আবুল কাশেম, রামু প্রতিনিধি :

কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের স্বর্গপুরী উৎসব পরিণত হয়েছে এক অসাম্প্রদায়িক মিলনমেলায়। নারী-পুরুষ, নানা ধর্মাবলম্বী মানুষের অংশগ্রহণে উৎসবটি হয়ে ওঠে সম্প্রীতির প্রতিচ্ছবি। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দিনব্যাপী এই উৎসব উদযাপিত হয় উৎসবমুখর পরিবেশে।

চট্টগ্রামের জামিজুরি সুমনাচার বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ শীলরক্ষিত মহাথেরো সভায় সভাপতিত্ব করেন। আশীর্বাদক ছিলেন রামু প্রজ্ঞামিত্র বনবিহারের মহাপরিচালক বিজয় রক্ষিত মহাথেরো। প্রধান ধর্মদেশক ছিলেন অতুলানন্দ মহাথেরো। জ্ঞাতির ধর্মদেশনা দেন করুণাশ্রী মহাথেরো। স্বাগত বক্তব্য দেন শীলমিত্র থেরো।

ধর্মদেশনায় অংশ নেন কক্সবাজার উ: কুশল্ল্যা বিহারের জ্ঞানপ্রিয় মহাথেরোসহ অন্যান্য ভিক্ষু। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জোয়ারিয়ানালা ইউপি চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহমদ প্রিন্স ও উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী ক্যাছাই মং চাক। সঞ্চালনায় ছিলেন প্রজ্ঞামোদিতা থেরো।

দিনব্যাপী আয়োজনের মধ্যে ছিল প্রভাতফেরি, বুদ্ধ পূজা, অষ্টপরিষ্কার দান, ধর্মসভা, পিণ্ডদান, অতিথি ভোজন, স্বর্গপুরী মেলা ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন। প্রয়াত ধর্মগুরুদের আত্মার শান্তি ও বিশ্বশান্তির কামনায় অনুষ্ঠিত হয় সমবেত প্রার্থনা।

উৎসবে অংশ নেয় বিভিন্ন বিহারের কীর্তনীয়া নৃত্যদল, যারা রঙিন মুখোশ, সজ্জা ও নৃত্যের মাধ্যমে বুদ্ধকীর্তন পরিবেশন করে ব্যুহচক্র প্রদক্ষিণ করে।

শীলমিত্র থেরো জানান, প্রয়াত প্রজ্ঞামিত্র মহাথেরো ৩৮ বছর আগে স্বর্গপুরী উৎসবের সূচনা করেন। উৎসবের মূল বার্তা হলো—জীবনের কর্ম অনুযায়ী ভবিষ্যৎ জন্ম নির্ধারিত হয়। জীবনের সত্য উপলব্ধি এবং সদ্‌কর্মে উদ্বুদ্ধ করাই এই উৎসবের উদ্দেশ্য।

হাজারো পূণ্যার্থীর অংশগ্রহণে উৎসব সম্পন্ন হয়। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের অংশগ্রহণ সম্প্রীতির বার্তা দেয়। উদযাপন পরিষদ ও প্রজ্ঞামিত্র বনবিহার কর্তৃপক্ষ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।