ডেস্ক নিউজ:
বনানীতে ধর্ষণের শিকার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী দুই তরুণী বিভিন্ন ধরনের হুমকির মুখে চরম আতঙ্কে রয়েছেন। পালিয়ে থাকা ধর্ষণ মামলার আসামি ও তাদের স্বজনরা তরুণীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তারা। অন্যদিকে মামলা দায়েরের পাঁচ দিন পার হলেও পুলিশ এখনও আসামিদের গ্রেফতার করতে পারেনি। অনেকেই ধারণা করছেন আসামিরা এরইমধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, আসামিদের গ্রেফতারের জন্য যেভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে, তাতে তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতেও পারে।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, আকাশ পথে না পেরে ধর্ষণ মামলার আসামিরা সীমান্ত পথে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। এরইমধ্যে সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত এলাকা দিয়ে কয়েকদফা পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে আসামিরা।
একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গ্রিন সিগন্যাল পেলে অনেক আগেই ধর্ষকদের গ্রেফতার করতে পারতো পুলিশ। কিন্তু নানা কৌশলে সময় ক্ষেপণ করার মাধ্যমে তাদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করা হয়েছে। ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত মূল আসামিরা এরইমধ্যে সিলেট এলাকার সীমান্ত পাড়ি দিয়েছে। তবে অন্যরা ঢাকা ও ঢাকার বাইরে আছে। কেউবা নিজের পরিচয় গোপন রেখে আত্মগোপনে রয়েছে।
সাফাতের গাড়ি চালক বিল্লাল ও বডিগার্ড আবুল কালাম আজাদ ওরফে কালাম ওরফে আজাদ আলাদাভাবে আত্মগোপন করে আছে বলে সূত্র জানিয়েছে। অন্য আসামি নাঈম আশরাফের আরেকটি নামের তথ্যও খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। নিজ এলাকা সিরাজগঞ্জে সে আবদুল হালিম নামে পরিচিত। সব আসামি ভিন্ন ভিন্ন পরিচয়ে পালিয়ে থাকার চেষ্টা করছে। মঙ্গলবার রাতের কোনও একসময় তারা সীমান্ত পাড়ি দিয়েছে বলে গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) উপকমিশনার শেখ নাজমুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আসামিরা তো পালানোর চেষ্টা করবেই। আমরাও বসে নেই। তাদের গ্রেফতার করার জন্য সব কৌশলই গ্রহণ করা হয়েছে।’
বনানীর ধর্ষণ মামলার আসামিদের অবস্থান বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের উপ কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তাদের পালানোর সুযোগ খুবই কম। বৈধ পথে পালানোর সুযোগ অনেক আগেই আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। তবে অন্য কোনও পথে পালানোর তথ্য আমাদের কাছে নেই।’
প্রসঙ্গত, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ এনে গত ৬ মে বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২৮ মার্চ পূর্বপরিচিত সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ ওই দুই শিক্ষার্থীকে জন্মদিনের দাওয়াত দেয়। এরপর তরুণীদের বনানীর কে-ব্লকের ২৭ নম্বর সড়কের ৪৯ নম্বরে ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে নিয়ে যায়। এজাহারে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, সেখানে জন্মদিনের অনুষ্ঠান চলাকালীন দুই তরুণীকে হোটেলের একটি কক্ষে আটকে রেখে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ধর্ষণ করে সাফাত ও নাঈম। ধর্ষণ মামলার আসামিরা হলো- সাফাত আহমদ, নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।