সিবিএন ডেস্ক ;
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং আদর্শ বিদ্যাপীঠের ১৩ জন এসএসসি পরীক্ষার্থী প্রবেশপত্র না পাওয়ায় নির্ধারিত দিনে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তবে স্থানীয় প্রশাসন ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সময়োপযোগী হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত ওই ১৩ শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। যা শিক্ষার্থীদের জন্য এক নতুন আশার আলো এনে দেয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, যথাসময়ে রেজিস্ট্রেশন ও ফরম পূরণের ফি পরিশোধ করা হলেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা বোর্ডে জমা দেয়নি। পরীক্ষার দিন সকালে প্রবেশপত্র দেওয়ার কথা থাকলেও শিক্ষার্থীরা তালাবদ্ধ বিদ্যালয় পায়। প্রবেশপত্র না পেয়ে কেন্দ্রে ঢুকতে না পারায় শিক্ষার্থীরা কান্নায় ভেঙে পড়ে। পরে উত্তেজিত অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন এবং বিদ্যালয়ে ভাঙচুর চালান।
পুলিশ প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইউনুসকে আটক করে থানায় হেফাজতে নেয়। উখিয়া উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার বদরুল আলম বলেন, “১৩ জন শিক্ষার্থীর কারো ফরমই বোর্ডে জমা পড়েনি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুল হোসেন বলেন, “পরীক্ষার মাত্র ৩০ মিনিট আগে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তখনই বোঝা যায়, ফরম জমা হয়নি। এ ধরনের ছায়া-প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ বিপদের মুখে ফেলছে।”
তবে অনিশ্চয়তার মধ্যেই আসে আশার বার্তা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হোসেন, উখিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সরওয়ার জাহান চৌধুরী, সাবেক সাংসদ ও জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী এবং কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের উদ্যোগ ও ধারাবাহিক যোগাযোগের মাধ্যমে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে ১৩ শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়।
এতে শিক্ষার্থীদের মুখে ফেরে হাসি। অভিভাবকরাও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “দায়িত্বশীলদের সহযোগিতা না পেলে আমাদের সন্তানেরা একটি বছর হারিয়ে ফেলত।”
শিক্ষার্থী রুমা আক্তার বলেন, “আমি ভেবেছিলাম সব শেষ। কিন্তু যখন জানলাম পরীক্ষা দিতে পারব, তখন মনে হলো, জীবন ফিরে পেলাম।”
এই ঘটনা যেমন শিক্ষা ব্যবস্থার একটি বড় দুর্বলতা উন্মোচন করেছে, তেমনি প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে কীভাবে সংকট কাটিয়ে ওঠা যায়, তার বাস্তব উদাহরণও হয়ে উঠেছে।