সিবিএন ডেস্ক ;

চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়ায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুইজন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও দুইজন। শনিবার (২৯ মার্চ) রাত পৌনে তিনটার দিকে চকবাজার থানার চন্দনপুরায় বাকলিয়া এক্সেস রোডের মুখে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন বখতেয়ার উদ্দিন মানিক ও মো. আবদুল্লাহ, যাদের বয়স ৩০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। মানিকের বাড়ি রাঙ্গুনিয়া উপজেলায়, আর আবদুল্লাহর বাড়ি হাটহাজারী উপজেলায়। আহত রবিন ও হৃদয়কে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রুপালি রঙের একটি প্রাইভেট কার কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে বাকলিয়া এক্সেস রোডের দিকে আসছিল। এক্সেস রোডে প্রবেশ করতেই মোটরসাইকেলে আসা তিন-চারজন সন্ত্রাসী গুলি চালায়। পাল্টা প্রতিরোধ হিসেবে প্রাইভেট কার থেকেও কয়েকটি গুলি ছোড়া হয়, তবে সন্ত্রাসীদের কাছে অস্ত্রের সংখ্যা বেশি থাকায় তারা আধিপত্য বজায় রাখে।

গুলিতে প্রাইভেট কারের পেছনের কাচ সম্পূর্ণ ভেঙে যায় এবং গাড়ির বিভিন্ন অংশে গুলির চিহ্ন দেখা যায়। প্রত্যক্ষদর্শী ইজিবাইক চালক মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘বাকলিয়ার রাজাখালী ব্রিজের দিক থেকে প্রাইভেট কারটিকে ৪-৫টি মোটরসাইকেলে থাকা সন্ত্রাসীরা ধাওয়া করছিল। প্রতিটি মোটরসাইকেলে দুজন করে আরোহী ছিল এবং তারা প্রকাশ্যে গুলি ছুড়তে ছুড়তে কারটির পিছু নেয়। গাড়ির আরোহীদের বাঁচার আকুতি জানিয়ে চিৎকার করতে শোনা গেছে।’

সংবাদ পেয়ে নিহত মানিকের মা, স্ত্রী ও সন্তানরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে মানিকের মা বলেন, ‘আমি ময়নাতদন্ত চাই না, মামলা করব না। শুধু আমার ছেলের লাশ দিয়ে দিন।’

তিনি দাবি করেন, মানিকের সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা ছিল না।

পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে, নতুন ব্রিজ এলাকায় জায়গা দখল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পূর্ববিরোধ ছিল। একটি সূত্র জানিয়েছে, ১৫ মার্চ সন্ত্রাসী সাজ্জাদকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেওয়ায় আকরাম নামে এক ব্যক্তির ওপর হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আকরামের ব্যবহৃত গাড়ির রং ও হামলার শিকার গাড়িটির রং একই হওয়ায় ভুলবশত এই হামলা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেওয়ার পর আকরামের স্ত্রী রুমা আক্তার বাদী হয়ে মামলা করেছিলেন, যেখানে সাজ্জাদের স্ত্রী ও হাসানসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয়।

চকবাজার থানার ওসি জাহেদুল কবীর বলেন, ‘রাজাখালী এলাকা থেকে প্রাইভেট কার লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। বাকলিয়া এক্সেস রোড দিয়ে ঢোকার পরও গুলি চলতে থাকে। একপর্যায়ে চন্দনপুরায় এসে গাড়িটি থেমে যায়। এতে কারের আরোহীদের মধ্যে দুজন নিহত ও দুজন আহত হন।’

নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) শাকিলা সুলতানা বলেন, ‘গুলিতে দুজন নিহত হয়েছেন। কী কারণে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তা তদন্ত করা হচ্ছে। সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেওয়া কিংবা জায়গা দখল নিয়ে বিরোধের বিষয়গুলোও বিবেচনায় রাখা হয়েছে।’

পুলিশ সন্ত্রাসীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালাচ্ছে।