প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
কক্সবাজার থেকে ইতিহাসের প্রথম পূর্ণমন্ত্রী, কক্সবাজারের কৃতিসন্তান মরহুম মৌলভী ফরিদ আহমদের ৫৩তম শাহাদত বার্ষিকী আজ।

আজ থেকে ৫৩ বছর আগে স্বাধীনতার ঊষালগ্নে এই ক্ষণজন্মা কৃতিপুরুষকে সন্ত্রাসীরা গুম করে নির্মমভাবে হত্যা করে। গত ৫৩ বছরেও শহীদ মৌলভী ফরিদ আহমদের কবরের সন্ধান পাননি তার স্বজনরা।

অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে গেলেও কক্সবাজারবাসী আজও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে তাদের জনপ্রিয় নেতা মৌলভী ফরিদ আহমদকে। তার শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে বরাবরের মতো খতমে কুরআন, এতিমখানায় খাবার বিতরণ এবং দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে রামু ও কক্সবাজারের বিভিন্ন মসজিদে।

ধলিরছরা আশরাফুল উলুম মাদরাসা মসজিদ, মাছুয়াখালী উত্তরপাড়া জামে মসজিদ, কাহাতিয়া পাড়া জামে মসজিদ, ছিদ্দিক জামে মসজিদ, নতুন বাজার জামে মসজিদ, ভারুয়াখালী জামে মসজিদ, খুরুস্কুল গাজির ডেইল জামে মসজিদ, মাছুয়াখালী ছরাপাড়া জামে মসজিদ এবং ঈদগাঁও রশীদ আহমদ কলেজ জামে মসজিদসহ বিভিন্ন স্থানে তার জন্য দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এসব মসজিদে মুসল্লিরা হৃদয় থেকে তাদের প্রিয় নেতা শহীদ মৌলভী ফরিদ আহমদকে স্মরণ করেন।

ব্যক্তিজীবন ও রাজনৈতিক অবদান
মৌলভী ফরিদ আহমদ ছিলেন কক্সবাজারের দুই বিশিষ্ট সংসদ সদস্য, মরহুম এডভোকেট মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান এবং সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ সহিদুজ্জামানের গর্বিত পিতা।

তিনি ৩ জানুয়ারি ১৯২৩ সালে কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার রশিদনগর ইউনিয়নের মাছুয়াখালী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ১৯৪৬-৪৭ সেশনের ভিপি ছিলেন।

মৌলভী ফরিদ আহমদ পেশাগত জীবনে কক্সবাজার বার অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি, কক্সবাজার জামে মসজিদের সেক্রেটারি এবং কক্সবাজার ক্রীড়া সমিতির সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবেও সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি দীর্ঘদিন ঢাকা বার কাউন্সিলের সহ-সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন।

ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে কলেজের অধ্যাপনা এবং পরবর্তীতে আইন পেশায় যুক্ত হয়ে জাতীয় রাজনীতিতেও সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।

রাজনৈতিক জীবন
১৯৫২ সালে তিনি তৎকালীন নেজামে ইসলাম পার্টিতে যোগ দেন এবং দ্রুত দলটির কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সালে তিনি যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে এমএলএ, ১৯৫৫ সালে এমসিএ (এমএনএ), এবং তৎকালীন যুক্তফ্রন্টের পার্লামেন্টারি পার্টির চিফ হুইপ নির্বাচিত হন।

১৯৫৭ সালে তিনি মুসলিম লীগ সরকারের মন্ত্রিসভার শ্রমমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

মৌলভী ফরিদ আহমদ ছিলেন এক বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী। তার কর্মজীবন এবং আত্মত্যাগ কক্সবাজারসহ সারা দেশের মানুষের হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।