ডেস্ক নিউজ:
চট্টগ্রামের বহাদ্দারহাটে তানভী সিদ্দিকীকে হ’ত্যার অভিযোগে মামলা করেছেন নিহতের পরিবার। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাছান চৌধুরী নওফেল, নগর আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর প্রকাশ বাবর আলী, জামালখান ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেবাল দাস সুমন, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনিসহ ৩৪ জনকে আ’সামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আ’সামি করা হয়েছে আরও ৪০ থেকে ৫০ জনকে।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাতে নগরের চান্দগাঁও থানায় বাদী হয়ে মামলাটি করেন নি’হত তানভীরের চাচা মোহাম্মদ পারভেজ।
থানা সূত্রে জানা গেছে, তানভীর হ’ত্যা মামলাসহ শেখ হাসিনার বি’রুদ্ধে এ পর্যন্ত ৬টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি খুনের মামলা ও একটি অ’পহরণ মামলা। তবে শেখ হাসিনার বি’রুদ্ধে তানভীর হ’ত্যা মামলাটি চট্টগ্রামে প্রথম মামলা। গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্ম সারা দেশে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করে।
এতে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দফায় দফায় পুলিশ এবং আওয়ামী লীগসহ দলটির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘ’র্ষ হয়। এ ঘটনায় গু’লিবিদ্ধ হয়ে ওইদিন তিন শিক্ষার্থী নিহ’ত হন। তাদের একজন তানভীর সিদ্দিকী।
মামলার এজাহারে সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদ পারভেজের ভাতিজা তানভীর ছিদ্দিকী গত ১৮ জুলাই দুপুর আড়াইটার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ‘শাট-ডাউন’ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। তারা পাঁচলাইশ থানার মুরাদপুর এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারের সামনে রাস্তার ওপর এসে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করেন।
বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে বাকি আসামিসহ অজ্ঞাত আরও ৪০-৫০ জন আসামি চাপাতি, কিরিচসহ মারাত্মক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ওয়াপদা অফিসের দিক থেকে এসে তানভীর ছিদ্দিকীসহ অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের দিকে ইট-পাথর নিক্ষেপ ও এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করতে থাকে। এতে তানভীরসহ আন্দোলনকারী অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। তানভীরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃ’ত ঘোষণা করেন।
চান্দগাঁও থানার ওসি জাহিদুল কবির কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ১৮ জুলাই বহদ্দারহাটে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হওয়া গুলিবর্ষণের ঘটনায় তানভীর নামে এক কলেজছাত্র নি’হত হন। এ ঘটনায় হত্যার অভিযোগ এনে নি’হতের চাচা বাদী হয়ে একটি হ’ত্যা মামলা করেছেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীসহ ৩৪ জনকে আ’সামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আ’সামি করা হয়েছে আরও ৪০ থেকে ৫০ জনকে।
তিনি বলেন, মামলাটি তদন্ত করার জন্য পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ছাবেদ আলীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মামলার অন্য আ’সামিরা হলেন, নগর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. এসরারুল হক, চকবাজারের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুর মোস্তফা টিনু, যুবলীগ নেতা মো. কাইসার, মাহবুব আলম, মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তারেক বিন ওসমান শরীফ, নোমান শরীফ।
নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মহিউদ্দীন ফরহাদ, মো. দেলোয়ার, মো. জালাল, মো. ফরিদ, সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি মো. তাহসীন, সিটি কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হোসাইন অভি, এইচ এম মিঠু, নুরুল আলম প্রকাশ কালা বদা, আরিফ ইফতেকার রশিদ, ওসমান গণি।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ইলিয়াছ বাবুল, মাইনুল ইসলাম শরীফ, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জিয়াউদ্দীন আরমান, যুগ্ম সম্পাদক মনির উদ্দিন, যুবলীগ নেতা মো. ফিরোজ, মো. জাফর, জাফর আলম, মনছুর আবেদীন, আবুল হাসনাত, মোহাম্মদ সুমন উদ্দীন, বাঁশখালী উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক মিজান সিকদার, যুবলীগ নেতা মো. শোয়াইব।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।