ডেস্ক নিউজ:

আগামী মাসে বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ওআইসির নবনিযুক্ত মহাসচিব ড. ইউসুফ বিন আহমেদ আল ওথাইমিন। এ ছাড়া মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় জোট ওর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ২০১৮ সালের বৈঠকটিও ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ আয়োজন ও এ বছরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠককের আলোচনা সারতে এ মাসের শেষে সৌদি আরব যাচ্ছেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক। জেদ্দায় অনুষ্ঠিতব্য ওআইসির জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি। এবারের বৈঠকে ধর্মীয় উগ্রপন্থা এবং রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় ওআইসি জোটসহ মুসলিম দেশগুলোকে পাশে চায় বাংলাদেশ।

ওআইসি মহাসচিবের সফর সম্পর্কে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, নতুন মহাসচিব যোগ দেয়ার পর তাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি ঢাকা সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আগামী মাসে তার সফরটি অনুষ্ঠিত হতে পারে।

এদিকে চার দিনের সফরে পররাষ্ট্র সচিব ওআইসির পূর্বনির্ধারিত ৩০ এপ্রিল-২ মে উচ্চ পর্যায়ের সভার বিভিন্ন সেশনে যোগ দেবেন। এর পাশাপাশি সাইড লাইনে মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন তিনি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, জেদ্দার এ বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বাৎসরিক আয়োজনের এজেন্ডাসহ অন্যান্য প্রস্ততি চূড়ান্ত হবে। আসছে জুলাই মাসে আফ্রিকার আইভোরি কোস্টের বন্দরনগরী আবিদজানে ওই বৈঠক হবে। ওই সভার প্রস্তুতি নিয়ে জেদ্দার বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা অংশ নেবেন।

সূত্র জানায়, বৈঠকে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা ও অবস্থান তুলে ধরার পাশাপাশি জঙ্গিবাদ ও রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় ওআইসির আরও সক্রিয়তা আশা করছে বাংলাদেশ।

ঢাকায় ২০১৮ সালের ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক হওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আগামী বছরের ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠক ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। সে বিষয়ে প্রস্তুতির জন্য এবারের বৈঠকের প্রস্তুতি পর্বের বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা জরুরি। তাছাড়া বৈঠকের আলোচ্যসূচি চূড়ান্ত করতে বাংলাদেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে মতামত দেয়াও প্রয়োজন।

তিনি জানান, বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে ধর্মীয় উগ্রপন্থার সম্ভাব্য উত্থান চেষ্টা মোকাবেলায় মুসলিম দেশগুলোর যৌথ উদ্যোগের প্রয়োজন রয়েছে। উগ্রপন্থা মোকাবেলায় ওআইসির বিভিন্ন উদ্যোগেও বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকায় রয়েছে।

সূত্র জানায়, ওআইসি ও সৌদি আরবের উদ্যোগে রিয়াদে সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ মোকাবেলায় মুসলিম বিশ্বের যে জোট গঠিত হয়েছে বাংলাদেশ তার প্রথম দিকের সমর্থনকারী রাষ্ট্রের অন্যতম। রিয়াদে প্রতিষ্ঠিত সন্ত্রাসবাদবিরোধী সেন্টারের সঙ্গে তথ্য-আদান এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতায় সক্রিয় রয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া মুসলমানদের পবিত্রস্থান কাবা শরিফ এবং মসজিদে নববী সন্ত্রাসের হুমিতে আক্রান্ত হলে বাংলাদেশ সেনা পাঠনোর আগাম ঘোষণা দিয়ে রেখেছে।

জানা গেছে, এবারের বৈঠকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত আক্রমণ এবং তাদের পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সীমান্তের দিকে ঠেলে দেয়ার বিষয়ে মিয়ানমার যে কৌশল নিয়েছে সে বিষয়টি ওআইসির বৈঠকে আরও জোরালোভাবে তুলতে চায় ঢাকা।

দীর্ঘ সময় ধরে কয়েক লাখ মিয়ানমার নাগরিক বাংলাদেশে অস্থায়ী আশ্রয়ে রয়েছে। সম্প্রতি নতুন করে আরও প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এটির স্থায়ী সমাধানে বিশ্ব নেতৃত্ব বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বে তরফে যাতে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়ানো যায় সেজন্য ওআইসির আরও সক্রিয়তা চায় বাংলাদেশ।