রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তা ছাত্রসমাজই নির্ধারণ করবে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম।

সোমবার (২১ অক্টোবর) রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেন, রাষ্ট্রপতির মতো মানুষ যদি বলেন শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের ডকুমেন্টস তিনি রাখেননি, তাহলে তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তা ছাত্রসমাজই নির্ধারণ করবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস বলেন, গত ৫ আগস্টের পর ঐক্যবদ্ধ না থাকার কারণে যথাযথ প্রক্রিয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে পারিনি। সে অর্থে বিপ্লবী সরকার বা জাতীয় সরকার গঠন করতে পারিনি। যে কারণে চুপ্পুর মতো মানুষ এখনও প্রেসিডেন্টের মতো পদে বসে আছেন। তার মতো মানুষ, আজকে বলছেন শেখ হাসিনার রিজাইন পেপার নাকি তিনি দেখেননি। কোন সাহসে তিনি এ কথা বলতে পারেন?

‘শেখ হাসিনার রিজাইন পেপার যদি তিনি নিজের না দেখেন তাহলে তার বিরুদ্ধে কি করা দরকার, কি ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, তার জায়গা কোথায় হওয়া দরকার সেটা বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ নতুন করে নির্ধারণ করবে।’

তিনি আরও বলেন, যারা দেখেও অনেক কিছু না দেখার ভান করছেন তাদের আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, হাইকোর্ট, সচিবালয়সহ বিভিন্ন অফিস থেকে অনেকে অনেক কিছু নতুন করে চিন্তা করছিল। বাংলাদেশকে নাকি ব্লাকআউট করা হবে। আমরা বিশ্বাস করি ও স্পষ্ট করে বলি, আমাদের মধ্যে ছোট ছোট মনোমালিন্য বা বিভাজন থাকতে পারে কিন্তু আবার যদি পুরো দেশের স্বার্থ সামনে আসে তাহলে আমার যেসব ভাই হাসপাতালে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে, হাত হারিয়েছে, চোখের আলো হারিয়েছে তারা আবারও জীবন দিতে রাজপথে নামার জন্য প্রস্তুত আছে। সুতরাং হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম বা ঢাকার গুলিস্তান বলি, বিন্দুমাত্র কেউ যদি আজকের পর থেকে ওই খুনিদের পুনর্বাসনের জন্য চেষ্টা করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামবে।

সারজিস আলম বলেন, কিছু ব্যক্তিত্বহীন বিবেক বোধহীন মানুষ এখন গণতান্ত্রিক রাজনীতির কথা বলছেন। বিগত ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার যখন কেড়ে নেওয়া হয়েছিল তখন তাদের গণতান্ত্রিক রাজনীতির কথা কোথায় ছিল। বিগত তিনটি নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ কোনো ভোট দিতে পারেননি। যখন প্রত্যেকদিন বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে ধ্বংস করার ছক কষা হয়েছে, যখন বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের ভূমিমন্ত্রী নাকি কানাডায় ৩৬০টি কিনেছেন, তার শরীরের প্রত্যেকটি হাড়কে যদি প্রত্যেকটি বাড়িতে কবর হিসেবেও রাখা হয় তবুও তার মৃত্যুর পর ৩৬০টি বাড়ির প্রয়োজন নেই। এই যে জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে, যা পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণকেও ছাড়িয়ে যায়, তখন সেই ব্যক্তিত্বহীন মেরুদণ্ডহীন লোকগুলো কোথায় ছিলেন।

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট সিস্টেম এখনো সরেনি। বিভিন্ন এজেন্সি ও কুচক্রী মহল দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে। তাদের প্রতিহত করতে হবে। প্রয়োজনে আমরা আবার রাজপথে নামবো।