ডেস্ক নিউজ:
বিশ্বব্যাংক২০১৬ সালে বাংলাদেশের রেমিটেন্স প্রবাহে প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ১১.১ শতাংশ কমেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক আর্থিক সহায়তাকারী সংস্থা বিশ্বব্যাংক। মধপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশগুলোতে জ্বালানি মূল্যের পতন এবং কঠোর মুদ্রানীতিকে এর কারণ বলে মনে করছে সংস্থাটি। শুক্রবার (২১ এপ্রিল) বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়। যদিও ‘মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ব্রিফ’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে ২০১৭ সালে বাংলাদেশের রেমিটেন্স প্রবাহে ২.৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালে বাংলাদেশে ১৩.৭ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে; যা জিডিপির ৬ শতাংশ। বাংলাদেশের রেমিটেন্স প্রবাহ কমে যাওয়ার এ বিষয়টি বৈশ্বিক প্রবণতার অংশ বলেও উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
বিশ্বব্যাংক জানায়, ২০১৬ সালে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে রেকর্ডকৃত রেমিটেন্সের পরিমাণ ৪২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০১৫ সালের চেয়ে ২.৪ শতাংশ কম। ২০১৫ সালে রেমিটেন্সের পরিমাণ ছিল ৪৪০ বিলিয়ন ডলার।
২০১৬ সালে উচ্চ আয়ের দেশের রেমিটেন্স প্রবাহসহ বৈশ্বিক রেমিটেন্স প্রবাহ ১.২ শতাংশ সংকুচিত হয়ে ৫৭৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। আর আগের বছর অর্থাৎ ২০১৫ সালে বৈশ্বিক রেমিটেন্স প্রবাহের পরিমাণ ছিল ৫৮২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রুশ ফেডারেশন এবং গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল (জিসিসি)ভুক্ত দেশগুলোতে নিম্ন জ্বালানি মূল্য এবং নাজুক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্য এশিয়ায় রেমিটেন্স প্রবাহের ওপর প্রভাব পড়ে। আর ইউরোপের নাজুক প্রবৃদ্ধির কারণে উত্তর আফ্রিকা ও সাব-সাহারান আফ্রিকায় রেমিটেন্স প্রবাহ কমে যায়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সালে ভারতের রেমিটেন্স প্রবাহ কমে ৮.৯ শতাংশ হয়েছে। এছাড়া নাইজেরিয়ার রেমিটেন্স প্রবাহ কমেছে ১০ শতাংশ এবং মিসরের রেমিটেন্স প্রবাহ কমেছে ৯.৫ শতাংশ। তবে বড় আকারের রেমিটেন্স অর্জনকারী দেশগুলোর ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম হয়েছে। গত বছর মেক্সিকোর রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে ৮.৮ শতাংশ এবং ফিলিপাইনের রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে ৪.৯ শতাংশ।
২০১৫ সালে ভূমিকম্পের পর প্রবাসীদের পাঠানো অর্থনৈতিক সহায়তার কারণে ওই বছর নেপালের রেমিটেন্সের প্রবাহ অস্বাভাবিক রকমের উচ্চমাত্রার ছিল। ওই বছর নেপালের রেমিটেন্স প্রবাহ ছিল ১৪.৩ শতাংশ। ২০১৬ সালে নেপালের রেমিটেন্স প্রবাহ আগের বছরের চেয়ে ৬.৭ শতাংশ কমে যায়। ২০১৬ সালে শ্রীলঙ্কায় রেমিটেন্স প্রবাহে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩.৯ শতাংশ।
জিসিসিভুক্ত দেশগুলোতে নিম্ন প্রবৃদ্ধি এবং বাজেট ঘাটতি ও সরকারি ঋণ কমিয়ে আনার কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় রেমিটেন্স প্রবাহের প্রবৃদ্ধি ধীরগতির থাকবে বলে আভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। ২০১৭ সালে মাত্র ২.০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আশা করা হচ্ছে। এ বছর বাংলাদেশে রেমিটেন্স প্রবাহে ২.৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি, ভারতে ১.৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি, পাকিস্তানে ১.৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এবং শ্রীলঙ্কায় ১.৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, একটি অগ্রগতির কথা বলতে গিয়ে বিশ্বব্যাংক জানায়, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে শ্রমিকদের যাওয়ার হার বেড়েছে ৩৬.৩ শতাংশ। জিসিসিভুক্ত দেশগুলোর অর্থনৈতিক মন্থরতার পরও সৌদি আরব ও কুয়েতে বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর এ সংখ্যা বেড়েছে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।