জসিম উদ্দিন টিপু,টেকনাফ:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ কক্সবাজার আসছেন। তিনি মেরিন ড্রাইভ সড়ক উদ্বোধন ও নাফ ট্যুরিজম পার্কসহ বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প কাজের উদ্বোধন করবেন। এদিকে নির্মাণ কাজ শেষে স্বপ্নের মেরিন ড্রাইভ সড়ক এবং টেকনাফের জালিয়ারদ্বীপের নাফ ট্যুরিজম পার্ক নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধন করার খবরে সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের মানুষের মাঝে বাড়তি আনন্দ দেখা দিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে,টেকনাফকে ঘিরে সরকারের অনেক চিন্তা ভাবনা রয়েছে। দেশী-বিদেশী পর্যটকদের টেকনাফ অভিমুখী করতে শেখ হাসিনার সরকার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেই যাচ্ছেন। বাস্তবায়নাধীন এসব প্রকল্পে টেকনাফের দৃশ্যপট দিন দিন পাল্টে যেতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে স্থানীয়রা এর সুফলও ভোগ করছেন। জানাগেছে,৪৫৬কোটি টাকা ব্যায়ে ৮০কিলোমিটারের মেরিন ড্রাইভ সড়কটি পর্যটন ক্ষেত্রে বিশাল একটি মাত্রা এনেছে। কলাতলী হয়ে সাগরের কূলঘেষে নির্মিত বিশ^মানের সড়কটি সাবরাং অর্থনৈতিক অঞ্চলে এসে শেষ হয়েছে। এই সড়কের দুইপার্শ্বে থাকবে ওয়াক ওয়ে, পর্যটকদের সুবিধার্থে থাকবে সড়ক জুড়ে ফ্রেক্সিবল পেভম্যান,শেড,গাড়ি পার্কিং ও মহিলা পর্যটকদের চেঞ্জিং রুম। সড়ক জুড়ে তিনটি বড় আরসিসি সেতু,৪২টি কালভার্ট,৩ হাজার মিটার সসার ড্রেন ও ৫০ হাজার মিটার সিসি ব্লক ও জিও ট্যাক্সটাইল থাকবে। এর আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১৬সনের ফেব্রুয়ারী মাসে আন্তজার্তিক পর্যটন কেন্দ্রে রুপ দিতে টেকনাফের সাবরাংয়ে “সাবরাং অর্থনৈতিক অঞ্চল” নামের পর্যটন কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। যেখানে পর্যায়ক্রমে গড়ে তোলা হবে আন্তর্জাতিক মানের হোটেল,কটেজ,বিচ ভিলা,ওয়াটার ভিলা,নাইট ক্লাব,কার পার্কিং,সুইমিং পুল,কনভেনশন হল,বার,অডিটরিয়াম,অ্যামিউজমেন্ট পার্ক,ক্রাফট মার্কেট,ল্যান্ডস্কেপিংসহ আধুনিক উন্নত পর্যটন সুবিধা। এছাড়া নাফনদীর বুকে জেগে উঠা জালিয়ারদ্বীপের ২৭১একর জমির উপর গড়ে তোলা হচ্ছে নাফ ট্যুরিজম পার্ক। বিশ^মানের পার্ক তৈরীতে নাফ ট্যুরিজম পার্কে যাতায়াতের জন্য স্থল বন্দরের পাশ দিয়ে প্রায় ১শ কোটি টাকা ব্যায়ে একটি অত্যাধুনিক ঝুলন্ত সেতু ও জেটি নির্মাণ করা হবে। সয়েল টেষ্ট থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ ইতিমেধ্য সম্পন্ন হয়েছে। নাফ ট্যুরিজম পার্ক পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য সেখানে ঝুলন্ত ব্রীজ,রিসোর্ট,ক্যাবল কার, ওসনেরিয়াম,ভাসমান রেষ্টুরেস্ট,ইকো কটেজ,কনভেনশন সেন্টার,সুইমিং পুল,ফান লেক,একুয়া পার্ক,ফিসিং জেটি,এমুইজমেন্ট পার্ক,শিশু পার্ক,ওয়াটার স্পোর্টসসহ অত্যাধুনিক সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে নানামুখী কার্য্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর মেরিন ড্রাইভের মত নাফ ট্যুরিজম পার্কের কাজ দ্রুত বাস্তবায়িত হলে স্থানীয় জনসাধারণের ভাগ্যের চাকা ঘুরে যাবে। বছরজুড়ে টেকনাফে পর্যটকদের সমাগম ঘটবে। দেশী-বিদেশী আগন্তুক পর্যটকদের পদভাবে সীমান্তের “অর্থনৈতিক অঞ্চল” রীতিমত মুখরিত হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হোসন ছিদ্দিক জানান,মেরিন ড্রাইভ সড়ক টেকনাফকে নতুন ভাবে বিশে^র দরবারে পরিচিত করবে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর নাফ ট্যুরিজম পার্কের কাজও দ্রুত শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। যা সত্যি সত্যি টেকনাফের দৃশ্যপট পাল্টিয়ে দিবে। সাংসদ আব্দুর রহমান বদি জানান,টেকনাফের মানুষের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজর একটু বেশী। তাই তিনি টেকনাফকেই পর্যটন শিল্পের কেন্দ্রবিন্দতে পরিণত করছেন। সাংসদ বদি বলেন, মেরিন ড্রাইভ দিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করেই পর্যটকরা এক ঘন্টায় সাবরাং অর্থনৈতিক অঞ্চলে যেতে পারবেন। ২০১৮সালের শুরুর দিকে পর্যটকরা নাফ ট্যুরিজম পার্কে যেতে পারবেন জানিয়ে তিনি আরো বলেন,ঐবছরের শেষের দিকে পর্যটকরা পার্কেই রাত যাপন করতে পারবে।#