ইমাম খাইর, সিবিএন:
টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে ট্রলার ও স্পীডবোট ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ৩ জনের মধ্যে মো. ফাহাদ (২৮) ও মো. ইসমাইল (২৭)কে ‘মৃত’ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
তারা সেন্টমার্টিন পশ্চিম কোনার পাড়ার মৃত আজম আলীর ছেলে।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকালে টেকনাফের সেন্টমার্টিন পশ্চিম বীচে দুইজনের লাশ ভেসে উঠে।
তবে এখনো নিখোঁজ রয়েছে নুর মোহাম্মদ সৈকত (২২) নামক একজন কলেজ ছাত্র।
স্থানীয় বাসিন্দা এডভোকেট কেফায়েত উল্লাহ খান মুঠোফোনে সিবিএনকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, সেন্টমার্টিন পশ্চিম বীচে দুইজনের লাশ ভাসমান অবস্থায় দেখা গেছে। ফাহাদ ও ঈসমাইলের স্বজনেরা পরিচয় সনাক্ত করে। নিখোঁজ সৈকতের সন্ধান এখনো মেলেনি। তারা সবাই সেন্টমার্টিন দ্বীপের স্থায়ী বাসিন্দা।
সিবিএনের টেকনাফ প্রতিনিধি আব্দুস সালাম জানিয়েছেন, বুধবার (২৪ জুলাই) বেলা আড়াইটার দিকে টেকনাফ থেকে নিত্যপণ্য ও যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিনদ্বীপ যাওয়ার পথে বঙ্গোপসাগরের গোলারচর মোহনায় এফবি সাদ্দাম নামের ফিশিং ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১৬ জন উদ্ধার হয়। পানিতে হারিয়ে যান নুর মোহাম্মদ সৈকত নামের একজন কলেজ ছাত্র। তাকে উদ্ধার অভিযানে গিয়ে নিখোঁজ হন মো. ফাহাদ ও মো. ঈসমাইল।
উদ্ধার তৎপরতা নিয়ে ক্ষুব্ধ দ্বীপবাসী
কোস্টগার্ডের চৌকিতে হামলা, ভাংচুর চালায়। কোস্টগার্ডও ফাঁকা গুলি বর্ষণ করেছে। গুলিতে একজন গুলিবিদ্ধসহ ৫ জন আহত হয়েছে।
সেন্টমার্টিন সার্ভিস বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, ৬৫ দিন মাছ ধরার সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে সেন্টমার্টিনের সাদ্দাম হোসেনের মালিকানাধীন এফবি সাদ্দাম টেকনাফ ঘাটে ছিল। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর ট্রলারটি সেন্টমার্টিনদ্বীপের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। ট্রলারটিতে ৬ জেলের সঙ্গে ১২ জন যাত্রী উঠে। ট্রলারটি বেলা আড়াইটার দিকে শাহপরীরদ্বীপ অতিক্রম করে বঙ্গোপসাগরের গোলারচর মোহনায় পৌঁছলে দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কবলে পড়ে ডুবে যায়।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, ঘটনার পর পরই সেন্টমার্টিন ঘাট থেকে কয়েকটি ফিশিং ট্রলার, কয়েকটি সার্ভিস বোট যোগে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। শেষ পর্যন্ত ১৬ জনকে উদ্ধার করা গেছে।
নিখোঁজ নুর মোহাম্মদ সৈকত (২২) সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের বাসিন্দা ও টেকনাফ সরকারি কলেজের ছাত্র।
এদিকে, ট্রলার ডুবির পর উদ্ধার তৎপরতা ঘিরে কোস্টগার্ডের সাথে সেন্টমার্টিনবাসির উত্তেজনা তৈরি হয়।
কয়েকজন বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধি জানিয়েছেন, ট্রলার ডুবির পর কোস্টগার্ডকে অবহিত করা হলেও তারা উদ্ধার তৎপরতায় সাগরে নামেন নি। দ্বীপবাসি সার্ভিস বোট ও ফিশিং ট্রলারে উদ্ধারে গেছেন। এসময় ১৬ জনকে উদ্ধার করে ঘাটে ফিরলে কোস্টগার্ড সদস্যরা ফটোসেশন করতে যায়। এতে দ্বীপবাসীর সাথে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত লোকজন কোস্টগার্ডের চৌকিতে হামলা করে ভাংচুর করে। একটি যানবাহন পুড়িয়ে দেয়। এসময় ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে কোস্টগার্ড। এ ঘটনায় হানিফ নামে একজন গুলিবিদ্ধসহ ৫ জন আহত হয়েছে। তারা চিকিৎসাধীন।
এই ঘটনায় দ্বীপে এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ বিষয়ে কোস্ট গার্ডের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।