নিজস্ব প্রতিবেদক:
অবৈধ পন্থায় শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ, ভুয়া বিল ভাউচার তৈরীর মাধ্যমে প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমদসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ মুন্সি আব্দুল মজিদের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ট্রাস্টি বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান লায়ন মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান।
মামলাটি আমালে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
রবিবার (১ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী সাহাব উদ্দীন সাহীব।
সালাহউদ্দিন আহমদ ছাড়াও মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, সালাহউদ্দিন আহমদের স্ত্রী ও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য
আয়েশা সালাহউদ্দিন, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা এ.কে.এম গিয়াস উদ্দীন, উপাচার্য (প্রাক্তন) গোলাম কিবরিয়া ভুঁইয়া ও প্রাক্তন সহকারী পরিচালক (অর্থ) মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম চৌধুরী।
বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যানেল আইনজীবী সাহাব উদ্দীন সাহীব ও রাশেদুল ইসলাম মুন্না।
মামলার বাদী লায়ন মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান বলেন, ২০১৩ সালের ১২ জুন আমার আবেদনের প্রেক্ষিতে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অনুমোদন দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। পরবর্তীতে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ এর অধীনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনসহ সব দপ্তর আমাকে “প্রতিষ্ঠাতা” উল্লেখ সূচিপত্র ইস্যু করে।
মুজিবুর রহমান বলেন, দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক এবং কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে দীর্ঘ ৭ বছর ধরে সুনামের সাথে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলাম। ইতোমধ্যে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের অবৈধ ক্ষমতা ব্যবহার করে ২০২০ সালের ২ জুন সশস্ত্র সন্ত্রাসী দিয়ে ইউনিভার্সিটি জবরদখল ও নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় আওয়ামী লীগ নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ বোর্ড অব ট্রাস্টিদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কমিটিতে পরিণত করে। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক, কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়। প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা উত্তোলনসহ নানা ধরণের দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ করে।
সালাহউদ্দিন সিআইপির একক নিয়ন্ত্রণে গঠিত অবৈধ বোর্ড অব ট্রাস্টিজ কোন ধরনের বোর্ড সভা না করে কর্মকর্তা, কর্মচারীদের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে যোগাযোগক্রমে নাম দস্তখত নিয়ে বোর্ড সভা দেখায়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০, অধীনে নিয়োগ বিধি মোতাবেক শূণ্যপদের জন্য নিয়োগ কমিটি গঠন করেন নি। বহুল প্রচারিত দৈনিক পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ গাড়ীর ড্রাইভার, পিয়ন নিয়োগ দেয়। একক নিয়ন্ত্রণে ব্যক্তিগত ড্রাইভার ও পিয়ন, ব্যক্তিগত সহকারীদের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্জিত ট্রাস্টের আয় হইতে ইচ্ছা মাফিক, ভুয়া বিল ভাউচার, বেতন উত্তোলন করে পরস্পর যোগসাজসক্রমে লুটপাটের মাধ্যমে ট্রাস্ট্রিজ এর বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন সালাহউদ্দিন। তিনি নিজের বাসা বাড়ির কর্মচারীর বেতন, এমন কি সফর বিনোদনের বিলও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়েছেন। নামে বেনামে অনেক টাকা উত্তোলন করেছেন। পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে যার চিত্র প্রকাশ হয়েছে।
বাদী পক্ষের আইনজীবী সাহাব উদ্দীন সাহীব বলেন, সালাহউদ্দিন গং কোন ধরণের নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করেন। ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে ২ কোটি ৪৮ লক্ষ ৪৬ হাজার ৪০১ টাকা আত্মসাতের তথ্য পাওয়া গেছে। অডিট ফার্মের রিপোর্ট ও সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আদালতে মামলা করা হয়েছে। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়েছেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।