নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সংলগ্ন দারুল কুরআন কমপ্লেক্সের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ক্বারী মুহাম্মদ জহিরুল হককে বাদ দিয়ে আগামী ৩০ জানুয়ারী বার্ষিক সভা আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে ১৬ জানুয়ারি প্রস্তুতি সভার ঘোষণা এসেছে। যদিওবা
মাদরাসার পরিচালনাকারী সংস্থা তানযীমুল কুররা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ওই সভা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, মাদরাসার শিক্ষা কার্যক্রমের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র করছেন বহিষ্কৃত শিক্ষক ক্বারী আজিজুর রহমান। ইতোমধ্যে তিনি একজন শিক্ষককে মারধরপূর্বক মাদরাসা থেকে বের করে দিয়েছেন। স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতিকারী লোকের সঙ্গে মিলেমিশে এসব অপকর্ম করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ক্বারী মুহাম্মদ জহিরুল হক।
গত ১৩ জানুয়ারি জেলা প্রশাসকের নিকট দাখিলকৃত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০৬ সালের ২০ অক্টোবর দারুল কুআন কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই সময় এলাকার ৪১টি পরিবারের স্বাক্ষরে রেজুলেশনের মাধ্যমে মাওলানা ক্বারী আব্দুল গণীকে প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং ক্বারী মুহাম্মদ জহিরুল হককে প্রধান পরিচালক নিযুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে বেফাকুল মাদারিসীল আরবিয়্যাহ বাংলাদেশের অধীনে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে। দেশের খ্যাতনামা আলেমদের সঙ্গে এই মাদরাসার সম্পর্ক রয়েছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে,
এলাকার কিছু ষড়যন্ত্রকারী অসাধু ব্যক্তির সহযোগিতায় বহিষ্কৃত শিক্ষক ক্বারী আজিজুর রহমান, রোহিঙ্গা নাগরিক হাফেজ সৈয়দ হোসাইনসহ কিছু দুষ্কৃতিকারী ব্যক্তি ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নানামুখী চক্রান্ত শুরু করেছে। ক্বারী মুহাম্মদ জহিরুল হক প্রতিষ্ঠান প্রধান হয়েও তাকে অস্বীকারসহ তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত প্রধান শিক্ষক মাওলানা মুহিবুল্লাহ ও সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা ফোরকান উদ্দিনকে মাদরাসায় প্রবেশে বাধা, হুমকী-ধমকী প্রদান ও গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়।
শুধু তাই নয়, মাদরাসার ছাত্র মোহাম্মদ নোমান (পিতা- মাওলানা সুলাতান আহমদ) ও মোহাম্মদ মাসউদ (পিতা-মাওলানা আমান উল্লাহ) মোহাম্মদ আবিদ (পিতা-মুঈনুদ্দীন) কেও অন্যায়ভাবে মারধর করে মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। এমনকি ক্লাস রুমে তালা লাগিয়ে শিক্ষকদের ক্লাস বর্জনসহ বেআইনীভাবে চলমান শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করার লক্ষ্যে নানা ধরণের অপরাধ ও অনধিকার চর্চা চালিয়ে যাচ্ছে।
তানযীমুল কুররা বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাওলানা হাফেজ আবু হানিফ ও সাধারণ সম্পাদক ক্বারী সাইফুল্লাহ আনোয়ারী জানান, বহিষ্কৃত শিক্ষক ক্বারী আজিজুর রহমান, মিয়ানমারের নাগরিক হাফেজ সৈয়দ হোসাইন, ক্বারী আব্দুল হালিম ও ক্বারী যুবাইর ভুয়া কমিটি দেখিয়ে ৩০ জানুয়ারী মাদরাসার সভা আয়োজন করতে যাচ্ছে। যা সম্পূর্ণ অবৈধ। গায়ের জোরে সভা অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নেওয়া হলে তাদের প্রতিরোধ করা হবে। সেই সঙ্গে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
মাদরাসার সভার নামে কোন চাঁদা তুললে তাদেরকে সহযোগিতা না করার অনুরোধ জানিয়েছেন তানযীমুল কুররার কেন্দ্রীয় কমিটি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ক্বারী আজিজুর রহমানের বক্তব্য জানতে চাইলে বলেন, কোন শিক্ষককে মারধর করা হয় নি। তিনি ক্লাসে অনুপস্থিত থাকায় বিদায় দেওয়া হয়েছে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অর্থ আত্মসাৎ ও মাদরাসার পরিচালকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সংবিধান মতে শিক্ষক আজিজুর রহমানকে ২০২৪ সালের ২০ মে বহিষ্কার করেন দারুল কুরআন কমপ্লেক্সের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মাওলানা ক্বারী জহিরুল হক।
তাছাড়া ক্বারী আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের মারধরের অভিযোগে মামলা রয়েছে। যার সিআর মামলা নং-৫৭০/২৪ (সদর)। মামলা তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন বলে আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।
এরপরও একজন বহিষ্কৃত শিক্ষক কেমনে মাদরাসা দখল করে আছেন, প্রশ্ন এলাকাবাসীর।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।