কক্সবাজার প্রতিনিধি;

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএএবি) জানিয়েছে, আগামী জুলাই মাস থেকেই আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকবে কক্সবাজার বিমানবন্দর। এতে করে এটি দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক প্রবেশদ্বার হিসেবে কার্যক্রম শুরু করবে।

সোমবার (২১ এপ্রিল) সিএএবি চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস-মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় এ তথ্য জানানো হয়। সভায় ইমিগ্রেশন পুলিশ, কাস্টমস, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও এয়ারলাইন অপারেটর কমিটির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সিএএবি জানায়, বঙ্গোপসাগরে সম্প্রসারিত ১,৭০০ ফুটসহ রানওয়ে’র মোট দৈর্ঘ্য হবে ১০,৭০০ ফুট, যা দেশের মধ্যে দীর্ঘতম। রানওয়ে সম্প্রসারণের পাশাপাশি নির্মাণ হচ্ছে একটি অত্যাধুনিক আন্তর্জাতিক টার্মিনাল।

তবে প্রাথমিকভাবে অ্যাডহক ভিত্তিতে বিদ্যমান টার্মিনাল থেকেই স্বল্প পাল্লার আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালিত হবে। নতুন টার্মিনাল ভবন শেষ হলে তা চওড়া দেহবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক বিমানের জন্যও প্রস্তুত থাকবে।

সিএএবি চেয়ারম্যান বলেন, “রানওয়ে, আলো ব্যবস্থা, সুরক্ষা বাঁধ ও টার্মিনাল অবকাঠামো নিয়মিত পরিদর্শন করা হচ্ছে যেন নিরবচ্ছিন্ন অপারেশন চালানো যায়।”

কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন গন্তব্য হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি নির্মাণাধীন বিমানবন্দরের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন।

বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের কর্মকর্তারা মনে করেন, এই উন্নয়ন কক্সবাজারকে দক্ষিণ এশিয়ার পর্যটনের কৌশলগত কেন্দ্রে পরিণত করবে।

চীনের ইউনান প্রদেশের কুনমিং, নেপালের কাঠমান্ডু ও ভুটানের থিম্পু থেকে সরাসরি ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনার কথাও জানানো হয়েছে। ইউনান কক্সবাজারকে তাদের নাগরিকদের জন্য আকর্ষণীয় সমুদ্রগন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করছে।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (টিওএবি) সভাপতি রাফিউজ্জামান বলেন, “স্থলবেষ্টিত দেশগুলোর পর্যটকদের কাছে কক্সবাজার সবচেয়ে নিকটবর্তী সমুদ্র উপকূল। সরাসরি বিমান সংযোগ চালু হলে পর্যটক সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়বে।”

তবে তিনি সতর্ক করেন, আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আকর্ষণ করতে হলে কক্সবাজারে আরও বিনোদন সুবিধা ও পর্যটকবান্ধব অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। “বৈশ্বিক পর্যটন গন্তব্য হতে হলে নাইটলাইফসহ নানা সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে,” বলেন তিনি।