বাউফল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জুলাই বিপ্লবে গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়ে জীবন্ত শহীদদের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান

শহীদ আহত পঙ্গু পরিবারের পাশে না দাঁড়াতে পারলে নতুন স্বাধীনতা অর্থবহ হবে না- ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ

প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০৯:৩২

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


সিবিএন ডেস্ক ;

বাউফল উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ আজ (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় বাউফল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জুলাই বিপ্লবে গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়ে জীবন্ত শহীদদের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, শহীদ আহত পঙ্গু পরিবারের পাশে না দাঁড়াতে পারলে নতুন স্বাধীনতা অর্থবহ হবে না। এই জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আমাদের বাউফলে ছয়জন ভাই শহীদ হয়েছেন। আমরা প্রত্যেক পরিবারের কাছে দুই লক্ষ করে টাকা ইতোমধ্যেই পৌঁছেয়েছি। আমরা সেসব পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের অহংকার শহীদদের পরিবারের সামান্য সদস্য হওয়ার চেষ্টা করেছি। এছাড়াও বাউফলে যারা আহত ও চিকিৎসাধীন রয়েছেন প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি আমি যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আমাদের সামর্থ্যরে মধ্য থেকে সকলকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। আজকে রাজনৈতিক দল গুলো দেশ সংস্কারের কথা ভুলে গিয়ে ভাগাভাগির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে, জাতির জন্য এটা লজ্জার, ধিক্কারের। আমরা এখনো পর্যন্ত ঠিকভাবে এসব শহীদ পরিবারের কাছেই দাঁড়াতে পারলাম না। আমরা আহত পঙ্গু ভাইদের পা এখনো ঠিক করতে পারলাম না। তাদের চোখের আলো ফেরাতে এখনো পারলাম না। আমরা একটা হাত আজ এসব জুলাই বিপ্লবে গুলিবিদ্ধ ও আহত জীবন্ত শহীদদের পাশে থাকবে সে কথা বলতে পারলাম না। অথচ তার আগেই আমরা কেউ কেউ হাত বাড়িয়ে দিয়েছি রাষ্ট্রে বিভিন্ন জায়গায়। সাবধান হোন, বিরত হোন! আগে আমাদের রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ সম্পন্ন হোক তারপর সকল বিষয় নিয়ে ভাববার সুযোগ আসবে।

বাউফল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জুলাই বিপ্লবে গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়ে জীবন্ত শহীদদের স্মৃতিচারণে আজ ২১ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে রাজধানীর পল্টনস্থ পুষ্পদাম রেস্টুরেন্টে এই আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। সাবেক ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাউফল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব আবুল কাসেম, সহকারী অ্যার্টনি জেনারেল মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন এবং বাউফল ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অ্যাডভোকেট ডক্টর আবুল কাসেম। জুলাই বিপ্লবে গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়ে জীবন্ত শহীদদের মাঝে যারা উপস্থিত ছিলেন মো. পাবেল, মো. শহিদুল ইসলাম, আরিফ হোসেন, মো. হাসান সরদার, মো. হৃদয়, আবু তাহের, রাকিব হোসেন, মো. শাহীন, কাওসার, মো. মেহেদী হাসান, মো. আবু তাহের, তাহসিন হোসেন, বেল্লাল হোসেন, আশিকুর রহমান হৃদয়, মো. তৌফিক এলাহী, মো. আবুল বাশার, পারভেজ হোসেন নাহিদ, আক্তার হোসেন, তানজিল হোসাইন, মো. নাসরুল্লাহ আযম, সুজন সিকদার, আব্দুল মালেক, আল মামুন, মো. রাকিবুল হাসান, আল আমিন প্রমুখ।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর জোরপূর্বক ক্ষমতা দখলকারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী গোষ্ঠী সরকারের ভ্রান্ত নীতির ফলে দেশের অর্থনীতিতে এবং জনজীবনে তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছিল। রাষ্ট্রের এমন দুরবস্থা করেছিল দেশপ্রেমিক জনগণ সেই আওয়ামীদের আর এ দেশে প্রবেশের সুযোগ দিবে না। তিনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামীদের বিদায় করা ও জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনায় জুলাই বিপ্লবের সকল যোদ্ধাকে অভিনন্দন জানান।

তিনি আরও বলেন, দেশের সকল মানুষের পাশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি অতীতে ছিল, বর্তমানেও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশাআল্লাহ। দোয়া চাই, আগামী দিনে যেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রশক্তিকে কাজে লাগিয়ে আপামর জনসাধারণের কল্যাণে সবসময় পাশে থাকতে পারি। আল্লাহ যেন এই জনগণের প্রত্যাশা কবুল করেন। বাউফল উপজেলার মানুষের কল্যাণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বাউফলের সকল মানুষের কল্যাণে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

আনুষ্ঠানে আগত সকল আহত ব্যক্তিরা আন্দোলনে তাদের অবিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন।
অনুষ্ঠান শেষে প্রত্যেক আহত ব্যক্তিকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।