ক্ষমতাচ্যুত একনায়ক শেখ হাসিনা নিজেই গুম ও হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন, এমন তথ্য উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)-এর এক প্রতিবেদনে।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) এইচআরডব্লিউর এশিয়া পরিচালক ইলেইন পিয়ারসনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। তারা জুলাই বিপ্লব নিয়ে সংস্থাটির একটি প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন।

এইচআরডব্লিউর এশিয়া প্রধান ইলেইন পিয়ারসন বলেন, “২০০৯-২০২৪ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার শাসনামলে নিরাপত্তা বাহিনী রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত ছিল এবং তারা দলীয় ক্যাডারের মতো আচরণ করেছে। এর পদ্ধতিগত সংস্কার প্রয়োজন।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ এখন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানবাধিকারের গুরুত্ব বুঝতে পারছে।”

এইচআরডব্লিউ তাদের প্রতিবেদনে র‍্যাব ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করেছে এবং বলেছে, জোরপূর্বক গুম ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত কর্মকর্তাদের বিচার করতে হবে।

ড. ইউনূস বলেন, “গত ১৬ বছরে এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনগুলোতে শাসকগোষ্ঠীর ব্যাপক অপরাধের চিত্র উঠে এসেছে। র‍্যাব প্রকাশ্যে তাদের অপরাধের জন্য ক্ষমা চেয়েছে, কিন্তু জোরপূর্বক গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “১৫ বছরের নিপীড়ন ও অপরাধ পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা একটি চ্যালেঞ্জিং প্রচেষ্টা।”

এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা ও সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা গুমের বিষয়ে জানতেন এবং কিছু ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা নিজেই গুম ও হত্যার নির্দেশ দিতেন।

এইচআরডব্লিউর প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছে।

প্রধান উপদেষ্টা রাখাইনে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য একটি নিরাপদ অঞ্চল তৈরির আহ্বান জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, “জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আরাকান আর্মি এই নিরাপদ অঞ্চলের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে।”