আবুল কালাম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর থানা এলাকার কলসী দিঘীরপাড় ওয়াসিম চৌধুরী পাড়ায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস করছিলেন টুম্পা আক্তার ও ইব্রাহিম হাওলাদার। পারিবারিক কলহের জেরে ঘুমন্ত অবস্থায় গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় টুম্পাকে। এরপর পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ ইব্রাহিমকে আটক করে।

গত ২৬ মার্চ রাতে পেলাগাজীর বাড়ি, আলী সওদাগরের বিল্ডিংয়ের নিচতলার ৩ নম্বর কক্ষ থেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় টুম্পা আক্তার (২২)-এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতের বাবার নাম লিয়াকত আলী, বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানার কালামুরিয়ায়।

শনিবার (২৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১টায় দামপাড়া পুলিশ লাইনসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) বন্দর-পশ্চিম উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান জানান, ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী এক দোকানের ক্যাশমেমোতে পাওয়া একটি মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে তদন্ত এগিয়ে নেয় পুলিশ।

পুলিশ জানায়, টুম্পার আগের সংসারে মাহিম নামে চার বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। গত দুই বছর ধরে চট্টগ্রামের সিইপিজেডের প্যাসিফিক জিন্স কারখানায় কর্মরত থাকার সুবাদে কলসীদিঘী এলাকায় ভাড়া বাসায় ইব্রাহিম হাওলাদারের সঙ্গে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে থাকতেন তিনি। তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো।

ঘটনার রাতে টুম্পাকে হত্যার পর ইব্রাহিম বাসার দরজায় তালা লাগিয়ে বাইরে থেকে বন্ধ করে দেন। এরপর টুম্পার ছেলেকে পার্শ্ববর্তী একটি বাসার সামনে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় বন্দর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

গোয়েন্দা পুলিশ জানতে পারে, সন্দেহভাজন ব্যক্তি চট্টগ্রাম থেকে বাগেরহাটের উদ্দেশ্যে পালাচ্ছে। পরে বাগেরহাটগামী রয়েল পরিবহনের একটি বাস থেকে ঢাকার পোস্তগোলা ব্রিজের কাছে ইব্রাহিম হাওলাদারকে (২৪) আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে টুম্পাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।

উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান বলেন, “বাড়ির মালিক ভাড়াটিয়ার তথ্য সংরক্ষণ না করায় এবং পার্শ্ববর্তী ভাড়াটিয়ারা কোনো তথ্য দিতে না পারায় মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিবি (বন্দর-পশ্চিম) টিম ছায়াতদন্ত শুরু করে। তদন্তে জানা যায়, ভিকটিম একজন গার্মেন্টস কর্মী ছিলেন। এরপর বিস্তারিত অনুসন্ধান চালিয়ে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।”