ডেস্ক নিউজ:
ভারতের পাহাড়ি ঢল আসছে তার আগাম তথ্য বাংলাদেশ কেন পেল না? এ প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশবাদী সংগঠন বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দ রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ভারতের পাহাড়ি ঢলে বাংলাদেশের হাওর ডুবে গেছে। কিন্তু পাহাড়ি ঢলের তথ্য কেন দেয়া হলো না সেই প্রশ্ন বাংলাদেশ তুলতে পারে।

শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা আয়োজিত ‘হাওরে মানবিক বিপর্যয় : পাশে দাঁড়ান’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এমন কথা বলেন তিনি।

৩ বছর হাওরের ইজারা বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়ে রিজওয়ানা হাসান বলেন, আইনানুযায়ী উন্মুক্ত হাওর ইজারা দেয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু আমাদের দেশে তা দেয়া হয়। এবারের বন্যায় মাছে মরক দেখা দিয়েছে। মা মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মারা গেছে। এ জন্য সরকারের উচিত আগামী ৩ বছর হাওরের ইজারা না দেয়া। কারণ ইজারা দিলে যে মাছ থাকবে তাও ধরে ফেলা হবে।

এই পরিবেশবাদী বলেন, হাওরে মাছ ফিরে আসতে সরকারের ৩ থেকে ৪ বছরের পরিকল্পনা নেয়া উচিত। পাশাপাশি এরপর প্রকৃত মৎস্যজীবীদের ইজারা দেয়া উচিত।

২৫ থেকে ৩০ শতাংশ ধান তুলতে পেরেছে কৃষক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কাসমিত রেজা বলেন, আমরা হাওরে সরেজমিনে গিয়ে তথ্য নিয়েছি। তিনি জানান, ২০০১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই ১৭ বছরে ৮ বার হাওরে ফসল নষ্ট হয়েছে। হাওরে বোরো ধান ও মাছ ছাড়া আর কোনো সম্পদ নেই। কৃষক যদি বারবার ধান ও মাছ হারায় তাহলে হাওরে মানবিক বিপর্যয় দেখা দেবে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়- কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেয়া তথ্যানুযায়ী হাওরের ৭৫ শতাংশ ধান তোলা হয়েছে। এটা আসলে সঠিক নয়। হাওরে মাত্র ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ ধান তুলতে পেরেছেন কৃষকরা। কারণ গত বছরের তুলনায় এ বছর ১৫ থেকে ২০ দিন আগে বন্যা হয়েছে। এছাড়া গত বছরে ধান কাটার আগ মুহূর্তে বন্য হয়েছে। এ বছর ধান ধরার আগেই বন্যা হয়।

হাওরের মানুষের খাদ্য সমস্যা শুধু দেখা দেবে না। এর সঙ্গে মাছের বংশ নষ্ট হবে। সেইসঙ্গে ধান বীজের সংকট দেখা দেবে বলেও জানান তিনি।

সরকারের তরফ থেকে হাওর অঞ্চলে ১৫ টাকা কেজি মূল্যের চাল ও ১৮ টাকা কেজি মূল্যের আটা বিতরণের ঘোষণা প্রসঙ্গে কাসমির রেজা বলেন, সরকারের দেয়া এসব সুবিধা ৫০০ মানুষের মধ্যে ৪০০ মানুষ পান না। তাই শুধু উপজেলা শহরে না, প্রতি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এই সুবিধা পৌঁছে দিতে হবে।