভোট, ইসলামী ঐক্যজোটের শফকত হোসেন চাটগামী (মিনার) ১১৪ ভোট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের আবদুল মালেক আশরাফী (চেয়ার) ৫০৩ ভোট, এনপিপির মামুন আবছার চৌধুরী (আম) ১০৬ ভোট। সবমিলিয়ে চট্টগ্রাম-১৬ আসনে ভোট গৃহীত হয়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার ২২৩টি।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।