আব্দুস সালাম, টেকনাফ;

মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে যাত্রীবাহী ট্রলার, স্পিডবোট এবং মাছ ধরার ট্রলার চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) টেকনাফ উপজেলা প্রশাসন এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে মাইকিংয়ের মাধ্যমে তা জানানো হয়। এ নিষেধাজ্ঞার ফলে সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারা খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকটে পড়েছেন বলে দাবি করেছেন।

দ্বীপবাসীর অভিযোগ, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় তারা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এ সংকট দ্রুত সমাধান না হলে পরিস্থিতি আরও সংকটাপন্ন হবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথের বোট মালিক সমিতির সভাপতি রশিদ আহমদ বলেন, “মিয়ানমারের সংঘাতের কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে সব ধরনের নৌযান বন্ধ রাখতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা সেই নির্দেশনা মেনে নৌযান চলাচল বন্ধ রেখেছি। এখন পর্যটন মৌসুম চলছে। প্রতিদিন সেন্টমার্টিনে সরকার নির্ধারিত দুই হাজার পর্যটক যান। এছাড়া, দ্বীপের ১০ হাজার বাসিন্দার খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য টেকনাফ থেকে সরবরাহ করা হয়। যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম নৌপথ। নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় দ্বীপে খাদ্য সংকট দ্রুত প্রকট হবে।”

সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা জিয়াউল হক জিয়া বলেন, “টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। দ্বীপের বাসিন্দারা খাদ্য সংকটের দিকে যাচ্ছে। আমরা প্রশাসনের কাছে বিকল্প পথে খাদ্য ও নিত্যপণ্য পরিবহনের সুযোগ করে দেওয়ার অনুরোধ জানাই।”

সেন্টমার্টিন হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম জিহাদী বলেন, “সেন্টমার্টিনে ১০ হাজারের বেশি বাসিন্দা বসবাস করেন। এছাড়া, প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার পর্যটক দ্বীপে আসেন। দ্বীপের সব ধরনের খাদ্য ও নিত্যপণ্য টেকনাফ থেকে আসে। কিন্তু মিয়ানমারের সংঘাতের কারণে টেকনাফের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা এই সমস্যার দ্রুত সমাধানে প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।”

এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দীন বলেন, “মিয়ানমারের রাখাইন এলাকা আরাকান আর্মি দখল করায় সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি বেড়েছে। তাই টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে যাত্রীবাহী ট্রলার, স্পিডবোট এবং মাছ ধরার ট্রলার চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বিকল্প পথে খাদ্য ও নিত্যপণ্য পরিবহনের ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।”