চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত টানেলটি দেশের প্রথম বৃহৎ অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলোর একটি। তবে নির্মাণের এক বছর পেরিয়ে গেলেও দুই প্রান্তে থাকা অপূর্ণ কাজ এবং কম আয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আগ্রহ কমিয়ে দিচ্ছে।
টানেলের পতেঙ্গা প্রান্তে যান চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে ৬৪৮ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদিত হলেও এটি এখনো বাস্তবায়নাধীন। প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্বে থাকা সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস জানান, ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পটির কাজ চলবে।
টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে ৪.৮ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের ছয় লেনের মধ্যে দুই পাশের লেনের কাজ এখনো অসম্পূর্ণ। সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা জানান, ২০ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে, যা সম্পন্ন হলে যান চলাচলে গতি আসবে।
টানেলের দুই প্রান্তে ফায়ার স্টেশন নির্মাণ হলেও জনবল নিয়োগ না হওয়ায় তা কার্যকর হয়নি। চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক দিনমনি শর্মা জানান, বড় অগ্নিকাণ্ড হলে ফায়ার স্টেশন থেকে সাড়া দেওয়া হবে।
পতেঙ্গা প্রান্তে ফাঁড়িকে থানায় রূপান্তর করা হলেও আনোয়ারা প্রান্তে এখনো ফাঁড়ির মাধ্যমে কাজ চলছে। সিএমপির বন্দর জোনের ডিসি শাকিলা সোলতানা জানান, আনোয়ারা প্রান্তে থানার কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি।
সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রথম বছরে প্রতিদিন সাড়ে ১৮ হাজার গাড়ি চলার কথা থাকলেও বাস্তবে চলছে মাত্র ৪ হাজার। এতে টোল থেকে প্রতিদিন আয় হচ্ছে ১০ লাখ ৩৭ হাজার টাকা, যা রক্ষণাবেক্ষণ খরচ ৩৭ লাখ টাকার চেয়ে অনেক কম।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালীর মূল সড়ক চার লেন করলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার দূরত্ব ৫৫ কিলোমিটার কমে যেত। সুশাসনের জন্য নাগরিক চট্টগ্রামের সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী বলেন, পরিপাটি পরিকল্পনা ও অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন করায় তা আশানুরূপ ফল দিচ্ছে না।
সম্ভাবনার কর্ণফুলী টানেল বর্তমানে অপূর্ণতার দায়ে ভুগছে। সময়মতো সড়ক সম্প্রসারণসহ প্রয়োজনীয় উন্নয়ন কার্যক্রম না হলে প্রকল্পটি দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা পূরণে ব্যর্থ হতে পারে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।