– অ্যাডভোকেট মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন

দিনটি ছিল ১৯৮১ সালের ২৯ মে, শুক্রবার। তখন সময় বিকাল ৪টা। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান তার বর্ণাঢ্য জীবনাবসানের মাত্র ১২ ঘণ্টা আগে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সর্ব পশ্চিম হলরুমে সর্বস্তরের বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে এক সৌজন্যমূলক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। এক পর্যায়ে সেখানে তিনি অত্যন্ত দৃঢ় প্রত্যয়ে ঘোষণা করলেন যে, ‘তালপট্টি আমাদেরই হবে এবং সেখানে আমাদের জাতীয় পতাকা উড়বেই ইনশাল্লাহ, অল্প কয়েক দিনের মধ্যে আপনারা দেখবেন মুসলিম রাষ্ট্রসমূহ আমাদের এ দাবির প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন দিচ্ছেন। আমি বিশ্ব দরবারে আমার দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে যাতে কোনো হায়েনার থাবার আঁচড় না লাগে এবং আমাদের অন্যান্য ন্যায়সঙ্গত দাবির পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখব। বেরুবাড়ী ছেড়ে দেওয়া হয়েছে অথচ তিন বিঘা করিডোর এখনো ভারত আমাদের ফেরত দেয়নি। আঙ্গরপোতা ও দহগ্রামের জনগণ এখনো মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমরা এখনো তাদের মুক্ত করতে পারিনি। ’ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৫৮ সালের নূন-নেহরু চুক্তির বদৌলতে বেরুবাড়ী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হলে বেরুবাড়ী বাংলাদেশ ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত থাকে। ১৯৭৪ সালের ১৬ মে এক চুক্তি বলে বেরুবাড়ী ভারতকে দিয়ে দেওয়া হয়। চুক্তিটি ইতিহাসে ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। উক্ত চুক্তি অনুযায়ী ‘আঙ্গরপোতা-দহগ্রাম’কে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য ভারত তিন বিঘা করিডোর চিরস্থায়ী লিজ হিসেবে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করার কথা ছিল। ১৯৯০ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ১৯৭৪ সালের ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি অনতিবিলম্বে দীর্ঘ ৪২ বছর পর বাস্তবায়নের পক্ষে রায় দেয়। ভারত অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে উক্ত চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হতে বিরত থেকেছে এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও তিন বিঘা করিডোর দীর্ঘদিন বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর হয়নি।

সেদিন জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, আমাদের স্বাধীনতা কারও দান বা অনুদান নয়। আমাদের এই অর্জন লাখো শহীদের অশ্রু, ত্যাগ এবং রক্তের বিনিময়ে। এই চট্টগ্রাম থেকে শিল্প বিপ্লব শুরু হলো। চট্টগ্রাম হবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি অন্যতম আকর্ষণীয় সমৃদ্ধশালী নগরী। ওই দিন ছিল শুক্রবার। তিনি জুমার নামাজ আদায় করেছিলেন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী চন্দনপুরা শাহী জামে মসজিদে যা আধুনিক নান্দনিক শৈল্পিক কারুকার্যখচিত। যা আমার শ্বশুর মরহুম আবু সাইদ দোভাষ নির্মাণ করেছিলেন। শহীদ জিয়া নামাজ আদায় করার জন্য মসজিদে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে সবাই তাকে জামাতের প্রথম কাতারে নিয়ে যাওয়ার জন্য আহ্বান করলেন। তিনি মসজিদে ঢুকেই পিছনের কাতারে যেখানে জায়গা পেয়েছিলেন সেখানেই নামাজ আদায়ের জন্য দাঁড়িয়ে গেলেন। একজন মুসল্লি হিসেবে এখনো সবার স্মৃতিতে বিষয়টি স্মরণীয় হয়ে আছে। তিনি জুমার নামাজ শেষে সার্কিট হাউসে দোতলার বারান্দায় মধ্যাহ্নভোজের আগে বসে আরাম করার এক ফাঁকে আমাদের দলের তৎকালীন স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রথিতযশা চিকিৎসক ড. এ এফ এম ইউসুফ সাহেবকে বলেছিলেন, ‘চট্টগ্রামে এক টুকরো জমি নিয়ে বাড়ি করলে কেমন হয়। ’ যা ডাক্তার সাহেব পরবর্তীতে আমাদের বলেছিলেন। উনার সে অন্তিম ইচ্ছা অপূর্ণ থেকে গেল। সেই ভয়াল বর্ষণমুখর রাতে সার্কিট হাউসে একদল বিপথগামী সামরিক বাহিনীর সদস্যের গুলির আঘাতে তার জীবন প্রদীপ নিভে গেল। সাড়ে তিন বছরের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে তিনি আগামী প্রজন্মের জন্য সততা ও দেশপ্রেমের এক অনুপম দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। সেটাকেই ধারণ করে তার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপির পতাকা নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

যাক, মতবিনিময়ের এক পর্যায়ে মাগরিবের সময় অত্যাসন্ন হওয়ায় সার্কিট হাউসের বাইরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা জাতীয় পতাকা নামানোর সময় স্যালুট প্রদান করেন। রাষ্ট্রপতি বললেন, সেনাবাহিনীর পায়ে এতদিন ছিল ক্যামব্রিজের জুতা এখন তাদের বুট জুতা পরিয়েছি তার আওয়াজ আপনারা শুনেছেন। তিনি বলতে লাগলেন আমাদের দেশের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে সেনাবাহিনীকে আধুনিকীকরণ করতে হবে। আমাদের দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় চৌকস ও আধুনিক সেনাবাহিনীর কোনো বিকল্প নেই। যারা দেশের দুর্যোগ ও দুর্বিপাকে জনগণের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এ দেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবে। তিনি আরও বললেন, ‘জাতীয় ইস্যুতে আমি জাতীয় ঐক্য গড়তে চাই। সব মত ও পেশার লোকজন এবং জনগণকে সে ঐক্য প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করতে হবে। শিল্প বিপ্লব, খাল খনন কর্মসূচির মাধ্যমে সবাইকে দেশ বিনির্মাণে অংশগ্রহণ করার উদাত্ত আহ্বান জানান এবং এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে হবে অর্থনীতিতে। সেদিন এ অল্প সময়ে তিনি যে বক্তব্য রেখেছিলেন সেটা ছিল ঐতিহাসিক। একজন দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রনায়কের হৃদয়ে চিন্তা-চেতনার দৃঢ় বহিঃপ্রকাশ। আজকে এই শাহাদাতবার্ষিকীতে সেই ঐতিহাসিক বক্তব্য যে তার জীবনের শেষ বক্তব্য হবে সেটা আমরা যারা উপস্থিত ছিলাম কখনো কল্পনা করতে পারিনি। স্বনির্ভর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতেন রাষ্ট্রপতি জিয়া। জীবন দিয়ে আমাদের জন্য রেখে গেলেন এক আদর্শ। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখার এক দর্শন রচনা করে গিয়েছিলেন। প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সুদৃঢ় সেতুবন্ধন। আজ তার এ শাহাদাতবার্ষিকীতে দ্বিধাহীন চিত্তে স্মরণ করছি সেই ঐতিহাসিক বক্তব্যের গুরুগম্ভীর পরিবেশ। উপস্থিত সবাই বিমুগ্ধ চিত্তে শুনেছিলেন তার মুখ থেকে বেরিয়ে আসা প্রতিটি শব্দ যা জীবনের কোনোদিন ভোলার মতো নয়। ভবিষ্যতে কোনো রাষ্ট্রনায়ক দৃঢ়তার সঙ্গে এ ধরনের বক্তব্য রাখতে পারবেন কিনা সন্দেহ। সেদিনের সেই ঐতিহাসিক বৈঠকের একজন কনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে আমার উপস্থিতি ছিল আমার জীবনের পরম পাওয়া। সেই বৈঠকের শীর্ষ নেতা না ফেরার দেশে চলে গেছেন। সেই স্মৃতিকে বুকে ধারণ করে বেঁচে আছেন তার প্রথম মহাসচিব ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, তৎকালীন স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। তারা নিশ্চয় আজকের এই দিনে সেই স্মৃতি লালন করে এই মহান নেতার প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও আত্মার মাগফিরাত কামনা করেই স্মরণ করবেন। আমি তার সেই দিনের স্মৃতিকে বুকে ধারণ করে অনেক চড়াই-উত্তরাই পার করে নিরবচ্ছিন্নভাবে এখনো তার প্রতিষ্ঠিত দলের পতাকাকে সমুন্নত রেখে জোর কদমে এগিয়ে চলছি তার স্বপ্নের সেই বাংলাদেশ বিনির্মাণে।

জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পর জাতীয় সংসদে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বপ্রথম দল-মত-নির্বিশেষে সব সংসদ সদস্য ঐকমত্য হয়ে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন যা সর্বসম্মতিতে পাস হয়েছিল। সেই শোক প্রস্তাবের বক্তব্যগুলো ছিল নিম্নরূপ—‘তিনি সেই শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়া, যিনি ১৯৭৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যারা দেশে সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের জাতীয় সংসদ প্রতিষ্ঠা করেন এবং সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে তিনি পৃথিবীর ইতিহাসে এক বিরল নজির স্থাপন করেন। সামরিক অফিসার হয়েও গণতন্ত্রের প্রতি তার গভীর আস্থা ছিল এবং তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন যে, জনগণই ক্ষমতার উৎস। এটাই ছিল তার দর্শন। ’ তিনি ইরাক-ইরান যুদ্ধাবসানের প্রচেষ্টায় ইসলামী সম্মেলনে গঠিত নয় সদস্যের শান্তি মিশনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রথম সামরিক জেনারেল যিনি সিপাহি জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর জনগণকে ক্ষমতা ফেরত দেন। তার একটি দৃষ্টান্ত হচ্ছে ফ্রান্সের জেনারেল দ্যাগল, উনার জীবনের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব সেটা হচ্ছে শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় মার্শাল ল’ থেকে গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তন। তিনি অত্যন্ত ভাগ্যবান নেতা, একজন সামরিক কর্মকর্তা হয়ে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে দেশমাতৃকার স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়ে সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ওই সময়ে দিশাহীন জাতিকে শত্রুমুক্ত করার জন্য দিক-নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেদিনের সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা আসাদুজ্জামান খান এই মহান নেতার তিরোধানে বলেছেন, ‘অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়েই বক্তব্য রাখতে হচ্ছে’ এবং এক পর্যায়ে অকপটে বলেছিলেন তিনি (জিয়া) একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তিনি ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন, জাতি সেটা স্মরণ করবে। আজ বাংলাদেশে ইতিহাস বিকৃতির মতো অশোভন কর্মসম্পাদনের অপচেষ্টা চলছে। জিয়াউর রহমানকে বঞ্চিত করার অপচেষ্টা হচ্ছে তার প্রাপ্য মর্যাদা হতে। জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা নিয়ে যে কথাই বলা হোক না কেন, প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ও ভারতের রাষ্ট্রপতি সঞ্জীব রেড্ডির কণ্ঠে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে প্রতিধ্বনিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের ১১ এপ্রিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে জনগণের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ জিয়াউর রহমানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন— ‘মেজর জিয়াউর রহমানের পরিচালনায় নৌ, স্থল ও বিমান বাহিনীর আক্রমণের মুখে চট্টগ্রাম শহরে যে প্রতিরোধ ব্যুহ গড়ে উঠেছে এবং আমাদের মুক্তিবাহিনী ও বীর চট্টলার ভাইবোনেরা যে সহযোগিতার সঙ্গে মোকাবিলা করেছেন, স্বাধীনতার ইতিহাসের এই প্রতিরোধ স্টালিনগ্রাদের পাশে স্থান করে নেবে। ’ প্রেসিডেন্ট জিয়া এক রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত গিয়েছিলেন। ২৭ ডিসেম্বর তার সম্মানে দেওয়া ভোজসভায় ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি সঞ্জীব রেড্ডি বলেন, “You position is already assured in the annals of the independence of your country as a brave freedom fighter, who was the first to declare the independent to Bangladesh” (Bangladesh International Politics, professor Shamsul Haque, Page 96) এ ব্যাপারে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য উদ্ধৃত করা যায়— ৭১ সালের নভেম্বরে তিনি আমেরিকা সফরে ছিলেন। ৬ নভেম্বর তিনি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণদানকালে বলেন, “The cry for independent arose after Shikh Mujib was arrested and not before, He himself, so for as I know has not asked for independent even now (ভারতের তথ্য বেতার মন্ত্রী কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশ ডকুমেন্টস ভলিউম-২, পৃষ্ঠা-৬গ৭) উনার শাহাদাতের এক মাস পর ১ জুন ১৯৮১ সালে ‘নিউইয়র্ক টাইমস’ তার মন্তব্যে লিখেছিল— The world incorruptible, can only be used before the name of Ziaur Rahman.

অ্যাডভোকেট মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন

একজন রাষ্ট্রনায়কের এর চেয়ে বেশি কী আর পাওয়ার আছে। মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র কর্তৃক প্রকাশিত ‘মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপর’ গ্রন্থে মুক্তিবাহিনীর ৬ নং সেক্টরের সেক্টর প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকার বলেছেন, ‘রাজনৈতিক নির্দেশ ছাড়াই মুক্তিযুদ্ধ শুরু, জিয়ার ঘোষণা শোনার সঙ্গে সঙ্গে দেশে ও দেশের বাইরে প্রচণ্ড উদ্দীপনা, একটি জাতির মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দেওয়ার মতো যে দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটাই তাকে (জিয়াউর রহমানকে) চিরঞ্জীব করে রাখবে। ’ শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়া সম্পর্কে লেখা শেষ করা যাবে না। শুধু বলব, তিনি সহজ সরল আড়ম্বরহীন জীবনযাপন করেছেন। মানুষকে হৃদয় থেকে ভালোবেসেছেন এবং দেশের জনগণের সঙ্গে নিজেকে একাকার করে তাদেরই একজন হয়েছেন তিনি। তিনি বলতেন, আমি রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতিকে কঠিন করে দেব। আর এর মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন শুধু ঢাকায় বসেই রাজনীতি করা চলবে না। বরং গ্রামে-গঞ্জে ঘুরে ঘুরে জনগণকে জাগ্রত করতে হবে। সেই দিনের সংসদে অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ বলেছিলেন, ‘তিনি (জিয়া) একজন সত্যিকারের সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন যিনি তার জীবনকে বাজি রেখে সম্মুখ সমরে যুদ্ধ করেছেন। ’ শহীদ জিয়া তার কর্মের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে চির জাগরূক থাকবেন। আর আজকে দুই হাত তুলে আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতের কাছে ফরিয়াদ করছি আল্লাহ সুবহানুওয়াতাআলা যেন শহীদ জিয়াকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করেন। আর তার পরিবারের সদস্যরা যারা এ দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্রের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ করছেন তাদের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্রের জাল যেন নিশ্চিহ্ন করে দেন। আমিন।

লেখক : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রদূত।

বিডি-প্রতিদিন এর সৌজন্যে