বার্তা পরিবেশক:

মেরিনা বিচ ভিলাস রিসোর্ট এন্ড স্পা লিঃ ব্যবসায়িক সুনাম ক্ষুন্ন করার অভিযোগে রামুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি ফৌজদারি দরখাস্ত দায়ের করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও মাউই রিসোর্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান হোসাইন জব্বার, তাঁর স্ত্রী মাউই রিসোর্ট লিমিটেডের পরিচালক সায়মা জব্বার ও মাউই রিসোর্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আখলাক আহমেদকে অভিযুক্ত করে গতকাল সোমবার এ দরখাস্ত দায়ের করেন মেরিনা বিচ ভিলাস রিসোর্ট এন্ড স্পা লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এডভোকেট আবু শোয়াইব। আদালত দরখাস্তটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদী এডভোকেট আবু শোয়াইব বলেন, ‘হোল্ডিং নং ৫৮৩ ব্যবহার করে জাল ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করে মাউই রিসোর্ট লিঃ ব্যবসা পরিচালনা করে মেরিনা বিচ ভিলাস রিসোর্ট এন্ড স্পা লিঃ ক্ষতি করেছেন এই ৩ জন। বর্তমানে হোসাইন জাব্বার আমেরিকা থেকে এসে মেরিনা বিচ ভিলাস রিসোর্ট এন্ড স্পা লিঃ এর অস্তিত্ব বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন।’

ফৌজদারি দরখাস্তে বলা হয়েছে, আবু শোয়াইব গত ২০১৪ সালের ১১ মার্চ ৪৪৮নং রেজিঃযুক্ত সাফ কবলা মূলে মেরিনা বিচ ভিলাস রির্সেটি এন্ড স্পা লিঃ কে ১ একর জমি বিক্রি করে সরেজমিনে দখল অর্পণ করেন। পরবর্তীতে সরকারী কর আদায়ের সুবিধার্থে নামজারী ও জমাভাগ মামলা নং-২১১১ (১)/১৩-১৪ ইং এর উপর সহকারী কমিশনার (ভূমি) রামু এর একই বছরের ১৭ এপ্রিলের আদেশ মতে মেরিনা বিচ ভিলাস রির্সেটি এন্ড স্পা লিঃ এর নামে সৃজিত বি,এস ৬৩৮ নং খতিয়ান সৃজন করেন। সে অনুসারে মেরিনা বিচ ভিলাস রির্সোট এন্ড স্পা লিঃ এবং বাদী মাটি ভরাট করে চারদিকে বাউন্ডারী ওয়াল, বিদ্যুৎ সংযোগ, কটেজ নির্মাণ, গভীর নলকূপ স্থাপনাসহ প্রয়োনীয় স্থাপনা নির্মাণ করে সরকারী ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে এবং হোটেলের নামাকরণে দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখলে থাকাবস্থায় মেরিনা বীচ ভিলাস রিসোর্ট এন্ড স্পা লিঃ এর পক্ষে আবু শোয়াইব (ব্যবস্থাপনা পরিচালক), হোসাইন জব্বার (চেয়ারম্যান) গত ২০১৮ সালের ১২ অক্টোবর সাইবার হোস্টিং এর পরিচালক আখলাক আহমদ এর সাথে এবং আখলাক আহমদ পুনঃরায় গত ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল বাদী আবু শোয়াইব এর সাথে ৩০০+৩০০ টাকার নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প মূলে চুক্তিবদ্ধ হন। বাদী আবু শোয়াইব মেরিনা বীচ ভিলাস রিসোর্ট এন্ড স্পা লিঃ এর পক্ষে এবং নিজের মালিকানাধীন জমি নিয়ে চুক্তি সম্পাদন করেন।

গত ২০১৮ সালের ১২ অক্টোবরের চুক্তি পত্রের ১নং শর্ত মতে চুক্তির মেয়াদ ৭ বছর, ৬(এ) নং শর্ত মতে ৫০% লভ্যাংশ মেরিনা বীচ ভিলাস রিসোর্ট এন্ড স্পা লিঃকে প্রদান করবেন, ৭নং শর্ত মতে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট বন্ধক, উপ-ভাড়া বিক্রি, কোম্পানী গঠন করতে পারবে না। আখলাক আহমেদ চুক্তি পত্রের ৭নং শর্ত ভঙ্গ করে হোসাইন জব্বার ও সায়মা জব্বারকে শেয়ার হোল্ডার অর্ন্তভুক্ত করে হোসাইন জব্বারকে চেয়ারম্যান পদে এবং সায়মা জব্বারকে পরিচালক পদে মাউই রিসোর্ট লিমিটেড নামকরণ করে। যার রেজিঃ নং C-166098, Date-25 Nov-20 গঠন করে। যা করার এখতিয়ার হোসাইন জব্বারের নেই। গত ২০১৯ সালের ১ এপ্রিলের চুক্তির শর্ত মতে আখলাক আহমেদ বিশ্বাস স্থাপন করে কয়েক মাস ভাড়া প্রদান করেন পরবর্তীতে বিশ্বাসভঙ্গ এবং প্রতারনা আশ্রয় গ্রহণ করে গত ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে আর ভাড়া দেননি।

বাদীর ফৌজদারি দরখাস্তে আরও বলা হয়, অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজসে বাদীর পরিচালিত হোল্ডিং নং ৫৮৩ ব্যবহার করে রামুর খুনিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের ক্রমিক নং ৯০৮, তারিখ-১২/০৭/২০২১ ইং, ট্রেড লাইসেন্স নং- ১৬৫/২১-২৫ ইং এবং প্রতিষ্ঠানের নাম ‘মাউই রিসোর্ট’ লিখে জালিয়াতির মাধ্যমে একটি ট্রেড লাইসেন্স সৃজন করেন। ওই ট্রেড লাইসেন্স এর মেয়াদ ৫ বছর লেখা হয়। অথচ ইউনিয়ন পরিষদ হতে মাত্র ১ বছরের জন্য ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করার ক্ষমতা রাখে। তারা সেই ট্রেড লাইসেন্স আসল ট্রেড লাইসেন্স হিসেবে বিভিন্ন দপ্তরে ব্যবহার করে ‘মাউই রিসোর্ট লিঃ’ এর ব্যবসা পরিচালনা করেন। যা করার এখতিয়ার তাদের নেই। ওই ট্রেড লাইসেন্স সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ইস্যু করা হয়নি, তার অস্থিত্ব ইউনিয়ন পরিষদে সংরক্ষিত বালামে নেই।
ফৌজদারি দরখাস্তে বলা হয়, আখলাক আহমেদ মেরিনা বীচ ভিলাস রিসোর্ট এন্ড স্পা লিঃ এর কর্তৃপক্ষকে বিশ্বাস স্থাপন করে চুক্তি সম্পাদন করে বাদীর সাথে সম্পাদিত চুক্তির শর্ত সমূহ যথাযথভাবে পালন না করে উল্টো জাল ট্রেড লাইসেন্স সৃজন করে এবং বাদীর সাথে সম্পাদিত চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে জাল ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করায় অপরাধ করেছেন। অভিযুক্তরা মাউই রিসোর্ট লিঃ ট্রেড লাইসেন্স ব্যতীত কিভাবে পরিচালনা করছেন এবিষয়ে জানানোর জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান নোটিশ ইস্যু করেন। ফলে তারা গত ২০২১ সালের ১২ জুলাই ৯০৮ নং ক্রমিকের ট্রেড লাইসেন্স নং ১৬৫/২১-২৫নং টি চেয়ারম্যান বরাবরে উপস্থাপন করেন। জাল ট্রেড লাইসেন্সটির বিষয়ে চেয়ারম্যান দলিল দস্তাবেজ পর্যালোচনা করে জানতে পারেন লাইসেন্সটি জাল জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজিত।

তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত পক্ষের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পরে তাদের বক্তব্য পাওয়া গেলে তা প্রকাশিত হবে।