নুরুল আলম সাঈদ, নাইক্ষ্যংছড়ি;

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের বান্দরবান পার্বত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ফুলতলী এলাকার সীমান্ত পিলার ৪৭ এবং ৪৮ নং মধ্যবর্তী স্থানের দক্ষিণ পূর্ব দিক মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে প্রায় ৯-১০টি গোলা গুলির বিকট শব্দ ভেসে আসে।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) ভোরে মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ফুলতলী এলাকার সীমান্ত পিলার ৪৭ এবং ৪৮ নং মধ্যবর্তী স্থানের দক্ষিণ পূর্ব দিক মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে প্রায় ৯-১০টি গোলা গুলির বিকট শব্দ ভেসে আসে।

উক্ত শব্দে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের সীমান্তের ফুলতলী,জারুলিয়াছড়ি,কম্বনিয়া,আশারতলীর লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।

সীমান্তের ফুলতলী বাসিন্দা নুরুল কাদের মুদির দোকানদার জানান, প্রস্রাব করার জন্য ঘরের বাইরে বের হলে তিনি নিজ কানে শুনেন গোলাগুলার শব্দ গুলো। ধারণা করা হচ্ছে উক্ত গোলাগুলির শব্দ মিয়ানমারের বিদ্রোহী আরকান আর্মি (এ)’র সেনা ক্যাম্প থেকে শব্দগুলো এসেছে। বতর্মানে নাইক্ষ‍্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের যতটুকু সীমান্ত এলাকা রয়েছে, ওই সব এলাকার অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন আরকান আর্মি(এএ)।

উল্লেখ্য যে, নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেরারমাঠের মোহাম্মদ ইউনুছ ও আলী আহমদ জানান, দীর্ঘ দেড় বছর ধরে চেরারমাঠে সীমান্ত পয়েন্টে বিদ্রোহীরা দখলে রয়েছে। এর আগে ছিল জান্তা সরকারের বিজিপির সশস্ত্র যোদ্ধারা।

গেল বছরের জুন মাসে গেরিলা হামলা চালিয়ে বিদ্রোহী আরকান আর্মি চেরারমাঠের বিপরীতে মিয়ানমার অভ্যন্তরে রাখাইনের পুরান মাইজ্জার ঘাঁটিটি দখলে নেয়। এভাবে সীমান্তের সব ঘাঁটি আরকান আর্মি দখলে নিয়েছে।
এরপর থেকে প্রায় সময় সন্ধ্যা নামলেই ২-১টি করে মিস ফায়ার করে জান্তা বাহিনী।

অপর একটি সূত্র দাবি করে, বাংলাদেশ সীমান্তের অংশে ঘাঁটিগুলো হারানোর পর জান্তা সরকার আবারও শক্তি সঞ্চয় করছে বিদ্রোহীদের হটিয়ে তাদের সীমান্ত পোস্টগুলো পুনরুদ্ধার করতে। সে পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জান্তা বাহিনী রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও মিয়ানমারে অবস্থান করা রোহিঙ্গা মুসলিম যুবকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে মাঠে নামানোর পরিকল্পনা আটছে। এ আতঙ্ক এখন বিদ্রোহী আরকান আর্মির মাঝে। তাই তারা ফায়ার করছে মাঝে মধ্যে।

জামছড়ি এলাকার মোহাম্মদ ছৈয়দুর রহমান জানান, সীমান্ত পিলার ৪৬/৪৭ এলাকা দিয়ে গত এক মাসের ভেতরে প্রায় সময় গোলাগুলি, স্থল মাইন বিস্ফোরণের শব্দ মিয়ানমার থেকে ভেসে আসে। এ সীমান্ত এলাকার এই পারের বতর্মান পরিস্থিতি একেবারেই শান্ত।

নাইক্ষ‍্যংছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি একেবারেই শান্ত। তবে নিজেদের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্যে মাঝে মধ্যে গুলি ছোড়ে আরকান আর্মি (এএ)

উল্লেখ্য, চলতি সময়ে নাইক্ষ‍্যংছড়ি উপজেলার আওতাধীন ঘুমধুমের ৩৪ পিলার থেকে দৌছড়ি ইউনিয়নের তাগু ছড়া ৫৫ নং পিলার পর্যন্ত আগের মতো মর্টারশেল, গোলাগুলির প্রকট আওয়াজ শোনা যায় না।

সূত্রে জানা যায়, বতর্মানে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকার মিয়ানমার অংশের প্রায় জায়গা সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
তবে হঠাৎ করে সীমান্তের ৪৪ পিলারের আশপাশের গোলাগুলির আওয়াজে লোকজন মনে করছে জান্তা বাহিনী আতঙ্কে বিদ্রোহী আরকান আর্মি এসব ফাঁকা গুলি ছুড়ছে পুরো সীমান্ত জুড়ে।