তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের (আইসিটি) মামলায় গ্রেপ্তার নতুন সময় ডটকমের নির্বাহী সম্পাদক আহমেদ রাজুর এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম এ কে এম মঈন উদ্দিন সিদ্দিকী রিমান্ডের আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আলী হোসেন আহমেদ রাজুকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে, প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে এবং ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কি না তা জানার জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।

অপরদিকে আহমেদ রাজুর আইনজীবী মনিরুল ইসলাম রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের শুনানি করেন।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও নিজেদের অনলাইন মাধ্যমে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে দেশীয় ব্র্যান্ড ও দেশীয় শিল্পের ক্ষতি করার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তাকে রোববার সেগুনবাগিচাস্থ নিজ কর্মস্থল থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার ওসি (তদন্ত) আলী হোসেন জানান, বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে অনেকেই অন্যের ক্ষতি করার অপচেষ্টা করেন। এক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।

এ মামলার বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘আইসিটি মামলাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়। বিষয়টি তদন্ত করে যত দ্রুত সম্ভব চার্জশিট দেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, অনলাইন নিউজ পোর্টাল নতুন সময় ডটকমে দেশের শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক্স, হোম অ্যাপ্লায়েন্স ও টেলিকমিউনিকেশন পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের নিজস্ব ব্র্যান্ড ‘ওয়ালটন’ মোবাইল ফোনসেট নিয়ে মিথ্যা তথ্যনির্ভর একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদন প্রকাশের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ বিষয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হয়, যা দেশীয় ব্র্যান্ড ও দেশীয় শিল্পের ক্ষতি সাধনের অপচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন মহলে চিহ্নিত হয়েছে।

উল্লেখ্য, দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে বিদেশি মোবাইল ফোনসেটের ওপর নির্ভরতা কমাতে দেশেই ফোনসেট ও এক্সেসরিজ উৎপাদন শিল্প স্থাপনে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে ওয়ালটন। দেশীয় কোম্পানিটি হ্যান্ডসেটের পাশাপাশি ট্যাব, কম্পিউটার মনিটর ও ল্যাপটপসহ বিভিন্ন আইটি পণ্য তৈরিরও ঘোষণা দিয়েছে। ইতিমধ্যে নিজস্ব কারখানায় মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে, মাল্টিলেয়ার মাদারবোর্ড তৈরিতে পুরোপুরি প্রস্তুত ওয়ালটন। ডিজাইন ডেভেলপ, গবেষণা ও উন্নয়ন এবং মান নিয়ন্ত্রণ বিভাগ স্থাপন করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং আইসিটি মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে ইতিবাচক নীতি সহায়তার আশ্বাসে খুব শিগগিরই ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ স্টিকারযুক্ত মোবাইল হ্যান্ডসেট তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে ওয়ালটন। যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়।

সূত্রমতে, ওয়ালটনের এই মহৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন তথা ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন খাতে বাংলাদেশের শুভ সূচনাকে রুখতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে দেশি-বিদেশি একটি স্বার্থান্বেষী মহল। তারা দেশীয় ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোনের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার চালাচ্ছে। মোবাইল ফোনের পাশাপাশি ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেখা ওয়ালটনের এলইডি টেলিভিশন সম্পর্কেও ইন্টারনেটভিত্তিক সংবাদ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন খবর ছড়াচ্ছে স্বার্থান্বেষী মহলটি। অবশ্য ওয়ালটন তথা দেশীয় উদীয়মান প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদন শিল্পের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করতে যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক দাবি উঠেছে।

রাইজিংবিডি