সিবিএন ডেস্ক:

কক্সবাজারে চলছে প্রবল বর্ষণ, এবং পাহাড়ি ঢলের কারণে নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী পরিবারের পানিবন্দি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। জেলার শতাধিক গ্রামে পানি প্রবেশ করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার কারণে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

প্রবল বৃষ্টির কারণে কলাতলী, পৌর এলাকার অধিকাংশ ওয়ার্ড, চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, রামু, উখিয়া, টেকনাফ, ঈদগাঁও এবং কক্সবাজার সদরের নিম্নাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার কারণে বীজতলা, পানের বরজ এবং সবজি ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলা শহর ও উপজেলাগুলোর লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বাঁকখালী এবং মাতামুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যার ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারী জানিয়েছেন, গত দুই দিনের ভারি বর্ষণে টেকনাফের ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে, যার ফলে অর্ধলাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। অনেকের ঘর-বাড়ি তলিয়ে গেছে, ফলে তাদের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা থেকে টানা বৃষ্টির ফলে টেকনাফের হোয়াইক্যং, হ্নীলা, টেকনাফ সদর, বাহারছড়া, শামলাপুর, সাবরাং ইউনিয়নের বহু বাড়িঘরে পানি প্রবাহিত হয়েছে। বিশেষ করে হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী, লেদা এবং হোয়াব্রাং এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহবিদ আব্দুল হান্নান জানান, সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ৮৮ থেকে ৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে এবং অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে এবং পাহাড়ধসের আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে কক্সবাজারে অতি ভারি বর্ষণ শুরু হয়েছে, যার ফলে শহর ও কলাতলিতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিকাল থেকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রেড ক্রিসেন্টের সহায়তায় মাইকিং করা হচ্ছে এবং পানিবন্দি ও পাহাড়ধসের আশঙ্কায় থাকা বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসার অনুরোধ করা হয়েছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাশ জানিয়েছেন, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের কার্যক্রম তদারকির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের সংশ্লিষ্ট আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আসার অনুরোধ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে পাহাড় ধ্বসে সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নে একই পরিবারের ৩ জন ও উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৩ জন মোট ৩ জনের মৃত্যু হয়।