আব্দুস সালাম, টেকনাফ;

কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড় কেন্দ্রিক সন্ত্রাসীরা মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণের দুইদিন পর বেলাল উদ্দিন (৩২) নামে এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।এসময় ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭অক্টোবর) বেলা সাড়ে১১টায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন।

উদ্ধার হওয়া বেলাল উদ্দিন বাহারছড়া ইউনিয়নের শীলখালী চৌকিদার পাড়া এলাকার আলী আহমদের ছেলে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গীখালী এলাকার মৃত ফকির মিস্ত্রির ছেলে আবচার উদ্দিন প্রকাশ রায়হান (৩৩) একই এলাকার মৃত আবুল হোছাইনের ছেলে জসিম উদ্দিন(৩৫) ও বাহারছড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শীলখালী এলাকার মৃত মকবুল আহমদের ছেলে আমীর আহমদ(৫৫)।

সংবাদ সম্মেলনে ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, বেলাল কক্সবাজার শহর থেকে নিজ গ্রামে সম্পত্তি দেখাশোনার কাজে আসলে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত সোমবার (১৪অক্টোবর) ভোর ৩টার দিকে ভিকটিমের নিজ বাড়ি থেকে বেলালকে অপহরণ করা হয়।এরপর থেকেই ৭০লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে আসছিলো অপহরণকারীরা। এর আগে ভিকটিমের চাচা আমীর আহমদ জায়গা সম্পত্তির বিরোধের জের ধরেই রোহিঙ্গা শফি নামের এক ডাকাতের সাথে গত তিন সপ্তাহ আগে আমীর আহমদ এর ভাতিজা ভিকটিম বেলালকে অপহরণ করার জন্য চুক্তি করে।অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার পর মুক্তিপণের টাকা আদায়ের জন্য বেলালের পরিবার থেকে তাদের মৌরসি জায়গা সমূহ অল্প মূল্যে তাহার চাচারা ক্রয় করে তাহার ভাতিজা ভিকটিম বেলালকে উদ্ধারের পরিকল্পনা সাজায়।অপহরণের অভিযোগ জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে শোনার পর থেকে তারই নেতৃত্বে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ এসআই মো. দস্তগীর হোসেনকে নিয়ে একটি চৌকস টিম বুধবার বিকালে বাহারছড়ার জাহাজপুরা পাহাড়ের ডালার ভিতর এক দুঃসাহসিক অভিযান চালায়।অভিযানের এক পর্যায়ে

আমরা ভিকটিম উদ্ধারসহ মুক্তিপণ নিতে আসা দুইজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।তাদের সাথে থাকা একটি ওয়ান শুটার গান,২ রাউন্ড কার্তুজ,একটি দা ও একটি কিরিচ উদ্ধার করা হয়।পরে ধৃতদের দেওয়া তথ্য মতে এই অপহরণের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ভিকটিমের চাচা আমির আহমদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এছাড়া অপরদিকে গত বুধবার সকালে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কম্বনিয়া পাড়ার পাহাড় সংলগ্ন কৃষিজমিতে কাজ করার সময় দুজনকে অপহরণ করা হয়।তারা বুধবার রাতে নিজ বাড়িতে ফেরত এসেছেন।

তিনি আরও বলেন,গ্রেফতার কৃত আসামিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলার রুজু করে কক্সবাজার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য,গত এক বছরে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৩৪ জনের অপহরণের ঘটনা ঘটেছে।এর মধ্যে ৮০জন স্থানীয় বাসিন্দা ও ৫৪জন রোহিঙ্গা নাগরিক।অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৬৭জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন বলে ভুক্তভোগীদের পরিবার সূত্রে জানা যায়।