সিবিএন ডেস্ক;

কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলাধীন জলেয়ারমার ঘাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জনাব মুহাম্মদ তোয়াহার উদ্দিন কে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক বিগত ০১/০৮/২০২৪ ইং তারিখ বিধিবহির্ভূতভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্ত প্রক্রিয়াটি ১৯৭৯ সালের চাকরিবিধির ১৩(২), ১৪(১), ১৪(২) ধারা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, চট্টগ্রাম প্রবিধানমালা-২০২৪ এর ৫৩(২), ৫৩(৩), ৫৩(৪), ৫৩(৫), ৫৩(৬) ও ৫৩(৭ ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন কারণ আনীত অভিযোগ সমূহের বিষয়ে অভিযুক্তকে কোন কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়নি এবং এ বিষয়ে কোন তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়নি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব মোহাম্মদ কাইচার লিটন ও সভাপতি কর্তৃক সাময়িক বরখাস্তকৃত শিক্ষক জনাব মোহাম্মদ তোয়াহার উদ্দিন কে সাময়িক বরখাস্তকালীন কোন খোরপোষ ভাতা (সাবসিসটেন্স অ্যালাউন্স/জীবন ধারণ ভাতা) প্রদান করা হচ্ছে না মর্মে বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়। ১৯৭৯ সালের চাকরিবিধি অনুসারে, সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায় কোন শিক্ষক তার বেতনের অর্ধেক হারে জীবন ধারণ ভাতা (সাবসিসটেন্স অ্যালাউন্স) প্রাপ্য হওয়ার বিধান রয়েছে। তাছাড়া, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, চট্টগ্রাম প্রবিধানমালা এর ৫৪(৪) ধারা ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ এর ১৯ ধারায় উল্লেখ রয়েছে, “সাময়িক বরখাস্তকালীন সংশ্লিষ্ট শিক্ষক- কর্মচারী বেতন-ভাতার অর্ধেক হারে খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন।”

কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব মোহাম্মদ কাইচার লিটন ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উক্ত নির্দেশনা অমান্য করে বরখাস্তকালীন সহকারী শিক্ষক মুহাম্মদ তোয়াহার উদ্দিন কে কোন জীবন ধারণ ভাতা প্রদান করেননি এবং বর্তমানেও করছেন না। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক অধ্যাপক ড. বিপ্লব গাঙ্গুলি এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ভুক্তভোগী শিক্ষককে অবশ্যই খোরপোষ ভাতা প্রদান করতে হবে।” তাছাড়া সাময়িক বরখাস্ত সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের আপিল এন্ড আরব্রিটেশন কমিটির নিকট প্রতিকার প্রার্থী হওয়ার পরামর্শ দেন।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতি ও মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব মীকি মারমাকে ভুক্তভোগী শিক্ষককে সাবসিসটেন্স অ্যালাউন্স (জীবন ধারণ ভাতা/খোরপোষ ভাতা) বাবদ বেতন-ভাতার অর্ধেক হারে প্রদান না করার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, “ভুক্তভোগী শিক্ষক এ বিষয়ে আবেদন করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” এ বিষয়ে জলেয়ারমার ঘাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি জনাব ফরিদুল আলম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব মোহাম্মদ কাইচার লিটন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “মুহাম্মদ তোয়াহার উদ্দিন এর নিয়োগ ও নিবন্ধন সনদপত্র জাল ও ভুয়া প্রমাণিত হওয়ায় বেতন-ভাতার অর্ধেক হারে জীবন ধারণ ভাতা প্রদানের বিধান নেই মর্মে উল্লেখ করেন।” কিন্তু চাকরিবিধি, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড প্রবিধানমালা-২০২৪, জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ অনুসারে প্রধান শিক্ষকের বক্তব্যের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। তাছাড়া ভুক্তভোগী শিক্ষক তাঁর নিবন্ধন সনদপত্র বৈধ বলে দাবি করেন এবং এ প্রতিবেদককে তাঁর মূল নিবন্ধন সনদপত্র প্রদর্শন করেন।

প্রতিবেদক তা অনলাইনে যাচাইপূর্বক এর সত্যতা বিষয়ে নিশ্চিত হন। ভুক্তভোগী শিক্ষক আরো দাবি করেন যে, প্রধান শিক্ষক তাঁর নামে বিষয় পরিবর্তন করে রোল নং ঠিক রেখে তাঁকে ফাঁসানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী প্রতিকার প্রাপ্তির নিমিত্তে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেন। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক মুহাম্মদ তোয়াহার উদ্দিন বলেন,”প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ কাইচার লিটন কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে চাকরিবিধি, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের প্রবিধানমালা এবং জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা লঙ্ঘন করে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। তাছাড়া সাময়িক বরখাস্তকালীন খোরপোষ (জীবনধারণ ভাতা) ভাতা প্রদানের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তিনি যাবতীয় নীতিমালা ও বিধি বিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আমাকে কোন খোরপোষ ভাতা (জীবন ধারণ ভাতা) প্রদান করছেন না।”

কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য চাকরিবিধি, শিক্ষা বোর্ডের প্রবিধানমালা এবং জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুসরণ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ কোনো নীতিমালা অনুসরণ করেননি।