প্রেস বিজ্ঞপ্তি;
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, আওয়ামী লীগ গা ঢাকা দিয়ে দেশে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তারা একেকবার একেক রূপে আত্মপ্রকাশের চেষ্টা করছে। কখনো আনসার রূপে, কখনো রিকশা চালক রূপে, কখনো নিত্য পণ্যের সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দিয়ে তারা নতুন বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে ৫ আগস্ট আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। তরুণ প্রজন্ম নতুন বাংলাদেশকে নতুনভাবে সাজাতে চায়, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চায়, বৈষম্য দূর করতে চায়। এসব সম্ভব হবে কেবল শুধু মাত্র ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলেই। ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো মতবাদে একজন মুসলমান সমর্থন দিতে পারে না। আল্লাহর বিধান বাদ দিয়ে মানুষের তৈরি বিধানে গত ৫৩ বছর বাংলাদেশ পরিচালিত হয়েছে কিন্তু সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা হয়নি। কারণ ইসলাম ব্যতীত শান্তি আসবে না। সোমবার (২১ অক্টোবর) দিনব্যাপী চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের বিভিন্ন এলাকায় ও বাজারে গণসংযোগ শেষে স্থানীয় বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের কাছারি বাজারে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল আরো বলেন, ইসলামী রাষ্ট্রে একজন মুসলিম নাগরিকের যতটুকু অধিকার একজন অমুসলিম নাগরিকের সমান অধিকার। রাষ্ট্রের কাছে সকল নাগরিক সমান। কিন্তু ইসলাম বিদ্বেষীরা ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় নানা রকম অপপ্রচার চালিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ চেয়েছে কেয়ামত পর্যন্ত ক্ষমতায় ঠিকে থাকতে। আর এজন্য তারা একমাত্র জামায়াতে ইসলামীকে বাঁধা মনে করেছে। এজন্য তারা জামায়াত-শিবিরের উপর সর্বোচ্চ জুলুম নির্যাতন চালিয়েছে। কোথাও ২/৪ জন বসে একত্রে চা খেতে গেলে পুলিশ ধরে নিয়ে প্রচার করতো জামায়াত-শিবিরের গোপন বৈঠক থেকে আটক করা হয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে পরবর্তীতে অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে। জামায়াতের ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। ২০ হাজার মিথ্যা ও সাজানো মামলায় জামায়াত-শিবিরের লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের জুলুমের শিকার হয়ে জামায়াতে ইসলামী মজলুম সংগঠনে পরিণত হয়েছে। কিন্তু জামায়াতের কোনো নেতা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি। জামায়াতের নেতাকর্মী জনগণের পাশে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
তিনি আফসোস করে বলেন, অথচ শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে শুধু তার বোনকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। নিজ দলের, ছাত্রলীগ- যুব লীগের এসব নেতাকর্মীর কথাও হাসিনা চিন্তা করেনি। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর সেনাপ্রধান আমীরে জামায়াতকে আমন্ত্রণ জানিয়ে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র পরিচালনায় জামায়াতের পরামর্শ চাওয়া এবং আমীরে জামায়াত সহ রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে অটোমেটিক হাসিনা কর্তৃক জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার প্রজ্ঞাপন বাতিল হয়ে গেছে বরং জনগণ হাসিনা ও তার স্বৈরাচারী গোষ্ঠী আওয়ামী লীগকে চিরতরে বয়কট করেছে।
মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল উপস্থিত জনসাধারণের উদ্দেশ্যে বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপনাদেরকে এমন এমপি নির্বাচিত করতে হবে, যেই এমপি চুরি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, লুটপাট নিজে করে না এবং নিজ দলের নেতাকর্মীদের করতে দিবে না। যেই এমপি জনগণকে শাসন ও শোষণ করবে না। এমন নৈতিক আদর্শবান নেতৃত্ব রয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর। মনে রাখতে হবে আওয়ামী ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করে আরেক লুটেরার হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া যাবে না। যারা নিজস্ব মতবাদে দেশ পরিচালনা করে তারা প্রকৃত অর্থে মানুষকে শোষণ করে। আল্লাহর বিধানে দেশ পরিচালিত হলে মানুষ তার প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে না।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি প্রফেসর মমিনুল হকের সভাপতিত্বে বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন সেক্রেটারি মনিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত পথসভায় আরো বক্তব্য রাখেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আমীর মাওলানা আব্দুল আলিম, পৌর আমীর হাফেজ গোলাম রাব্বানী, ঢাকার হাজারীবাগ পশ্চিম থানা আমীর মাহফুজ আলম, সদর উপজেলা ওলামা বিভাগের দায়িত্বশীল একরামুল হক, সদর উপজেলা সহকারী সেক্রেটারি আব্দুর রহমান, বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড সেক্রেটারি কামাল উদ্দিন জাফরি প্রমুখ।
এর আগে বাজারে-বাজারে গণসংযোগ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সঙ্গে সদর উপজেলা, পৌর ও বিভিন্ন ইউনিয়নের জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি ব্যবসায়ীদের থেকে কেউ চাঁদা আদায় কিংবা দাবি করে কিনা খোঁজ খবর নিন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।