বগুড়ায় আদালত চত্বরে মামলা করতে এসে হামলার শিকার হলেন আলোচিত ইউটিউবার হিরো আলম (৪০)। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ি রোববার দুপুরে বগুড়ার আদালতে এসে তিনি গত সংসদ নির্বাচনে তাকে কারচুপি করে হারিয়ে দেয়ার অভিযোগে সদ্য পদত্যাগকারী প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আওয়াল, বগুড়ার সাবেক জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম, বগুড়া-৪ সংসদীয় আসনের সাবেক এমপি রেজাউল করিম তানসেনসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে বগুড়া জেলা জজ আদালতে মামলা করেন।
মামলা দায়ের শেষে বেলা সাড়ে ১২টায় তিনি কোর্ট চত্বরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মামলা সম্পর্কে ব্রিফিং এর প্রস্ততি নিচ্ছিলেন, ঠিক তখনই কয়েকজন মিলে ‘তারেক রহমানের নামে কথিত কটুক্তির’ অভিযোগ এনে তার দিকে মারমুখি হয়ে তেড়ে যায়। তারা তাকে মারতে মারতে আদালত চত্বরের বাইরে টেনে হিচড়ে নিয়ে যায়।
এসময় উত্তেজিত জনতারাও তাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে। কোর্ট চত্বরের বাইরে তাকে নিয়ে রাস্তার ওপর কান ধরে ওঠবসাও করায়। ‘আর কখনো তারেক জিয়ার নামে কটুক্তি করবো না’ বলতে বাধ্য করা হয় তাকে।
পরে মারপিটকারীরা তাকে ছেড়ে দিলে কিছুটা ধাতস্ত হয়ে হিরো বলেন, যারা তাকে মারধর করেছে তাদের ভিডিও দেখে মামলা করা হবে। এসময় সে বক্তব্যে এ হামলার জন্য সে বিএনপির নেতাকর্মীদেরও দায়ী করে।
এদিকে এ ঘটনাটি অনলাইনে ভাইরাল হয়ে গেলে, নেটিজেনরা কেউ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কেউ তাকে গণ ধোলাইয়ের পক্ষে সাফাই গায়। কেউ আবার বিএনপির সমালোচনায় মেতে ওঠে। ঘটনার পর জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা এবং সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেণা তাৎক্ষনিকভাবে জানিয়ে দেন, এর সাথে বিএনপি বা এই দলের কোন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মি জড়িত নন। বিকেল ৫টায় দলীয় কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলন ডাকে বিএনপি। সেখানে পুনরায় দৃঢ়ভাবে জানানো হয়, হিরো আলমের ওপর হামলার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে অনলাইনে বক্তব্য দেয়ার জন্য দুই দিনের মধ্যে তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে অন্যথায় তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে বিএনপির একটি সুত্র জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে মারাত্মক আওয়ামী ষড়যন্ত্রের ক্লু পাওয়া গেছে। ক্লু অনুযায়ী ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এই হামলায় নেতৃত্বদানকারী রনী ও নুরু মহুরি দু’জনই সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। এই দুজনই বিএনপির ভাবমর্যাদা নষ্টের প্রজেক্ট হিসেবে কথিত তারেক রহমানের কটুক্তির কথিত অভিযোগ এনে হিরো আলমকে মারধর করেছে। এছাড়্ওা অনেক প্রত্যক্ষদর্শীই অভিযোগ করেন, হিরো আলম কোর্টে আসবে জেনেও কেন সেখানে পুলিশের উপস্থিতি ছিল না বা অনেক্ষণ ধরেই তার ওপর মারপিট হামলা চলা সত্বেও পুলিশ আসেনি। তারা বলেন, একইভাবে হিরো আলমের আইনজীবী বা তার সহযোগিরাই কেন পুলিশ কল করেনি । এটা সন্দেহজনক বলে অনেকেরই অভিমত । জেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দ এ ঘটনার সাথে জড়িত নুরু রনীকে দ্রুত গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদে আসল মোটিভ উদ্ধারের জন্যও তারা পুলিশের প্রতি আহ্বান জানান।
-ইনকিলাব
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।