এরা কারা?

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০৫

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


রায়হান আজাদ:
এরা কারা? এরা কেমনে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম নারীদের প্রতিনিধিত্ব করে? এটাও আমার বুঝে আসে না যে নারী বিষয়ক সংস্কার সেটা আবার কী? প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনুস হিন্দুদের কাছে গিয়ে বলেছিলেন, কিসের সংখ্যালঘুর অধিকার চান? নাগরিক অধিকারই চাইবেন। তাহলে এক্ষেত্রে কেন নারী- পুরুষ সবার সমান ও ন্যায্য অধিকার কায়িম না করে শুধুমাত্র নারীকে নিয়ে কমিশন গঠন করা হলো? সোজা কথা,নারী কমিশন গঠন করলে পুরুষ কমিশন কেন নয় ? বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার কি নারীর অধিকার ও মর্যাদা ক্ষুন্ন করেছিল? যাদেরকে নিয়ে এ কমিশন করেছেন তারা কি ৫ আগস্টের চেতনা ধারণ করে? গত জালিম সরকারের আমলে হাজার হাজার শালীন চরিত্রের নারী নেত্রী জেল- জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিল তারা কি ইনটেরিম গভর্নমেন্টের কোন মূল্যায়ন পাওয়ার যোগ্য নন?
যে সব বস্তুবাদী নারীদের নিয়ে এ কমিশন গঠন করা হয়েছে তারা কেউ এদেশের ৯০% নারী নাগরিকের ধর্ম ইসলাম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখে না। তারা পাশ্চাত্য ধ্যান- ধারণায় বড় হয়েছে। তারা সুপরিকল্পিতভাবে পাশ্চাত্যের পরিবারহীন পাশবিক জীবনধারা এদেশে ছড়িয়ে দিতে তৎপর । তারা নারী অধিকারের বাধা হিসেবে ইসলাম ধর্মকে দাঁড় করিয়েছে। তারা ঘুরে ফিরে বলতে চায় ইসলাম নারীদের ঠকিয়েছে! অথচ পৃথিবীর একমাত্র ধর্ম ইসলাম নারী সমাজকে সর্বক্ষেত্রে অনন্য অধিকার ও মর্যাদা দিয়েছে। উত্তরাধিকার ক্ষেত্রে তাদেরকে বহুপক্ষ থেকে সস্পদের মালিক বানিয়েছে আর পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব ও কর্তব্য থেকে তাদেরকে নিস্কৃতি দিয়েছে। ইসলামে পিতার উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে নারী পুরুষের অর্ধেক পায়। নারীর জন্য এটি আল্লাহর পক্ষ হতে সুস্পষ্ট বরাদ্দ। আল্লাহর এ আইন সামগ্রিক বিবেচনায় যৌক্তিক ও ন্যায় সংগত। কারণ, একজন নারী কন্যা হিসেবে তার পিতা থেকে, স্ত্রী হিসেবে তার স্বামী থেকে, মা হিসেবে তার পুত্র থেকে এভাবে আরো নানান উপায়ে উত্তরাধিকার সম্পত্তি লাভ করেন। কিন্তু তার ওপর কোন দায়িত্বের বোঝা অর্পণ করা হয়নি। অন্যদিকে পুরুষের ওপর যেভাবে পিতার অবর্তমানে বোনদের বিয়ে দেয়া, পৈত্রিক ভিটাবাটির তদারকি, আত্মীয়-স্বজনের দেখাশোনা এবং পিতামাতার ইছালে সাওয়াবের দায়িত্ব অর্পিত হয় তদ্রƒপ নারীদের ওপর নয়। নারীগণ মোহরানা হিসেবে স্বামীর থেকেও সম্পদ লাভ করেন। নিজে চাকরি-বাকরি করে আয়-উপার্জন করলে তাও একান্ত তারই। অন্যদিকে পরিবারের ভরণ-পোষণের সামগ্রিক দায়-দায়িত্ব পুরুষ স্বামীর ওপর ন্যস্ত। এত সব বিবেচনায় ইসলামের উত্তরাধিকার নীতি অত্যন্ত সুষম ও ভারসাম্যপূর্ণ বিবেচিত হয়। সুতরাং যারা ইসলামের খন্ডিত/ অস্পষ্ট বক্তব্য উপস্থাপন করে নারী অধিকারের কথা বলে উসকানি সৃষ্টি করছে তারা এদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। তাদের মতলব ভাল নয়। তারা ঘাপটি মেরে থাকা কুচক্রি, এদের রুখে দেয়া সময়ের দাবি বিবেচিত হয়।

রায়হান আজাদ
সহকারি অধ্যাপক, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।