হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী :
মাদকের নেশা এমনই এক নেশা, যে নেশার কাছে সমাজ-সংসার সব তুচ্ছ হয়ে যায়। সম্প্রতি মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হাতে শহীদ হয়েছে জিয়াউদ্দিন ফয়সাল (২০)। সে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগ তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্ব। তাঁর মতো সবাইকে মাদকের বিরুদ্ধে স্বোচ্ছার হতে হবে। আইনের আওতায় আনতে হবে সমস্ত মাদক ব্যবসায়ীকে।

শনিবার কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের পঞ্চম ব্যাচের শিক্ষার্থী জিয়াউদ্দিন ফয়সালের স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নাজিম উদ্দিন সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ট্রেজারার প্রফেসর আব্দুল হামিদ। বক্তব্য রাখেন, আইন বিভাগ প্রধান নাঈম আলিমুল হায়দার, ইসলামিক স্টাডিজ প্রধান ড.বেলাল নূর আজিজী, আইন বিভাগের শিক্ষক জিয়া উদ্দিন, ফয়সালের বাবা নুরুল আনোয়ার, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মারুফ বিন কবির ও সুমাইয়া সুলতানা। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি রেজিস্ট্রার (গণসংযোগ কর্মকর্তা) কুতুব উদ্দিন।

ফয়সালের বাবা নুরুল আনোয়ার বলেন, ‘আমার ছেলে মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে খুন হয়েছে। আমি চাই বর্তমান তরুণ সমাজ মাদককে না বলতে শিখুক। মাদকের কারণে যেন আর কেউ সন্তান হারা না হয়।’

সূত্র মতে, গত ১৬ এপ্রিল (রোববার) রাতে কক্সবাজার সদরের পিএমখালী ইউনিয়নের মাছুয়াখালি গ্রামে মাদক ব্যবসায়ীদের হামলায় জিয়াউদ্দিন ফয়সাল নৃশংসভাবে খুন হয়। এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ১৭ এপ্রিল মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করেন কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

এদিকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রামু ও সদরের পিএমখালী এলাকা থেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছয়জনকে আটক করেছে। এরা হলেন, নুরুচ্ছফার ছেলে রেজাউল করিম (২০), আমান উল্লাহর ছেলে নুরুল হক (১৮), উশিউর রহমানের ছেলে রমজান (২২), আবছারের ছেলে শাহিন (২০), ইসহাকের ছেলে রুবেল (১৯) ও দুদু মিয়ার ছেলে মনি আলম (১৮)। তারা সবাই সদর উপজেলা পিএমখালী ইউনিয়নের মাছোয়াখালী এলাকার বাসিন্দা।

কক্সবাজার সদর থানায় সদ্য যোগদানকারি পরিদর্শক (ওসি, তদন্ত) কামরুল আজম বলেন, ‘হত্যাকান্ডের পরপরই অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালার ছিরামুরা থেকে তিনজন ও পিএমখালী থেকে তিনজনসহ মোট ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। আটকরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকা-ে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে এবং হত্যাকান্ডে একটি ধারালো দা ও কয়েকটি লাঠি ব্যবহার করা হয়। অভিযানে এসবও উদ্ধার করা হয়।’