শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার ॥

কক্সবাজারের টেকনাফ উপকুলিয় ইউনিয়ন বাহারছড়া উত্তর শিলখালী এলাকা হতে সাবেক চেয়ারম্যান মুনির আহমদের লুন্ঠিত লাইসেন্সধারী এক নালা অস্ত্রটি এখনো উদ্ধার হয়নি। ২০১৫ সালে রাতের আধাঁরে অস্ত্রটি লুটের ঘটনা ঘটে। এব্যাপারে অস্ত্রটি লুঠের ঘটনায় শিলখালির ছলিম উল্লাহর ছেলে ফায়সালকে দায়ী করে অস্ত্র উদ্ধারের জন্য পুলিশ সুপারের নিকট অভিযোগ করেও দীর্ঘ সময় প্রতিকার পায়নি বৈধ অস্ত্র মালিক। অতচ লুন্ঠিত অস্ত্র দিয়েই খুন, চাঁদাবাজি,জমি দখল সহ বিভিন্ন অপরাধ এই ফায়সাল বাহিনী সংগঠিত করে যাচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

সুত্রে জানা যায়,বাহারছড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুনির আহমদের বাড়িতে ২০১৫ সালে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসময় ডাকাতদল অন্যান্য মালামালের পাশাপাশি তার লাইসেন্সধারী (বন্দুক নং-৮৯৬৩৭,লাইসেন্স নং-৪৫/৮৯) ১ নালা অস্ত্রটিও লুট করে নিয়ে যায়।

এঘটনায় নের্তৃত্ব দেয়া শিলখালির ছলিম উল্লাহর ছেলে ফায়সালকে অভিযুক্ত করে তৎকালীন পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় অস্ত্রটি উদ্ধারের কোন পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, লাইসেন্সধারী অস্ত্র লুটে নিয়ে এই ফায়সাল এলাকায় একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে। এই অস্ত্র দিয়েই বাহারছড়া শামলাপুরের ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর দিন দুপুরে মোস্তাফিজ নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার পর ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে ফায়সাল। এ হত্যা কান্ডের ঘটনায় নিহতের ভাই নুরুন নবী বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় দায়ের করা হয় হত্যা মামলা ( মামলা নং- জিআর-১/২০১৬)। এই হত্যা মামলার ৩নং আসামী হচ্ছে ফায়সাল। ঘটনার দীর্ঘ ১৬ মাস অতিবাহিত হলেও এ পর্যন্ত কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মামলার আসামী ফায়সালসহ অন্যান্য আসামী এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করলেও পুলিশ এদেও গ্রেফতার না করায় উল্টো বাদীকে মামলা উঠিয়ে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। এঘটনায় টেকনাফ থানায় সাধারণ ডায়েরীও করেছে বাদী নুরুন নবী।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দিনদুপুরে মোস্তাফিজ হত্যার পর থেকে বিভিন্ন সময় ফায়সাল এলাকায় অস্ত্র ও তার বাহিনী নিয়ে খুন, ইয়াবা ছিনতাই,ভাড়াটে হিসাবে অন্যের জমি দখলে সহায়তা সহ বিভিন্ন অপরাধ সংগঠিত করে আসছে।

গত কয়েক মাস আগে শামলাপুরের মাষ্টার জাহেদের বসতবাড়িতে ফায়সাল তার বাহিনী নিয়ে অবৈধ অস্ত্রেও মহড়া দেয়। স্থানীয় জনতার ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যায় বাহিনীর লোকজন। পরে মাষ্টার জাহেদ বিষয়টি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করে বলে জানা গেছে। তার ভয়ে এলাকায় এখন কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, এক সময়ঢ টমটম চালক ছিল ফায়সাল। অস্ত্র দিনের মধ্যে ইয়াবা ডাতাতি,ভাড়াটিয়া খুন, টাকা বিনিময়ে অস্ত্র নিয়ে অন্যের জমি দখলে সহায়তা সহ বিভিন্ন অপরাধামুলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে সেই ফায়সাল এখন কোটি টাকার মালিক।

কেউ টু-শব্দ করলে তার বাড়ীতে গিয়ে রাতের আধাঁরে লুটপাট চালায়। এধরনের অহরহ ঘটনার প্রত্যক্ষস্বাক্ষী স্থানীয় নিরীহ লোকজন।

টেকনাফ উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বাহারছড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুনির আহমদের ছেলে আজিজ উল্লাহ বলেন,ফায়সাল বাহিনীর অস্ত্রের ঝনঝানিতে এলাকাবাসী এখন দিশেহারা। তার ভয়ে রাতে কেউ শান্তিতে ঘুমাতে পারেনা। প্রতিনিয়ত তার মতো শতশত লোকজনকে উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায় কাটাতে হচ্ছে বিনিদ্র রাত। প্রশাসন এব্যাপারে ব্যবস্থা নিলে আমরা শান্তি ফিরে পাব বলে জানান তিনি।