বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সিঙ্গাপুরকে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া বিলিয়ন ডলার পুনরুদ্ধার এবং বাংলাদেশের অভিবাসন ব্যয় কমানোর জন্য সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।

রোববার (১০ নভেম্বর) ঢাকায় সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার ডেরেক লোর সঙ্গে তেজগাঁও কার্যালয়ে এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে প্রচুর অর্থ পাচার করা হয়েছে এবং সিঙ্গাপুরের সহযোগিতা প্রয়োজন আমাদের।”

পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারের জন্য সিঙ্গাপুরের সাহায্য চান ইউনূস

অধ্যাপক ইউনূস সিঙ্গাপুরকে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের পুনরুদ্ধারের জন্য সহযোগিতা চেয়ে বলেন, “আমরা সিঙ্গাপুরের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে চাই যাতে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনা যায়।” সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার লো এই সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

অভিবাসন খরচ কমাতে মডেল কাঠামো তৈরি করার প্রস্তাব

অধ্যাপক ইউনূস সিঙ্গাপুরকে বাংলাদেশের অভিবাসন খরচ কমানোর জন্য একটি মডেল কাঠামো তৈরি করতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আমরা চাই যাতে প্রবাসীরা তাদের পরিবারের কাছে আরও বেশি অর্থ পাঠাতে পারেন, সেজন্য অভিবাসনের খরচ কমাতে সিঙ্গাপুরের সহায়তা প্রয়োজন।”

ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে মানব পাচার রোধের পরামর্শ

সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার ডেরেক লো বাংলাদেশকে বৈদেশিক নিয়োগ ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজ করার পরামর্শ দেন, যাতে মানব পাচার ও শ্রমিক শোষণের আশঙ্কা কমে যায়। তিনি বলেন, “ডিজিটালাইজেশন মানুষের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।”

বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুরের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা

বৈঠকে বাংলাদেশ এবং সিঙ্গাপুরের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা হয়। সিঙ্গাপুরের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র ডিরেক্টর ফ্রান্সিস চং জানান, ২০২১ সালে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুরের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির প্রস্তাব করেছিল এবং উভয় দেশ সেই চুক্তির সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করবে।

সিঙ্গাপুরের সহযোগিতা এবং সার্কে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির আহ্বান

অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তা ও পানিশোধনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি সিঙ্গাপুরের কাছে বাংলাদেশের জন্য ASEAN-এর সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনারের মর্যাদা নিশ্চিত করতে সহযোগিতা চান, যার প্রতি রাষ্ট্রদূত লো ইতিবাচক সাড়া দেন।

আন্তর্জাতিক সহযোগিতার পরিবেশে একযোগী উন্নয়নের আশ্বাস

অধ্যাপক ইউনূস জানান, “ঢাকা তার পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের মিত্রদের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে এবং আমাদের সকল অঞ্চলের মধ্যে সেতু নির্মাণ করতে হবে।”

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ এবং সিঙ্গাপুরের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স মাইকেল লি।