এইচ এম রুহুল কাদের,চকরিয়া:

চকরিয়া উপজেলার পহরচাঁদা মহিলা দাখিল মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, মাদ্রাসার অর্থ আত্মসাৎ, বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে কাগজে কলমে মাদ্রাসায় ২৮জন শিক্ষক-কর্মচারী দেখিয়ে আসলেও বাস্তবে তা অর্ধেকের কম। তার মধ্যে আবার অন্তত ১২ জন শিক্ষক ও কর্মচারি সুপারের নিকটতম আত্মীয় বলে জানা গেছে । এভাবে তিনি বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে ওই এলাকায় সুপারের বিরুদ্ধে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে। এতদিন নিজেকে সুপার দাবি করলেও সমালোচনার মুখে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ১২জনে নিয়ে আসছে। সেখানেও নিজেকে উদ্যোক্তা শিক্ষক দেখিয়েছেন।

স্থানীয় ও কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০০১ সালের পহেলা জানুয়ারি চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নে পহরচাঁদা মহিলা দাখিল মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই থেকে সুপারের দায়িত্ব পালন করে আসছে মাওলানা আবু সাঈদ আনসারী। যদিও তিনি পহরচাঁদা ফাজিল মাদ্রাসা থেকে বেতন-ভাতা ভোগ করতেন।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন বর্তমান সুপার আবু সাঈদ আনসারি। তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার পাশাপাশি দাতা সদস্যদের অমূল্যায়ন, পরিচালনা কমিটি গঠনে অবহেলা ও মাদ্রাসার আয় ব্যয়ে দূর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। মাদ্রাসাটি বছরের পর বছর অতিবাহিত হলেও আয়-ব্যয়ে কোনধরনের হিসেব নিকাশ নেই বললে চলে। তার একক ইচ্ছায় পরিচালিত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। তিনি শিক্ষক ও কর্মচারি নিয়োগে কোন নিয়মনীতি মানেননি। অভিযোগ উঠেছে সম্প্রতি সুপার আবু সাঈদ আনসারি নিয়োগ বাণিজ্য করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। মাদ্রাসার কোন ধরণের পরিচালনা কমিটি না থাকায় তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। সুপার আনসারি বিভিন্নজনের সনদ নিয়ে শিক্ষকদের একটি তালিকা জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে চকরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন। মাধ্যমিক অফিসের ওয়েবসাইটের হালনাগাদ তথ্যবিবরণিতে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারি সংক্রান্ত একটি তালিকায় ২৮ জনের মধ্যে সুপারের পরিবারের রয়েছেন ১২ জন সদস্য। সুপারের ইচ্ছায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে শিক্ষক ও কর্মচারী। যাদের তালিকায় দেখানো হচ্ছে সেখানে কারও জন্ম তারিখের ঠিক নেই।

এসব বিষয়ে সরেজমিনে গেলে সাংবাদিকদের কাছে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খোলে কিছু বলেনি । দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠাতা ও সুপার পরিচয় দিয়ে এসে হঠাৎ উদ্যোক্তা শিক্ষক পরিচয় দেয়ার কারণে জনমনে বিভিন্ন সমালোচনা চলছে। অনেকে বলছেন তিনি তাহলে এতদিন অবৈধভাবে সুপারের পরিচয় দিয়েছিলেন?

তিনি একটি ফাজিল মাদ্রাসার দায়িত্ব থেকে অন্য একটি মাদ্রাসার সুপার কিভাবে পরিচয় দিতেন? আবার বর্তমানে তিনি উদ্যোক্তা শিক্ষক কিভাবে পরিচয় দিচ্ছেন?।

এসব বিষয়ে জানার জন্য সরাসরি মাদ্রাসায় গিয়েও মাওলানা আবু সাঈদ আনসারীকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কল রিসিভ না করার কারণে বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।