মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ভারতকে “অসহযোগিতাকারী দেশ” হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এই ঘোষণা দেশ দুটির মধ্যকার কৌশলগত অংশীদারিত্বে নতুন প্রশ্ন তুলেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য ও নিরাপত্তা নীতির নির্দিষ্ট দিকগুলিতে ভারতের ‘অসহযোগিতার’ কথা উল্লেখ করে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হলো:

রাশিয়ার কাছ থেকে ভারত S-400 ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনেছে। যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছে এবং সতর্ক করেছিল যে এটি CAATSA (Countering America’s Adversaries Through Sanctions Act) আইনের আওতায় নিষেধাজ্ঞার কারণ হতে পারে।
আন্তর্জাতিক সহযোগিতার অভাব

ভারত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চুক্তি, যেমন নন-প্রোলিফারেশন ট্রিটি (NPT) ও বাণিজ্য বিষয়ক কিছু মার্কিন উদ্যোগে প্রত্যাশিত মাত্রায় সহযোগিতা করেনি।

ভারত এবং চীনের মধ্যে সীমান্ত সংঘাত থাকা সত্ত্বেও কিছু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে চীনের সাথে ভারতের সম্পর্ক এবং অবস্থান মার্কিন নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে মনে করছে ওয়াশিংটন।

এই পদক্ষেপ ভারত-মার্কিন কৌশলগত সম্পর্ককে কীভাবে প্রভাবিত করবে, তা নিয়ে কূটনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার এই সিদ্ধান্তকে ‘অন্যায্য’ বলে উল্লেখ করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার ইঙ্গিত দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এই পদক্ষেপ ভারতকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে তার ভূমিকা নিয়ে আত্মবিশ্লেষণ করতে বাধ্য করবে।

ভারতের এই তালিকাভুক্তি আন্তর্জাতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

রাশিয়া বলেছে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক পদক্ষেপ যা ভারতের সার্বভৌম সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করার শামিল।

চীন এই পদক্ষেপকে তাদের কৌশলগত স্বার্থের পক্ষে ইতিবাচক মনে করছে।

ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হলেও এই পদক্ষেপ একে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। উভয় পক্ষেরই এই ইস্যুতে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্ত ভারত-মার্কিন বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে।