বার্তা পরিবেশক:
কক্সবাজার জেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের শীল পাড়ায় জায়গা জমির বিরোধের জেরে ষাটোর্ধ বৃদ্ধ সুনীল শীল ( ৬০) এর উপর শারিরীক নাজেহালসহ হামলার অভিযোগ উঠেছে।

গত ১১ সেপ্টেম্বর দুপুর ১ টার দিকে সুনীল শীলের নির্মানাধীন ভবনে এ ঘটনা ঘটে।

সূত্র জানায়, প্রতিদিনের মতো ভুক্তভোগী সুনীল শীল নিজ বসত ভিটার নির্মানাধীন জায়গার মধ্যে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করার কাজ করছিলেন। নির্মানাধীন ভবন হওয়ায় সেখানে মিস্ত্রি সহ নানা ধরনের লোকজনের যাতায়াত ছিলো। ঘটনার দিন ভবনে কোন লোকজন ছিল না। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে দীর্ঘদিনের জায়গা জমির বিরোধের প্রতিশোধ নিতে সবুজ কান্তি শীলের নেতৃত্বে বাসু শীল, সনজিত শীল অভি শীল, অজিত শীল, নিশান শীল, অংকর শীল এবং সৈকত শীলের পারস্পরিক যোগসাজশে ভারসাম্যহীন প্রতিবন্ধী নারীকে নির্মানাধীন ভবনে পাঠিয়ে ধর্ষণের ছক আঁকে। পরবর্তীতে সবুজ শীলের নেতৃত্বে সাঙ্গপাঙ্গরা একত্রিত হয়ে ষাটোর্ধ বৃদ্ধ সুনীল শীলের উপর লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলা চালিয়ে বয়োবৃদ্ধ মানুষটিকে গুরুতর জখম করে। বর্তমানে তিনি কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

ঘটনার অনুসন্ধানে জানা যায়, সুনীল শীল এলাকার একজন সজ্জন মানুষ। এলাকায় একজন ভালো মানুষ হিসেবে তাঁর সুপরিচিত রয়েছে। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কোথাও কোন জেলায় কোন অভিযোগ নেই। সমাজ সংস্কার, ভালো কাজের অংশীদার হয়ে তিনি এলাকার মানুষের পাশে থেকে কাজ করেন । কারো সাথে উনার বিরোধ নেই। কিন্তু গত ৮ মাস আগে প্রতিবেশী সবুজ শীল ও তার সহোদরদের সাথে জায়গা নিয়ে তার বিরোধ হয়।
বিরোধের জেরে বিভিন্ন সময় তারা সুনীল শীলের পরিবারকে হুমকি- ধমকি দিয়ে আসছিলো। এমনকি মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। সুনীল শীল গ্রামের সহজ সরল মানুষ। তিনি হুমকির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ না করে উনার মতো পরিবার নিয়ে জীবন পরিচালনা করে আসছিলেন।
এদিকে থেমে নেই সবুজ শীলের অবৈধ কুরুচিপুর্ণ কার্যক্রম। তাদের সাথে নাটের গুরু হিসেবে কু পরামর্শ প্রদান করেন সবুজের ভাই সেন্টু শীল। সেন্টু শীল কক্সবাজার জেলা পরিষদের পিয়ন। কিন্তু নিজেকে জেলা পরিষদের অঘোষিত চেয়ারম্যান হিসেবে এলাকায় ঘোষণা দেন। পিয়নের পদবী ব্যবহার করে শীল পাড়া এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেন। তার প্রশ্রয় পেয়ে তার ভাইয়েরা বেপরোয়া হয়ে উঠে সাধারণ মানুষের সাথে অন্যায় অত্যাচারসহ অমানবিক পাষবিক কার্যক্রম চালান।এটা তাদের প্রতিদিনের রুটিন কাজ । মূলত সেন্টুর ক্ষমতায় তারা এলাকায় বীরদর্পে বিচরণ করে। সেন্টু শীল এবং তার ভাইয়েরা বয়োবৃদ্ধ সুনীল শীলকে কোন কিছুতে ঘায়েল করতে না পেরে মিথ্যা ধর্ষনের কল্পকাহিনী সাজান। বয়োবৃদ্ধ মানুষটিকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মারাত্মক জখমের পাশাপাশি তাকে শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করেন। সামাজিক মর্যাদা নষ্ট করার লক্ষে ভিডিও ধারণ করে তা নেট দুনিয়ায় ভাইরাল করেন।

ভিডিওতে দেখা যায়,সবুজ শীলের নেতৃত্বে তার সহোদররা তাঁকে চারিদিকে ঘিরে রেখেছে। যদি তিনি সত্যি ধর্ষণ করে থাকেন তাহলে অন্য প্রতিবেশীরা কোথায়! ঘটনার সময় সবুজ শীলের সকল সহোদর সহ তার আত্নীয় স্বজনরা উপস্থিত ছিলো। ভিডিও থেকে বুঝা যায়,এটা একটি পূর্ব পরিকল্পিত অমানবিক ঘটনা। মূলত সেন্টু শীলের উপর প্রতিশোধ নিতে তাকে ফাঁসাতে এ ধরনের ঘৃণ্য অপরাধ সংঘটিত করা হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী প্রদীপ শীল বলেন, সুনীল শীল প্রতিদিনের মতো তার ভবনে কাজ করছিলেন। জায়গা জমির বিরোধের প্রতিশোধ নিতে প্রতিবন্ধী নিজেদের মেয়েকে দিয়ে নাটক সাজান সবুজ শীলের নেতৃত্বে তার সহোদররা।

তিনি স্পষ্ট শুনতে ও দেখতে পান, প্রতিবন্ধী মেয়ের বাবা অজিত শীল সবুজ শীলের মাকে বারবার ডাকতেছে গেইটে তালা মারা হয়েছে, আপনারা আসেন। যদি তিনি ধর্ষণ করতেন তাহলে গেইটে তালা মারছি আপনারা আসেন এ ধরনের কথা মেয়ের বাবা বলতো না। এ থেকে বুঝা যায় এটা একটা পূর্ব পরিকল্পিত মিথ্যা ভিত্তিহীন কাল্পনিক উদ্যেশ্যপ্রণোদিত ঘটনা। মূলত সেন্টু শীলকে দু্র্বল করার লক্ষে তারা এ ধরনের জঘন্যতম নাটক সাজান।
ভুক্তভোগী সুনীল শীল বলেন, জীবনের শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। মৃত্যুর আগে এ ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হতে হবে কল্পনা করি নি। আমাকে ধর্ষণকারী হিসেবে প্রমাণ করার জন্য নিজের মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়েকে দিয়ে তারা এমন নিচু কাজ করবে বিষয়টি চিন্তা করলে নিজের প্রতি ঘৃণা হয়। সেন্টুর নির্দেশে সবুজ শীলের নেতৃত্বে তারা আমার উপর হামলা চালিয়ে গুরুতর জখম করার পাশাপাশি আমার সামাজিক মর্যাদা নষ্ট করেছে।তাদের মতো আমারও ঔরসজাত সন্তান রয়েছে। তারা এমন ঘৃণ্যতম কাজ কিভাবে করতে পারলো!

তিনি আরো বলেন, ন্যায় বিচারের স্বার্থে আমি থানায় এজাহার দাখিল করেছি। ঘটনার সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।