প্রেস বিজ্ঞপ্তি
আজ কক্সবাজারের কৃতি সন্তান সাবেক পূর্ব পাকিস্তান আইন পরিষদ সদস্য ও বিশিষ্ট ইসলামী ব্যক্তিত্ব ও আইনজীবী আলহাজ্ব এড. ফিরোজ আহমদ চৌধুরীর ২২তম ইন্তেকাল বার্ষিকী। আজ থেকে ২২ বছর আগে এই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেছেন।
এড. ফিরোজ আহমদ চৌধুরী ১৯২২ ইংরেজি সালের ২রা ফেব্রুয়ারী কক্সবাজার জেলার প্রখ্যাত জমিদার পরিবার পেকুয়ার গুরামিয়া চৌধুরীর ঔরসে জন্মগ্রহণ করেন। ৮১ বছর বয়সে ২০০২ সালের ২২ ডিসেম্বর কক্সবাজার শহরের লালদিবীর পাড়াস্থ হোটেল প্যানোয়া সংলগ্ন
নিজের বাস ভবন ‘বায়তুল আমান-এ তিনি ইন্তেকাল করেন।
এড. ফিরোজ আহমদ চৌধুরীর বর্ণাঢ্য জীবন নতুন প্রজন্যের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। তিনি পেকুয়ার জিএমসি ইনস্টিটিউট থেকে ১৯৪২ সালে প্রবেশিকা চট্টগ্রাম কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট, কলকাতা সেন্ট জেভিয়াস থেকে বিএ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেক এম.এ. এবং ১৯৫২ সালে মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থানসহ ঢাকা বিশ্ববদ্যিালয় থেকে এলএলবি পাশ করেন।
ছাত্র জীবন শেষ করে মাত্র অল্প সময়ের মধ্যে তিনি ১৯৫৪ সালে (২১ মার্চ) শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হক’র কৃষক প্রজা পার্টি হতে যুক্ত ফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। কর্মজীবনে চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কক্সবাজার আইন কলেজ ও কক্সবাজার সরকারী কলেজ প্রতিষ্ঠায় তাঁর ভূমিকা ছিল অনন্য।
তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন কক্সবাজার সদরে অবস্থিত ফিরোজ আহমদ চৌধুরী ইসলামিক সেন্টারের অধীন উমিদিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা, এতিমখানা, হেফজখানা, ইসলামী পাঠাগার ও জামে মসজিদ। উক্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য তিনি কক্সবাজার পৌরসভা সংলগ্ন ৩ একর জায়গাও ওয়াক্ফ করেন। এছাড়াও তিনি নিজের এলাকায় অসংখ্য মসজিদ, মাদরাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছেন।
তাঁর ইন্তেকালের পর মরহুমের কনিষ্ঠ পুত্র আলহাজ্ব আলী হাচ্ছান চৌধুরী ‘এড. ফিরোজ আহমদ ফাউন্ডেশন’ গঠন করে মরহুমের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ আলহাজ্ব আলী হাসান চৌধুরীর তত্বাবধানে এপর্যন্ত ১৪ টি মসজিদ এবং মাদরাসা, প্রাইমারী স্কুল ও এতিম খানাসহ প্রায় অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে এবং পরিচালিত হচ্ছে।
এড. ফিরোজ আহমদ চৌধুরী তাঁর জীবদ্দশায় অনেক সাহিত্য রচনা করে গেছেন। এর কিছু প্রকাশিত হয়েছে এবং আরো অনেক রচনা এখনো প্রকাশিত হয়নি। এগুলো প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।
এ পর্যন্ত তাঁর লেখা ৬টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে এবং এগুলোর প্রত্যেকটি বহুল প্রচারিত হয়েছে। কাবা শরীফের ইতিহাস’ নামে তার একটি বই ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে ১৯৮৫ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। এটি এত বেশি প্রচারিত হয়েছে ইতোমধ্যে তার বেশ কটি সংস্করণ প্রকাশ পেয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশ করে ২০১৩ সালে। এড. ফিরোজ আহমদ চৌধুরী ফাউন্ডেশন বইটি সর্বশেষ সংস্করণ প্রকাশ করে ডিসেম্বর ২০১৯ সালে।
তাঁর অন্যান্য পাঠক প্রিয় বই গুলো হচ্ছে ‘মদীনা শরীফের ইতিহাস, আদিতে মক্কাবাসী, মসজিদে নববী ও রওজা মুবারকের ইতিহাস। এছাড়াও তাঁর বিভিন্ন প্রবন্ধ-নিবন্ধ নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে প্রবন্ধ সংকলন’ নামে একটি বই। তাঁর ইন্তেকালের পর ২০০৩ সালে বিদগ্ধ জনের সমৃদ্ধ লেখা নিয়ে এড. ফিরোজ আহমদ চৌধুরীর বর্ণাঢ্য জীবনীর উপর প্রকাশিত হয়েছে ‘এড. ফিরোজ আহমদ চৌধুরী স্বারক গ্রন্থ’ । উপমহাদেশের বিখ্যাত অনেক ইসলামী ব্যক্তিত্ব ও রাজনৈতিক নেতারা ছিলেন তাঁর সহপার্টি ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এর মধ্যে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও খতীবে আজম আল্লামা ছিদ্দিক আহমদ অন্যতম। ছাত্র জীবনে কলকাতা পড়ালেখার সময় বঙ্গবন্ধু ছিলেন তাঁর একনিষ্ঠ বন্ধু। ১৯৫৪ সালে তিনজনই একসাথে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান আইন পরিষদের সদস্য ছিলেন।
প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও তাঁর ইন্তেকাল বার্ষিকীতে আয়োজন করা হয়েছে পেকুয়ায় আশরাফুল উলুম মাদরাসাসহ, বিভিন্ন মসজিদে দোয়া মাহফিল ও খতমে কুরআন। কক্সবাজার শহরে আয়োজন করা হয়েছে জামেয়া ওমেদিয়ায় খতমে কুরআন ও দোয়া মাহফিল এবং বাদ মাগরিব লালদীঘির পাড় বায়তুর রাহমান জামে মসজিদে মরহুমের স্মরণে দোয়া মাহফিল।এসকল কর্মসূচীতে মরহুমের স্বজনদের অংশ গ্রহণ করার আহবান জানিয়েছেন মরহুমের কনিষ্ঠ পুত্র ‘এড. ফিরোজ আহমদ চৌধুরী ফাউন্ডেশনের’ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আলী হাসান চৌধুরী।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।