আবদুল মজিদ, চকরিয়া:
চকরিয়ায় দক্ষিণ চট্রগ্রামের শ্রেষ্ঠ বিদ্যা নিকেতন চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠে তথ্য প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে প্রাণবন্ত এ শিক্ষাঙ্গনেও।নতুন দিগন্ত উন্মোচন হয়েছে শিক্ষাঙ্গন ছাড়াওসবক্ষেত্রে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে শ্রেণী কক্ষেও লেগেছে ‘ডিজিটাল ঢেউ’। তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক আধুনিক মাল্টিমিডিয়া ক্লাসের মাধ্যমে পাল্টে গেছে শিক্ষাক্ষেত্রের দৃশ্যপট।এতে প্রাচীন তথা সনাতন শিক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তে জ্ঞান অর্জনে আধুনিক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।পর্যটন নগরী কক্সবাজারের বৃহত্তম চকরিয়া উপজেলায় শিক্ষা বিস্তারে অনন্য অবদান রেখে চলেছে চকরিয়া কোরক বিদ্যাপিঠ। মাধ্যমিক শ্রেণীর পাশাপাশি প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা ক্ষেত্রেও এখন শুরু হয়েছে ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার। পঞ্চম শ্রেণীতে চলছে নিয়মিত ডিজিটাল পাঠদান। ডিজিটাল ধারণার অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের আওতায় বদলে গেছে শ্রেণী কক্ষের চেহারা।তবে যেখানে এতদিন ব্লাকবোর্ড ছিল সেখানে যুক্ত হয়েছে সাদাপর্দা। মার্কার দিয়ে হোয়াইট বোর্ডে লিখে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের পুরনো সেই ধারণা থেকে বেরিয়ে এখন পর্দায় মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে ইলেকট্রনিক প্রজেক্টরের ভিজুয়াল পর্দা ব্যবহার করে পাঠ্যবইয়ের আলোচ্য বিষয়ে শিক্ষার্থীদেরকে জ্ঞান দেয়া হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষে বসেই যে কোন বিষয় নিয়ে পর্দায় দৃশ্য দেখে-শুনে, আলোচনা করে তাদের পড়ালেখা ও ক্লাস ওয়ার্ক করতে পারছে।
উপজেলার চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা ক্লাসে বসে সবাই চেয়ে রয়েছেন পর্দার দিকে। কেউ কেউ নিজের খাতায় নোট নিচ্ছেন। আর শিক্ষক একের পর এক ধারণা দিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা কৌতূহলী দৃষ্টিতে ভিজুয়াল প্রজেকশনের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন।পঞ্চম শ্রেণীর প্রায় তিনশতাধিক শিক্ষার্থীরা এ সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করছেন। পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নিশাত ও শুভ জানায়, তারা এখন অনেকটায় জেনে গেছেন কিভাবে ‘ক্লাস কনটেন্ট’ সমূহ প্রস্তুত করা যায়। এ পদ্ধতিতে ক্লাস করতে অনেক ভাল লাগে উল্লেখ করে তারা জানায়, সব বিষয়ে এভাবে পাঠদান করালে আরও ভাল হতো।
মাল্টিমিডিয়া ক্লাসে পাঠদান দেয়া শ্রেণী শিক্ষক তানজিনুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতির পাঠদান সহজেই শিক্ষার্থীরা বুঝতে সক্ষম হয় এবং দ্রুতসময়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। তা ছাড়া এই পদ্ধেিতত ছাত্ররা দীর্ঘক্ষণ সময় পাঠদান মনে রাখতে পারে। সহসাই পাঠদানের ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের মেধা অত্যান্ত প্রখর হয়। তথ্য প্রযুক্তি মাধ্যমে অজানাকে জানা খুবই সহজ মাধ্যম। প্রথম প্রথম একটু সমস্যা হলেও, এ বিষয়ে যখন ধারণা আসবে সহজেই ক্লাসে শিক্ষার্থীরা উত্তর দিতে সক্ষম হয়।
চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠের প্রধান প্রধান শিক্ষক নুরুল আখের বলেন, ডিজিটাল ধারণার মাধ্যমে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের শিক্ষালাভ তাদের জন্য একটি অন্যরকম অভিজ্ঞতা। এরই মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যেমন আনন্দের মাধ্যমে শিখতে পারছেন তেমনি তারা জ্ঞান অর্জন করছে। তিনি জানান, বর্তমানে একটি প্রজেক্টরের মাধ্যমে এখানে নিয়মিত পাঠদান করানো হয়। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আরো বেশকটি নতুন প্রজেক্টর শিক্ষার্থীদের জন্য ক্রয় করা হবে। এ পদ্ধতির ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যেও অনেক আগ্রহ সৃষ্টি হয়। এসব ক্লাসের সময় বৃদ্ধি ও সব বিষয়ে ক্লাস দানের বিষয়ে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। আধুনিক প্রযুক্তির এব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা এখন অনেক অগ্রসর হয়েছে এ পদ্ধতি। তিনি আরো বলেন, মুখস্থ করার চেয়ে মাল্টিমিডিয়ায় সচিত্র পাঠদান শিক্ষার্থীদের অনেক সহায়ক হচ্ছে। মানসিক চাপ কমেছে। আনন্দ উল্লাসের মাধ্যমে পাঠ গ্রহণে অভ্যস্ত হচ্ছে। এ কারণে শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও বৃদ্ধি পেয়েছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।