আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
শামীম ইকবাল চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) :
রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইসলামীয়া আলিম মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ ওবাইদুল হাকিম বাবুল চুরি, প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলায় বান্দরবান জেলার প্রথম শ্রেণির ম্যাজিষ্ট্রেট বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য এর আদালতে জিআর-৩৭/২০০৩ মামলায় দুই বছর সশ্রম কারাদন্ড ও আট হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদন্ডে দন্ডিত হওয়ায় তৎকালীন রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান “পাবলিক সারভেন্ট ডিসমিসাল অন কনভিকশন ১৯৮৫” এর ৩(১) ধারা অনুসারে তাৎক্ষনিক চাকুরীচ্যুতির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তৎকার্যালয়ের স্মারক নং ৫-১০/২০০০/২৮৫/সা : তাং- ২১/০৬/২০০৪ ইং মূলে পত্র প্রেরণ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অবহিত করেন।
চাকুরীচ্যুত অধ্যক্ষ ওবাইদুল হাকিম উক্ত পত্র চ্যালেঞ্জ করে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রীট পিটিশন নং-৩৯৪৯/০৪ দায়ের করলে মাননীয় আদালত শুনানি শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার চাকুরীচ্যূতির আদেশ বেআইনি ঘোষণা করেন। এরপর হাইকোর্ট বিভাগের উক্ত আদেশ চ্যালেঞ্জ করে কর্মরত অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হামিদ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সিএ নং-২২৬/০৭ ও ২২৭/০৭ আপিল বিভাগে মামলা দায়ের করলে প্রথমে চেম্বার জজ আদালত হাইকোর্ট বিভাগের উক্ত আদেশ স্থগিত করে বিভিন্ন ধাপে শুনানি শেষে প্রায় ১ দশক পর গত ৭ ফেব্রুয়ারী মাননীয় বিচারপতি আব্দুল ওয়াহাব মিয়ার নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সাবেক অধ্যক্ষ ওবাইদুল হাকিমের চাকুরীচ্যুতির আদেশ বহাল রেখে আদেশ প্রচার করেন। আদেশের পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি গত ১৭মে প্রকাশিত হয়েছে।
মাননীয় আদালত আদেশের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন যে, বান্দরবান জেলার জিআর -৩৭/০৩ মামলার সাজা হওয়ার দিন থেকে তিনি চাকুরীচ্যুত বলে গণ্য হবেন এবং সাজা থেকে খালাস হলে যদি চাকুরীর বয়স ও পদ শূন্য থাকে তবে তিনি চাকুরীতে পূন: বহাল হবেন। এ ব্যাপারে চাকুরীচ্যুত অধ্যক্ষ ওবাইদুল হাকিমের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাঁর ব্যক্তিগত ০১৮৩৩০৫৫৩১২ মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এদিকে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবি ড.মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘চাকুরীচ্যুত হওয়ার পর থেকে এ যাবৎ ধূর্ত ওবাইদুল হাকিম বিভিন্ন সময়ে পকেট কমিটির সভাপতির সহযোগিতায় বেতন ভাতার নামে উত্তোলিত সমুদয় অর্থ ফেরত যোগ্য হবে এবং এ ধরনের আত্মসাৎ এর অভিযোগে সাবেক সভাপতি মো: ইউনুছ সহ জনতা ব্যাংক রামু শাখার ম্যানাজার নুর মো: হাওলাদারের বিরুদ্ধে কক্সবাজার দায়রা জজ আদালতে মামলা বিচারধীন রয়েছে।’
সূত্র জানায়- গত ৭ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের রায় ঘোষণা এবং ১৭মে পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি প্রকাশিত হওয়ার পরও আদালতের আদেশের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে কমিটির সভাপতি আইয়ুব সিকদার ও কথিত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মহিউদ্দিন আপিল বিভাগের আদেশ বাস্তবায়নে বাধাগ্রস্থ করে বিভিন্ন তৎপরতা চালিয়ে যাওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানতে চাইলে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ছালেহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আদালতের রায়কে অবজ্ঞা করার কোন সুযোগ নেই। আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়টি এখনো আমি পড়িনি। পড়ার পর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।