ইমাম খাইর, সিবিএন:
কক্সবাজার-মহেশখালী নৌরুটে উদ্বোধন হলো বহুল প্রতীক্ষিত সী-ট্রাক পরিষেবা। এতে করে ঘাটে দীর্ঘদিনের চাঁদাবাজ ও মাফিয়া চক্রমুক্ত হলো দ্বীপবাসী।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পরিষেবা উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। এ সময় তার সফর সঙ্গী ছিলেন বিখ্যাত দার্শনিক ড. সলিমুল্লাহ খান।

উদ্বোধন শেষে বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে মহেশখালীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সী-ট্রাকটি মহেশখালী ঘাটে পৌঁছালে অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানায় মহেশখালীর সাধারণ মানুষ।এরপর উপদেষ্টা ড. সাখাওয়াত হোসেন মহেশখালী বাসীর উদ্দেশ্যে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন।

তিনি বলেন, ২৫০ জন যাত্রী ধারণক্ষমতার সী-ট্রাকটি প্রতিদিন তিন বার করে যাওয়া-আসা করবে।কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর ৬ নস্বর জেটিঘাট থেকে মহেশখালী যাতায়াতের ক্ষেত্রে ৩৫ টাকা। অন্যদিকে কক্সবাজার নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে মহেশখালী যেতে ৩০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে দেন উপদেষ্টা।

ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, জনগণের ভোগান্তি লাভ হবে সী-ট্রাক সার্ভিস চালু করা হয়েছে। নির্ধারিত ভাডার বাইরে নেওয়ার সুযোগ নাই। দুই লাখ টাকা হোক ১০ কোটি টাকা হোক, ৫ টাকার ১ পয়সা বেশি নিলে ইজারা বাতিল করা হবে।

সী-ট্রাক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালা্হউদ্দিন, জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব এস এম সুজাউদ্দিনসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত গণমাধ্যমকে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব এস এম সুজাউদ্দিন বলেন, মহেশখালীতে শুধু সী-ট্রাক উদ্বোধন নয়, এর মাধ্যমে বহুবছরের ঘাট মাফিয়াদের অবসান ঘটতে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আজ শুধু সী- ট্রাকের উদ্বোধন হয়নি, বহু বছর ধরে মহেশখালী ঘাটকে জিম্মি করে রাখা মাফিয়া চক্রের দুঃশাসনের অবসান ঘটেছে। এই দিনটি ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সী-ট্রাক পরিষেবা চালুর মাধ্যমে সাধারণ মানুষ অবশেষে পাচ্ছেন নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও নিয়মিত যাতায়াতের সুযোগ।’

এস এম সুজাউদ্দিন আরও বলেন, ‘ঘাট ভিত্তিক যাতায়াত ছিল অনিয়ম, দালালি ও শোষণের শিকার। আমরা বিশ্বাস করি, আজকের এই পদক্ষেপ শুধুই যোগাযোগ উন্নয়নের নয়, বরং এটি একটি সামাজিক বিপ্লবের সূচনা।’

তিনি মনে করেন, এই সী-ট্রাক পরিষেবা কক্সবাজার-মহেশখালী অঞ্চলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

উল্লেখ্য, এই সী-ট্রাক পরিষেবার মাধ্যমে প্রতিদিন শতশত যাত্রী ও মালামাল পরিবহন করা সম্ভব হবে। যা স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।

নিয়মিত সী-ট্রাকটি চলাচলের ঘোষণায় উচ্ছ্বসিত দ্বীপবাসী।একই সঙ্গে বর্ষা মৌসুমে উত্তাল সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির মতো ঘটনাও কমবে বলে আশাবাদী তাঁরা।