নিজস্ব প্রতিবেদক :
কক্সবাজার শহরের বার্মিজ মার্কেট এলাকায় বয়োবৃদ্ধ রাজিয়া বেগমের জায়গা দখলে পাঁয়তারা করছে চিহ্নিত একটি ভূমিদস্যু চক্র। চক্রটি রাজিয়া বেগমের পরিবার থেকে ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে মামলা—হামলার হুমকি দেওয়া হয়। এতে নিরূপায় হয়ে রাজিয়া বেগমের পরিবার আইনের আশ্রয় নিয়েছেন।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, কক্সবাজার মৌজার পি, আর, আর ২৬৬ ও এম, আর, আর ২৭২ নং খতিয়ানের ৩২৫৭ ও ৩২৫৮ দাগের ৫১ শতক ময়গুনজাইসসহ ৫২. ৪০ শতক জমির তুলনামূলক বি, এস ১১৭১ নং খতিয়ানের বি, এস ৭১৩৭, ৭১৩৮, ৭১৩৯, ৭১৪০ দাগাদির আন্দর ২য় পক্ষ/অঙ্গীকার গ্রহীতার প্রাপ্ত ও স্বত্ব দখলীয় আপোষ দখল ও পৃথক চিহ্নিত মতে বি, এস ৭১৪০ দাগের ৩.৩৫ শতক ময়গুনজাইসসহ ৩.৫০ শতক জমি ও তৎস্থিত বাড়ী ও দোকান গৃহের মালিক মৃত বদিউল আলমের মেয়ে রাজিয়া বেগম। বিগত ৪০/৫০ বছর ধরে জমিটির ভোগ দখলে রয়েছেন রাজিয়া বেগম। বর্তমানে ওই স্থানে ৫ম তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ করে তিনি শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছেন। কিন্তু সম্প্রতি দেশের পট পরিবর্তনের জায়গাটি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠে  এনামুল হক, তার স্ত্রী সাকি, রায়হান, বোরহান, আলাউদ্দিন ও তাদের বোন বেবি আক্তার গং। যার প্রেক্ষিতে গত ২১ আগস্ট রাজিয়া বেগমের বাড়িতে নির্মিত দোকান ‘শৈল্পিক’ শো—রুমে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে সন্ত্রাসীদের নিয়ে দোকান ঘর দখল করার হুমকী দেয় তারা। এসময় দখলবাজ এনামের মেয়েদের স্কুল—কলেজের পোশাক পরিয়ে জায়গা দখলে চেষ্টা চালায়। এছাড়া প্রকাশ্যে দেওয়া হয় হামলা, ভাঙচুর, নারী শ্লীলতাহানীর মিথ্যা অভিযোগ, হামলা—মামলার হুমকী। যা সিসি ক্যামারায় ভিডিও ধারণ আছে। এই ঘটনা আড়াল করতে ইতোমধ্যে ভূমিদস্যু চক্রটি বিভিন্ন কৌশলে ভিডিও করে নারীদের শ্লীলতাহানীসহ নানা নাটক রচনা করে মিথ্যা অভিযোগও দায়ের করে।

এদিকে প্রকাশ্যে হুমকী—ধমকি ও চাঁদাবাজির অভিযোগে জায়গার প্রকৃত মালিক রাজিয়া বেগমের ছেলে মনিরুল ইসলাম বাদি হয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানা ও সেনাবাহিনীর নিকট অভিযোগ দায়ের করেন। মনিরুল ইসলাম জানান, এই জমি নিয়ে তারা আগেও ঝামেলা করেছে। ১৯৮৭ সালে তৎকালীন কক্সবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান নুরুল আবছার উভয় পক্ষ নিয়ে বিচার করেছিলেন। ওই সময় মৃত মোজ্জাম্মেল ও তার ছেলে আলাউদ্দিন গং পৌর চেয়ারম্যানের বিচার মানেননি। যার প্রেক্ষিতে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এছাড়া ন্যায় বিচার পেতে বিগত ৯/৪/২০০৮ ইং তারিখ দখলবাজ চক্রের সদস্যা ওই জায়গা দখল করার চেষ্টা চালালে রাজিয়া বেগম বাদী হয়ে তৎকালীন অধিনায়ক, যৌথ বাহিনী, ১৭ ইসিবি বরাবর অভিযোগ দেন। যার প্রেক্ষিতে অধিনায়ক উভয়পক্ষের কাগজপত্র দেখে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বিগত ২/৫/২০০৮ ইং তারিখ ১৫০/= টাকার নন—জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে উভয় পক্ষের দস্তখত সম্বলিত অঙ্গীকারনামা সম্পাদন করেন। উক্ত অঙ্গীকারনামায় স্পষ্ট উল্লেখ আছে যে, আলাউদ্দিন—এনাম ও চাচা রুহুল আমিন গং আমাদের নিম্ন তপশীলোক্ত জায়গা ও দোকান কখনো দাবী করবে না বলে অঙ্গীকারনামার শর্ত মেনে দস্তখত দিয়েছিলেন। ২০১২ সালে তারা আমার বয়োবৃদ্ধ পিতাকেও হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার রড, কিরিচ, লাঠিশোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করেছিলেন। এরপর কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমানকেও তারা বিষয়টি নিয়ে বিচার প্রদান করেন। কিন্তু এতেও কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে তারা ভুয়া প্রমাণিত হয়।

এতোদিন তারা জায়গা ও দোকানের বিষয় নিয়ে নিরব ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তনের পর তারা আবারও জায়গা দখলে ভূমিদস্যু চক্রটি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যার অংশ হিসেবে তারা আমাদের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। যেকোন মুহুর্তে চক্রটি ভারী অস্ত্র নিয়ে আমাদের ঘরবাড়ি ও দোকান দখল করে হামলা করতে পারে। জনমনে তারা এমন হুমকী ধমকি দিচ্ছে বলে জানা গেছে। এতে আমার পুরো পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছে। এই ভূমিদস্যুদের কবল থেকে আমাদের জানমাল রক্ষায় সেনাবাহিনী, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।